নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য আন্দোলন একসঙ্গে করতে একমত হয়েছে বিএনপি ও কল্যাণ পার্টি।
কবে নাগাদ সেই আন্দোলন শুরু হবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বললেন, ‘চমক আছে’।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে কল্যাণ পার্টিও রয়েছে। তবে বিএনপি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দেড় বছর আগে বিএনপি মনোযোগী জোটের ভেতর-বাইরের দলগুলোকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে।
সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন দলের সঙ্গে বিএনপি সংলাপ করে যাচ্ছে। রোববার বিকালে কল্যাণ পার্টির সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপে বসেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৈঠক শেষে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান ইবরাহিম সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের সকল সদস্য এই আলোচনা অংশ নিয়েছেন এবং আমরা বলেছি যে, যুগপৎ আন্দোলন কবে? তবে আমরা একমত হয়েছি- তারিখটা প্রকাশ না করার জন্য।
“একটা বাংলা শব্দ বলতে পারি, চমক আছে। আপনারা মেহেরবানি করে তার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারেন।”
তিনি বলেন, “আমি একজন রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা, আমি মনে করি যে- গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যে সংগ্রাম, সেটা আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ। আমরা সবাই মিলে এই যুদ্ধে লড়ব এবং জয়ী হব। এখানে জয় ব্যতীত অন্য কোনো বিকল্প নাই।”
বিএনপি মহাসচিব প্রথম দফায় ২০ দলীয় জোট ও গণতন্ত্র মঞ্চের মোট ২৩টি দলের সঙ্গে সংলাপ করে।
দ্বিতীয় দফা সংলাপের কারণ ব্যাখ্যা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “প্রথম দফা সংলাপে আমরা নীতিগতভাবে একমত হয়েছিলাম যে, একটা যুগপৎ আন্দোলনে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলব। দ্বিতীয় দফা সংলাপে আমরা কোন কোন দাবিতে বা কোন কোন ইস্যুতে আন্দোলনটা করব, সেই বিষয়ে আলোচনা করে ঐক্যমত্যে এসেছি।”
ফখরুল বলেন, “এই আলোচনায় আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা যে কয়েকটি প্রধান বিষয় নিয়ে আন্দোলন শুরু করব, অর্থাৎ যে দাবিগুলো নিয়ে আন্দোলন শুরু করব, সেই দাবিগুলোর বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি।”
বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা দিয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি, আমরা এই সরকারের পদত্যাগের ব্যাপারে একমত হয়েছি, সংসদ বিলুপ্ত করার ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে তার মাধ্যমে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি।
“একইসঙ্গে আমরা গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, যাকে অন্যায়ভাবে আটক করে রাখা হয়েছে; তিনিসহ সকল নেতাকর্মীর মুক্তি এবং যাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, সেই মামলা প্রত্যাহারের বিষয়েও একমত হয়েছি।”
দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ছাড়া সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিএনপি সংলাপ করতে চায় বলে জানান ফখরুল।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংলাপে কল্যাণ পার্টির নেতাদের মধ্যে ছিলেন মহাসচিব আবদুল আউয়াল মামুন, কেন্দ্রীয় নেতা নুরুল কবির পিন্টু, আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকিব, রাশেদ ফেরদৌস সোহেল মোল্লা, মাহবুবুর রহমান শামীম, জামাল হোসেন, আবু হানিফ ও আবু ইউসুফ।
বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়কারী নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।