ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের একটি ভবনে আগুন লেগে ১০ শিশুসহ অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিবিসিকে এমনটি জানিয়েছেন উত্তর গাজার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের জরুরি সেবা বিভাগের পরিচালক ডাঃ সালাহ আবু লায়লা। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
ডাঃ লায়লা জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে কিন্তু মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
স্থানীয় এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, এক রান্নাঘরের গ্যাস লিক থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে ধারণা পাওয়া গেছে।
গাজার আটটি শরণার্থী শিবিরের মধ্যে ঘনবসতিপূর্ণ জাবালিয়া একটি।
আগুনটিকে ‘বিশাল’ বলে বর্ণনা করেছেন ডাঃ লায়লা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, পুরো ভবনজুড়ে আগুন জ্বলছে। পুড়তে থাকা ভবনের সামনে লোকজনকে চিৎকার করতে দেখা গেছে আর রাস্তায় থাকা হতাহতদের আত্মীয়-স্বজনরা কাঁদছে ও দোয়া-দরুদ পড়ছে।
ঘটনাস্থলে ছুটে আসা স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ‘জেনারেটর চালানোর’ জন্য ভবনটিতে পেট্রল সংরক্ষণ করে রাখ হয়েছিল।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে বলেন, “রক্ষার কোনো সম্ভাবনা ছাড়া শিশু ও নারীরা পুড়ছে, এটা মেনে নেওয়া কঠিন।”
ওই নিরাপত্তা কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, ওই ভবনের একটি পরিবার তাদের আত্মীয়দের মধ্যে একজনের বিদেশ থেকে ফেরা উদযাপন করছিল।
পশ্চিম তীরভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এ ঘটনাকে জাতীয় ট্র্যাজেডি বলে অভিহিত করে শুক্রবার একদিনের শোক ঘোষণা করেছেন।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ টুইটে বলেছেন, ‘মানবিক কারণে আহতদের (ইসরায়েলি) হাসপাতালগুলোতে নিতে’ তার কর্মীরা সহায়তা করবে।
গাজায় বিদ্যুতের তীব্র ঘাটতি থাকায় আলোর বিকল্প উৎস (মোমবাতি) ব্যবহার করতে গিয়ে প্রাণঘাতী অগ্নিকাণ্ড একটি নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিরোধ এবং ভূখণ্ডটিকে ইসরায়েল ও মিশর চারদিক থেকে অবরোধ করে রাখা এ পরিস্থিতির অন্যতম কারণ।
বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোর একটি গাজা। এখানে লোকসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে গড়ে ৫৭০০। জাতিসংঘের ভাষ্য অনুযায়ী, ২৩ লাখ বাসিন্দার এ ভূখণ্ডটিতে থাকা আটটি শিবিরে প্রায় ছয় লাখ শরণার্থী বসবাস করে।