নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে পোখারাগামী ইয়েতি এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজটি স্থানীয় সময় সকাল ১১টার ঠিক পরপর যখন হঠাৎ করেই বাম দিকে কাত হয়ে মাটিতে আছড়ে পড়ছিল তখন পরিস্কার আকাশে রোদ ঝলমল করছিল।
স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ছোট একটি উড়োজাহাজ অবতরণের সময় হঠাৎ কাত হয়ে সরাসরি মাটির দিকে নেমে আসতে থাকে।
ভিডিওটি দেখ বোঝা যাচ্ছে স্থানীয় কেউ বাড়ির ছাদের উপর থেকে মোবাইলে সেটি ধারণ করেছেন।
পোখারার স্থানীয় বাসিন্দা দেবীতা কল আকাশে উড়োজাহাজটি দেখতে পেয়েছিলেন এবং প্রচণ্ড জোরে বিস্ফোরণের শব্দ পেয়েই কী ঘটছে দেখতে বাইরে ছুট লাগান।
বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘‘আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি প্রচুর মানুষ সেখানে ভিড় করেছে। বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটিতে আগুন জ্বলছিল এবং প্রচণ্ড ধোঁয়া বেরিয়ে আসছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার সেখানে চলে আসে।”
বিমানটি যখন মাটির দিকে নেমে আসছিল, সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন স্থানীয় আরেক বাসিন্দা খুম বাহাদুর ছেত্রী। ঘটনাক্রমে তখন তিনি ছাদের ওপর দাঁড়িয়ে ছিলেন।
তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “আমি দেখলাম প্লেনটা দুলছে, বাম আর ডানদিকে হেলে যাচ্ছে বার বার। হঠাৎ নাক নিজের দিকে দিয়ে ওটা নামতে শুরু করল। তারপর ওই পাহাড়ের ওপরের খাদের মধ্যে হারিয়ে গেল।”
উড়োজাহাজটির অর্ধেকটা পড়েছে পাহাড়ের মধ্যে। বাকিটা পড়ে সেতি নদীর খাড়িতে।
দেবীতা বলেন, ‘‘উড়োজাহাজটি যেন জনবসতিতে বা কোনো বাড়িতে আঘাত না হানে সেজন্য পাইলট সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন বলে আমার মনে হয়েছে। সেতি নদীর ঠিক পাশে জনবসতিহীন ছোট্ট একটু জায়গা ছিল এবং উড়োজাহাজটি ওই ছোট জায়গার মধ্যেই মাটিতে আছড়ে পড়েছে।”
হিমালয় কোলের দেশ নেপালের পশ্চিমাঞ্চলীয় পোখারা এলাকা জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। কাঠমাণ্ডু থেকে অনেক পর্যটক আকাশপথে সেখানে যান নিয়মিত।
দুর্ঘটনার পর ইয়েতি এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র সুদর্শন বার্তাউলা বলেছেন, ওই ফ্লাইটের ৭২ আরোহীর মধ্যে ৬৮ জন যাত্রী, বাকিরা ক্রু। যাত্রীদের মধ্যে ১৫ জন ছিলেন বিদশি নাগরিক।তাদের পাঁচজন ভারতীয়, চারজন রুশ, দুজন দক্ষিণ কোরীয় এবং আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনার একজন করে আছেন।
এরইমধ্যে দুর্ঘটনাস্থল থেকে ৬৮টি মৃতদেহ উদ্ধারের কথা নিশ্চিত করেছে দেশটির সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।