বেশিরভাগ সময় ক্লান্ত আর অবসাদে ভোগার কারণ হতে পারে কয়েকটি খাবার।
ব্যস্ত জীবনে দিন শেষে ক্লান্তিতে ঢলে পড়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এছাড়া ঘুমের সমস্যা, যে কোনো কারণে মানসিক চাপ ইত্যাদি কারণেও অবসাদগ্রস্ততায় ভুগতে হতে পারে। আর এসবই ক্ষণস্থায়ী। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
নিয়মিত জীবনযাত্রায় এ ধরনের ক্লান্তি যদি দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে তবে খাদ্যাভ্যাসের দিকে একবার হলেও নজর দেওয়া উচিত।
এই বিষয়ে মার্কিন পুষ্টিবিদ লরেন মানাকার বলেন, “ক্রনিক ফ্যাটিগ সিন্ড্রম’ বা ‘সিএফএস’য়ে ভুগছেন এরকম মানুষের সংখ্যা কম নয়। উন্নত জীবনযাত্রার অভাব ও বাজে খাদ্যাভ্যাসের কারণে এরকম হতে পারে।”
ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “আর এই অবসাদে ভোগার বিষয়টা যদি কারও মাঝে মাসখানেক ধরে চলতে থাকে তবে ধরে নেওয়াই যায় তিনি ‘সিএফএস’য়ে আক্রান্ত।”
এক্ষেত্রে কয়েকটি খাবারের প্রতি নজর দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
বেশি চর্বিযুক্ত মাংস
যে মাংসের টুকরায় বেশি চর্বি থাকে সেটা অস্বাস্থ্যকর হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
‘হিউম্যান নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়েটেটিক্স’ সাময়িকীতে প্রকাশিত নেদারল্যান্ডের ‘রাডবাউন্ড ইউনিভার্সিটি নাইমেগান মেডিকেল সেন্টার’য়ের ‘এক্সপার্ট সেন্টার ফর ক্রনিক ফ্যাটিগ’য়ের করা এক পর্যবেক্ষণমূলক তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, অস্বাস্থ্যকর চর্বির সঙ্গে ‘ক্রনিক ফ্যাটিগ সিন্ড্রম’য়ে ভোগার সম্পর্ক রয়েছে।
তাই চর্বিযুক্ত মাংস খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সেটা ছাড়তে হবে। পরিবর্তে খাওয়া যেতে পারে চর্বিহীন মুরগির মাংস।
সাদা পাউরুটি
সকালের নাস্তায় অনেকেই পাউরুটি খান। আর সেগুলো বেশিরভাগই হয় প্রক্রিয়াজাত ময়দার সাদা পাউরুটি।
এই ধরনের পাউরুটিতে আঁশের পরিমাণ কম থাকে। কোনোটাতে আবার থাকে না বললেই চলে।
নেদারল্যান্ডের করা উল্লেখিত পর্যবেক্ষণে এটাও দেখা গেছে যে, খাদ্যাভ্যাসে আঁশের পরিমাণ কম থাকলে দীর্ঘদিন ধরে অবসাদে ভুগতে হতে পারে।
তাই খাদ্যতালিকায় আঁশযুক্ত খাবার রাখতে হবে। অপ্রক্রিয়াজত পূর্ণ শষ্যের তৈরি রুটি খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে দিনের শুরুতে।
মিষ্টি খাবার
অল্পবিস্তর মিষ্টি খাওয়া যেতেই পারে। তবে বেশিরভাগ সময় মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়া, বিশেষ করে সঙ্গে যদি কোনো স্বাস্থ্যকর চর্বি বা প্রোটিন না থাকে, তাহলেই বিপদ।
রক্তে হঠাৎ শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে ক্লান্ত লাগবেই। মিষ্টি চকলেট যদি খেতেই ইচ্ছে হয় তবে ডার্ক চকলেট হবে এক্ষেত্রে প্রথম পছন্দ। কারণ কোকায়া’তে থাকা পলিফেনল্স অবসাদ কমাতে সাহায্য করে।
কোমল পানীয়
একথা বলার অপেক্ষা রাখে না, কোমল পানীয়তে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। পাশাপাশি যেসব পানীয় ‘হাই ফ্রুকটোস কর্ন সিরাপ’ দিয়ে তৈরি হয় সেগুলোও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না।
আর এই ধরনের কোমল পানীয় বেশি গ্রহণ করলে দেহে প্রদাহর মাত্রা বাড়বে। সঙ্গে দেখা দেবে ক্লান্তি।
অ্যালকোহল
অ্যালকোহল-ধর্মী যে কোনো পানীয় দেহে পানিশূন্যতা তৈরি করে। আর দেহে পানির অভাব হলে ক্লান্ত লাগবেই।
এমনকি যাদের ‘ক্রনিক ফ্যাটিগ সিন্ড্রম’ নাই, পানিশূন্যতার কারণে তাদের মাঝেও দেখা দেবে চরম অবসাদ।