Loading...
The Financial Express

চোখ ওঠা ভিড় বাড়িয়েছে চক্ষু হাসপাতালে

| Updated: October 01, 2022 18:05:03


জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল। জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল।

ঢাকার আগারগাঁওয়ে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে দেখা গেল আদাবরের বাসিন্দা শামীম আহমেদকে, সঙ্গে স্কুলপড়ুয়া মেয়ে। তাদের সমস্যা চোখ ওঠা। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের। 

শামীম বলেন, “গত সপ্তাহে আমার স্ত্রীর চোখে সমস্যা দেখা দেয়। দুদিন পর আমার মেয়েরও। আর গতকাল থেকে আমারচোখ উঠেছে। চোখ লাল হয়ে গেছে, জ্বলে। এজন্য হাসপাতালে এসেছি।”

মিরপুরের শেওড়াপাড়া থেকে তাহমিনা সুলতানারও একই সমস্যা। তার পরিবারেরও সবার চোখ উঠেছে।

তিনি বলেন, “হঠাৎ চোখে খসখস করতে শুরু করে, কেমন যেন খোঁচা লাগছিল। আর চোখ দিয়ে পানি পড়া, ব্যথা করা করা তো আছেই। আমার চোখ বেশ ফুলে উঠেছে। এজন্য হাসপাতালে এসেছি।”

চক্ষু রোগের জন্য বিশেষায়িত এই হাসপাতালে বৃহস্পতিবার গিয়ে দেখা গেল রোগীর ভিড়, আর তাদের অনেকেরই চোখ ওঠা সমস্যা।

এই হাসপাতালের বহির্বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্স অঞ্জনা পাল জানান, গত কয়েকদিন ধরে চোখ ওঠার অনেক রোগী পাচ্ছেন তারা।

“আমাদের আউটডোর রেজিস্ট্রারে কে কী সমস্যা নিয়ে এসেছে, তা আলাদা করে রাখি না। এজন্য এক দিনে ঠিক কতজন এসেছেন চোখ ওঠা নিয়ে, তা সঠিকভাবে বলতে পারব না। তবে গত ১০-১৫ দিন ধরে আউটডোরে যত রোগী আসছেন, তার প্রায় অর্ধেকই এই সমস্যা নিয়ে।”

এক নজরে

চোখ ওঠা মূলত ভাইরাসজনিত রোগ কনজাঙ্কটিভাইটিস। সাধারণের কাছে তা চোখ ওঠা রোগ নামে পরিচিত। এটি অতি সংক্রামক এই রোগে আক্রান্ত হলে চোখ লাল হয়ে ওঠে, অনেকের চোখ ফুলে যায়, চোখে অস্বস্তি হয়, চোখ জ্বালাপোড়া করে, চোখ থেকে পানি পড়ে, আলো বা রোদে তাকাতে কষ্ট হয়।তবে চিকিৎসকরা বলছেন, চোখ ওঠা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। তবে অতি সংক্রামক এই রোগ থেকে বাঁচতে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দূরে থাকতে হবে।

হাসপাতালের মতো চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারেও চোথ ওঠার রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।

জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের কর্নিয়া বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল কাদের প্রতিদিন নিজের চেম্বারে ২০ জনের মতো রোগী দেখেন। সেখানে এখন দৈনিক গড়ে ৬ জন রোগী কনজাঙ্কটিভাইটিসের রোগী বলে তিনি জানান। যেখানে আগে সপ্তাহে একজন রোগী মিলত।

চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাসায় আছেন, এমনই একজন গ্রিনরোডের বাসিন্দা নাজমুন নাহার।

তিনি বলেন, গত ২০ সেপ্টেম্বর তার ছেলের প্রথমে চোখ ওঠে। এর দুদিন পর তার স্বামী, মেয়ের চোখ ওঠার পরদিন তারও এক্ সিমস্যা দেখা দেয়।

“আমার ছোট বোন ডাক্তার, তার পরামর্শে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছি। আমাদের বাসার নিচতলায় আরেক বোন থাকে। তার দুই বাচ্চারও এই অবস্থা।”

অধ্যাপক কাদের বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তন, মানুষের স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলার প্রবণতা এবং বাইরে ঘোরাফেরা বেড়ে যাওয়া-মূলত এই তিন কারণে অতিসংক্রামক এই রোগটি এ বছর বেড়েছে।

“রোগটি অতি সংক্রামক। এ কারণে পরিবারে কারও হলে বাকিরাও আক্রান্ত হচ্ছে। স্কুলে একজনের হলে সবার মধ্যে ছড়াচ্ছে।”

রোগের বিস্তার ঠেকাতে আক্রান্ত ব্যক্তিকে আইসোলশনে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

“সে কারও সঙ্গে দেখা করবে না, কাউকে স্পর্শ করবে না, কারও জিনিস ব্যবহার করবে না। শিক্ষার্থী হলে স্কুলে যাবে না। চাকরীজীবী হলে অফিসে যাবে না, পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে আলাদা থাকবে। তার ব্যবহৃত জিনিসপত্র কেউ ব্যবহার করবে না।”

কনজাঙ্কটিভাইটিসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় গত মঙ্গলবার বিদেশগামী যাত্রীদের জন্য একটি নির্দেশনা দেয় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। তাতে চোখ ওঠার সমস্যা থাকলে বিমানযাত্রায় নিরুৎসাহিত করা হয়।

Share if you like

Filter By Topic