গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচন: ইসির দিকে তাকিয়ে ভোটাররা


এফই অনলাইন ডেস্ক | Published: October 16, 2022 10:32:33 | Updated: October 16, 2022 18:00:03


নির্বাচনী এলাকার একটি চায়ের দোকানে এলাকাবাসী। ফাইল ছবি

গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে বন্ধ হয়ে যাওয়া ভোট পুনরায় কবে গ্রহণ করা হবে, ভোট ‘ডাকাত’ ও তাদের সহযোগীদের কী শাস্তি হবে- এসব প্রশ্ন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে জল্পনা-কল্পনা চলছে। চায়ের স্টল থেকে শুরু করে জেলার সর্বত্র এখন এ আলোচনা। à¦–বর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কী সিদ্ধান্ত নিবে, সেদিকে তাকিয়ে আছেন ভোটাররা। এ ছাড়া পুনঃভোট গ্রহণ হলে তা নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা। অনেকের মধ্যে শঙ্কাও কাজ করছে।

শনিবার ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে এমন শঙ্কা ও উদ্বিগ্ন হওয়ার কথা জানা গেছে।

দুপুর ২টার দিকে ফুলছড়ি উপজেলার কালিরবাজার এলাকার একটি চায়ের স্টলে কথা বলছিলেন কয়েকজন ভোটার।

এ সময় উপজেলার গুনভরি এলাকার কলেজ শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উপনির্বাচন বন্ধ হয়েছে। এখন নির্বাচন কমিশন কী সিদ্ধান্ত নিবেন? পুনরায় হলে কোন পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ হবে- তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন হয়ে আছেন।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন বন্ধের চার দিন পেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দুই উপজেলার ভোটাররা পরিষ্কারভাবে কিছু জানতে পারছে না।

কালীরবাজার এলাকার ব্যবসায়ী আমির হোসেন বলেন, সম্পন্ন হওয়া ভোটকেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন করছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা। কিন্তু তাদের দাবি নির্বাচন কমিশন মেনে নিবে কি-না, তাও স্পষ্ট নয়।

একই উপজেলার চন্দিয়া গ্রামের কৃষিশ্রমিক বদরুল আলম নিজের ভাষায় বললেন, “মেশিনোত ভোট দিমো, তাই কাম-কাজ বন্ধ করি সেন্টারোত গেনু। ভোট দিলেম। কিন্তু গণ্ডোগোলের জন্যে ভোট কোনা বনদো করি সগ মাটি হয়া গেলো। আরেকবার ভোট হলে জানি গণ্ডোগোল না হয়। সরকার জানি ভালো করি ব্যবস্থা ন্যায়।”

এ সময় চা বিক্রেতা মোজাম্মেল হক বললেন, “মানসের মনোত ভয় আচে, এবারক্যা যানি ভালো ভোট হয়।”

এর আগে বেলা ১১টার দিকে সাঘাটা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের কাছ থেকেও একই ধরনের মন্তব্য পাওয়া গেছে।

উপজেলার বোনারপাড়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ইভিএম ও সিসিটিভি ক্যামেরার কারণে মানুষের মধ্যে আস্থার জায়গা ফিরে এসেছিল। কিন্তু এর মাঝেও ‘ভোট ডাকাতির’ চেষ্টা করায় উপনির্বাচন বন্ধ হয়ে গেল।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন এখন কী সিদ্ধান্ত নিবেন, তা নিয়ে দুই উপজেলার ভোটারদের মধ্যে আলোচনার ঝড় বইছে। তারা কমিশনের সিদ্ধান্ত জানার অপেক্ষায় রয়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রকাশ করা উচিত।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আবদুল মোত্তালিব বলেন, পুনরায় ভোটগ্রহণের বিষয়ে শনিবার বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

গত বুধবার দুপুরে গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপনির্বাচন চলার সময় সিসিটিভি ক্যামেরায় অনিয়ম দেখে ৫১টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করার ঘোষণা দেয় ইসি। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে পুরো উপনির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

এ ছাড়া নির্বাচনের মোট পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে চারজনই ভোট বর্জন করেন।

এরপর ওইদিন বিকালে ভোট সম্পন্ন হওয়া কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণার দাবিতে দুই উপজেলা সদরে সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

এদিকে, ভোট সম্পন্ন হওয়া কেন্দ্রগুলোর ফলাফল ঘোষণার দাবি জানিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন বলেন, উপ-নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। স্থগিত ঘোষিত কেন্দ্রগুলোর পুনঃনির্বাচন হতে পারে।

তবে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী গোলাম শহীদ উপ-নির্বাচন বন্ধ করায় নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পুনরায় নির্বাচন হলে জাপা অংশ নিবে কি-না তা দলের হাই কমান্ডের সিদ্ধান্তের বিষয়।

এ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী গত ২২ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

Share if you like