Loading...
The Financial Express

গরমে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে এলএনজি আমদানি হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

| Updated: February 09, 2023 18:03:34


গরমে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে এলএনজি আমদানি হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

চলমান কৃষি সেচ মৌসুম, আসন্ন রমজান ও গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের চাহিদা মেটাতে আন্তর্জাতিক খোলা বাজার থেকে ‘উচ্চমূল্যের’ এলএনজি আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার সংসদে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি।

বিকালে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরুর পর প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, ২০০৮ সালে দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট, যা ২০১৮ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। বর্তমানে দৈনিক গ্যাস উৎপাদনের ক্ষমতা ২ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট।

গ্যাসের বর্তমান বেড়ে যাওয়া চাহিদা খোলা বাজার থেকে উচ্চমূল্যে এলএনজি আমদানির মাধ্যমে মেটাতে হবে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, এজন্য প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

“সে কারণে সরকার অন্যান্য ভোক্তা শ্রেণিকে অপরিবর্তিত রেখে শুধুমাত্র বিদ্যুৎ, শিল্প, ক্যাপটিভ বিদ্যুতে ও বাণিজ্যিক খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে,” যোগ করেন তিনি।

আন্তর্জাতিক বাজারে উচ্চমূল্যের কারণে মাঝে আট মাস আমদানি থেকে বিরত থাকার পর ফেব্রুয়ারিতে আবার খোলা বাজার থেকে এলএনজি কেনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার।

গত ১ ফেব্রুয়ারি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে জ্বালানি বিভাগের এক কার্গো এলএনজি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

দেশে নতুন শিল্প কারখানা বাড়তে থাকায় গ্যাসের চাহিদা মেটাতে ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে আন্তর্জাতিক খোলা বাজার থেকে নয় কার্গো (প্রতি কার্গোতে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ) এলএনজি আমদানি করেছিল সরকার। পরে একদিকে ডলার সংকট, অন্যদিকে এলএনজির মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে খোলা বাজার থেকে এলএনজি কেনা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এতে দেশে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট আরও প্রকট হয়ে ওঠে। গ্যাসের অভাবে অনেক কারখানা বন্ধ রাখতে হয়। তবে ডিসেম্বরে শীত শুরু হওয়ায় গ্যাস ও বিদ্যুতের চাহিদা কমে আসে; পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে।

এখন গরম আসার আগে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এলএনজি আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার।

এদিন প্রশ্নোত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলমান কৃষি সেচ মৌসুম, আসন্ন রমজান ও গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের বর্ধিত চাহিদা মেটানো, শিল্প খাতে উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখা এবং রপ্তানিমুখী বিভিন্ন কলকারখানার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎপাদিত ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রাখার উদ্দেশ্যে স্পট মার্কেট হতে উচ্চমূল্যে এলএনজি আমদানি করে এ বর্ধিত চাহিদা পূরণ করতে হবে।

সরকার দলীয় সাংসদ কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের অভূতপূর্ব সাফল্য বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও কৃষি পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধি করা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে আমাদের সরকার সার ব্যবস্থাপনা সংস্কার, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রণোদনা প্রদান ও সারসহ কৃষি উপকরণে উন্নয়ন সহায়তা দিচ্ছে।

দেশে আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা চালু করতে উন্নয়ন সহায়তায় কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, কৃষকদের সহায়তার লক্ষ্যে স্বল্প সুদে কৃষি ঋণের ব্যবস্থা, সাশ্রয়ী মূল্যে সার, উন্নত জাতের বীজ ও সেচের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে জলবায়ু পরিবর্তন এবং কোভিড-১৯ মহামারি অভিঘাত ও বৈশ্বিক সংকট সত্ত্বেও কৃষির উন্নতি ও আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা প্রবর্তনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ২০২৩ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার সম্ভাবনা সম্পর্কিত বৈশ্বিক পর্যবেক্ষণ বিষয়ে সরকার সতর্ক দৃষ্টি রাখছে এবং সম্ভাব্য মন্দার প্রভাব হতে বাংলাদেশকে মুক্ত রাখার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। রাজস্ব নীতি ও মুদ্রানীতিসমূহের মধ্যে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে সমন্বয় করা হচ্ছে।

উৎপাদনশীল ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে প্রয়োজনীয় সম্পদ প্রবাহ অব্যাহত রাখার উদ্দেশ্যে সরকার অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে জানান তিনি।

Share if you like

Filter By Topic