ঢাকার গোলাপবাগে বিএনপির সমাবেশের মধ্যেও নয়া পল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘিরে রেখেছে পুলিশ; সড়কে বসানো হয়েছে ব্যারিকেড, চলছে না কোনো যানবাহন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
‘নাশকতার আশঙ্কা’ থেকেই পুলিশ সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) এ কে এম হাফিজ আক্তার।
শনিবার দুপুরে পল্টনের নাইটিঙ্গেল মোড়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “নয়া পল্টনে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে, কারণ আমাদের কিছু ইন্টেলিজেন্স আছে যে এখানে যে কোনো ধরনের নাশকতা হতে পারে।
“যদিও আমরা আশা করছি সেটা হবে না। কিছু গোয়েন্দা রিপোর্ট থাকে, তবে যদি অনুষ্ঠানটা (বিএনপির সমাবেশ) শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়, এসব নিরাপত্তা বলয় উঠে যাবে। ঢাকা শহর সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হবে।”
গোলাপবাগে বিএনপির সমাবেশের পর পল্টন এলাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
“এভাবে সবসময় থাকবে না। তিনদিন আগে যেহেতু একটা ঘটনা ঘটেছে। আজ সমাবেশের পরেই আমরা সিদ্ধান্ত নেব, যে চলাচলের রাস্তা ও দোকানপাট খুলে দেওয়ার যায় কিনা। এটা একসময় উন্মুক্ত হয়ে যাবে, স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছর সময় হাতে রেখে সভা-সমাবেশ ও রাজনৈতিক কর্মসূচি জোরদার করেছে বিএনপি। গত অক্টোবর থেকে তারা দেশের বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করেছে। সর্বশেষ দলটির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ হচ্ছে শনিবার।
ঢাকায় সমাবেশের তিনদিন আগে নয়া পল্টনে জড়ো হওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়; প্রাণহানিসহ আহত হন অনেকে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে আটক করা দলটির কয়েকশ নেতাকর্মীকে। সেসময় থেকেই বিএনপি কার্যালয়ে তালা এবং পল্টনের সড়ক পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ঢাকায় সমাবেশ নিয়ে আলোচনার শুরু থেকেই বিএনপি পল্টনে সমাবেশ করার দাবি জানিয়ে আসছিল, কিন্তু নানা নাটকীয়তার পর গোলাপবাগে সমাবেশের সিদ্ধান্ত হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, “বিএনপি সেখানে সকাল ১০টা থেকে সমাবেশ করছে। তাদের লোকজন আসছে সেখানে। আমরা যে বিগত কয়েকদিনের কতগুলো ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য ঢাকা মহানগর যে জনগণ রয়েছে তাদের নিরাপত্তা ও সমাবেশের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমাদের একটি নিরাপত্তা বলয়ের ব্যবস্থা রেখেছি।
“আমারা আশা করবো, যেহেতু বিএনপি দেশের সব বিভাগীয় সম্মেলন শান্তিপূর্ণভাবে করেছে আজকেও সেভাবে করবে। আজকে ছুটির দিন। ওই এলাকায় ট্রাফিক ডাইভারশন দিয়েছি। যেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে।”
ঢাকায় গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে নিরাপত্তা জোরদারের কথা জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, “ঢাকা শহরের পুরোটায় যানবাহন চলছে। তাছাড়া যেসকল গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মোড়ে মোড়ে পুলিশের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যেন কোনো ঘটনা না ঘটে।”
নিরাপত্তার জন্য গোলাপবাগ মাঠ কতটা নিরাপদ- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “শেষ পর্যন্ত আমরা বলেছি- মিরপুর বাঙলা কলেজে, সোহরাওয়ার্দী কথা শুরু থেকে বলেছি। কিন্তু শেষে তারা এ মাঠে চেয়েছে। আমরা দিয়েছি।
“যদিও মাঠ ছাড়া রাস্তায় বেশ লোক রয়েছে। আমরা আর এদিকে আগাবো না, আমরা চাচ্ছি নির্ধারিত এ প্রোগ্রাম শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হোক। সমাবেশ শেষ হওয়া পর্যন্ত, বিএনপির কর্মীরা ঘরে যাওয়া পর্যন্ত নয়াপল্টনসহ পুরো রাজধানী এমন নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে থাকবে।”
এদিকে র্যাবের এক বার্তায় জানানো হয়েছে, নিরাপত্তা জোরদারে গোলাপবাগে বিএনপির সমাস্থলের উপরে তারা হেলিকপ্টারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে।