Loading...
The Financial Express

জনগণ যখন পাশে থাকে কোনকিছুই আর অসাধ্য থাকে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

| Updated: October 29, 2022 20:40:43


জনগণ যখন পাশে থাকে কোনকিছুই আর অসাধ্য থাকে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমের ‘সফলতারকথা তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, জনগণ সঙ্গে থাকলে কোনকিছুই আর বাধা হতে পারে না।

'কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০২২' উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছিলেন তিনি। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

মন্ত্রী বলেন, “জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে আমরা যখন কঠিন সমস্যার মুখে পড়েছি, তখন প্রধানমন্ত্রী সর্বস্তরের জনতাকে আহ্বান করেছিলেন ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য। সে সময় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে।

 সে সময় আমরা অভূতপূর্ব সফলতা দেখেছিলাম, সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ, যার যার জায়গা থেকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। জনগণ যখন পাশে থাকে কোনকিছুই আর অসাধ্য থাকে না।"

কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, "কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে সমাজকে আরো কীভাবে সুন্দর-পরিচ্ছন্ন বানানো যায়, সেটার উদাহরণ এখন সর্বত্র। সমাজে এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ আমাদের রয়েছে। বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং অনেক কমে গেছে। কিন্তু মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমরা বাঁচাতে পারব না। সেখানে আমাদের কাজ করতে হবে।

 করোনা মহামারীর জন্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় যুব সমাজের কাজ ছিল না, সে সময় কিশোর গ্যাং তৈরি হয়েছিল মোড়ে মোড়ে। সেটার একটা কু প্রভাব এখনো রয়েছে। সেখানেও আমাদের কাজ করতে হবে।

নিজেদের কাজে কমিউনিটি পুলিশ 'শতভাগ সফল' দাবি করে মন্ত্রী বলেন, “কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কাজ হল সমাজকে সহযোগিতা করা। যাতে অপরাধ সংগঠিত হওয়ার আগে জানিয়ে দেওয়া যায়, যাতে অপরাধীকে চিহ্নিত করতে সমাজ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা যায়। এখানে আমরা শতভাগ সফল হয়েছি।"

পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন অনুষ্ঠানে বলেন, “এ সরকারের সময় যেভাবে সন্ত্রাসী কার্যক্রমকে দমন করা হয়েছে, বা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে, তা বিশ্বব্যাপী আজ প্রশংসিত। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কমিউনিটি পুলিশের সদস্যদের সমন্বয়ে আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সফলভাবে দমন করেছি।"

কমিউনিটি পুলিশের কার্যক্রম শুরু হওয়ার সুফল তুলে ধরে আইজিপি বলেন, “এখন পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।

"এখন প্রতিমাসে সারাদেশে প্রতি থানায় ওপেন হাউস ডে পালন করা হয়। যেখানে সাধারণ মানুষ পুলিশ অফিসারদের সাথে সরাসরি কথা বলেন, তাদের সমস্যা তুলে ধরেন।"

কমিউনিটি পুলিশ ও বিট পুলিশিংসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে বাংলাদেশ পুলিশ এখন ‘জনগণের কাছাকাছি চলে গেছেদাবি করে তিনি বলেন, এতে করে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ দমন করা ‘সহজ হয়ে গেছে

২০১৩ সালে পুলিশ সদর দপ্তরের একজন উপমহাপরিদর্শকের অধীনে পৃথক শাখা হিসেবে স্বল্প পরিসরে কাজ শুরু করেছিল কমিউনিটি পুলিশ। পরের বছর একজন সহকারী মহাপরিদর্শকের তত্ত্বাবধানে পাবলিক সেইফটি অ্যান্ড প্রিভেনশন (পিএস অ্যান্ড সিপি) শাখার কার্যক্রম শুরু হয়। সেটাই এখন কমিউনিটি অ্যান্ড বিট পুলিশিং নামে কার্যক্রম চালাচ্ছে।

আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের সকল জেলা, রেলওয়ে, হাইওয়ে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ও মেট্রোপলিটন ইউনিটে কমিউনিটি পুলিশিং এর চলমান কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে দেশব্যাপী মোট ৫৪ হাজার ৭১৮টি কমিটিতে ৯ লাখ ৪৭ হাজার ৭০১ জন কমিউনিটি পুলিশিং সদস্য কাজ করছেন।

সারাদেশে ৬ হাজার ৫৩৩টি বিটে দায়িত্ব পালন করছেন তারা। এছাড়া ২০২১-২০২২ সময়ে সারাদেশে মোট ৪ হাজার ৩৫৬টি ওপেন হাউজ ডেতে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৩৪৮টি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে; অপরাধ প্রতিরোধমূলক (বিট পুলিশিং) ৩৩ হাজার ৮২টি সভা করা হয়েছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধনের দিনটির কথা স্মরণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক অনুষ্ঠানে বলেন, “বঙ্গবন্ধু সেইবার প্রথম পুলিশ সপ্তাহ পালন করতে এসে কমিউনিটি পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। কমিউনিটি পুলিশের নিরলস প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের মানুষ সেই সময় থেকেই নিরাপদে থাকতে পেরেছে। আপনাদের কর্মকাণ্ড, আপনাদের প্রচেষ্টা সেটিকে ঘিরেই পরিচালিত হোক।"

তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের বিষয়টি ছড়িয়ে দেওয়ার আহবান জানিয়ে আরেফিন সিদ্দিক বলেন, তাতে তারা জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়বে না।

মূল ধারার পুলিশিংয়ের সাথে কমিউনিটি পুলিশের সেতুবন্ধন তৈরি করার মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

Share if you like

Filter By Topic