চীনে করোনাভাইরাস নির্মূলে কঠোর সব বিধিনিষেধের মধ্যেও মহামারীর শুরু থেকে দৈনিক কোভিড শনাক্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়েছে।
রাজধানী বেইজিংসহ অন্যান্য প্রধান কয়েকটি শহর এবং দক্ষিণের বাণিজ্য শহর গুয়াংঝুতে কোভিডের প্রকোপ দেখা দিয়েছে।
বুধবার এইসব শহরে রেকর্ড ৩১,৫২৭ জনের কোভিড শনাক্ত হয়েছে, যা গত এপ্রিলে ছিল ২৮ হাজার।
যদিও ১৪০ কোটি মানুষের দেশ চীনে শনাক্তের এই সংখ্যা এখনও অনেক কম এবং সরকারি হিসাবে মহামারীর শুরু থকে এ পর্যন্ত কোভিডে মাত্র ৫ হাজার ২শ’র কিছু বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
সেই হিসাবে চীনে প্রতি এক লাখ মানুষে মারা গেছে মাত্র তিনজন; যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি লাখে তিন হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং যুক্তরাজ্যে প্রতি লাখে মৃত্যু হয়েছে ২,৪০০ মানুষের। যদিও বিভিন্ন দেশের মধ্যে সরাসরি তুলনা করা কঠিন।
চীনের কঠোর জিরো-কোভিড নীতির ফলে স্পষ্টতই অনেক মানুষের জীবন বেঁচেছে। কিন্তু একইসঙ্গে এই কঠোর নীতি দেশের অর্থনীতি এবং সাধারণ মানুষের জীবনে বড় ধরনের ধাক্কাও হয়েছে।
বিবিসি জানায়, কয়েকসপ্তাহ আগে চীন কোভিড বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করেছে। কর্মকর্তারা পূর্ণ লকডাউনের মতো পদক্ষেপ নেওয়াও এড়িয়ে চলতে চেয়েছেন।
কিন্তু এর মধ্যেই বেইজিংয়ে আবার কোভিড সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে এবং ছয়মাসের মধ্যে প্রথম কোভিডে একজনের মৃত্যুও হয়েছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
এর পরিপ্রেক্ষিতে কর্মকর্তারা এরই মধ্যে কয়েকটি জেলায় দোকান, স্কুল এবং রেস্তোঁরায় বিধিনিষেধ জারি করেছেন। ঝেংজু নগরীতে শুক্রবার থেকে লকডাউন কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছেন কর্মকর্তারা।
চীনের বিতর্কিত জিরো-কোভিড নীতির আওতায় লাখো মানুষ লকডাউনে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এবং এই নীতি নিয়ে বিরল বিক্ষোভ দানা বেঁধে উঠছে।
বিশেব চীনই সর্বশেষ প্রধান অর্থনীতির দেশ যেখানে এখনও কোভিড নির্মূলের প্রক্রিয়া চলছে। লোকজনকে গণহারে পরীক্ষা করাহচ্ছে এবং লকডাউনের নিয়মবিধি জারি রাখা হচ্ছে। এর মধ্যেও দেশটির ৩১ টি প্রদেশে ভাইরাস শনাক্ত হচ্ছে।
ভাইরাস সংক্রমণের অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে, বিশ্বের অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় চীনে কোভিড টিকা দেওয়ার হার কম। চীনের ৮০ ঊর্ধ্ব মানুষদের মাত্র অর্ধেক প্রাথমিক কোভিড টিকা নিয়েছে।
চীনের নিজেদের তৈরি টিকা খুব বেশি কার্যকর প্রমাণিত না হওয়ার পরও দেশটি বিদেশ থেকে টিকা আমদানি করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যুক্তি দেখিয়ে বলেছেন, দেশের বয়স্ক মানুষদের রক্ষা করতে কঠোর বিধিনিষেধ জারি রাখা প্রয়োজন।