ক্যান্সারের চিকিৎসা ব্যয়বহুল ও দীর্ঘমেয়াদী হওয়ায় দরিদ্র মানুষ যে ‘সব চিকিৎসা’ করাতে পারেন না, তা স্বীকার করে বিষয়টিকে ‘বৈষম্য’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
রোববার মহাখালীর জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে বিশ্ব ক্যান্সার দিবসের অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, “ক্যান্সারের চিকিৎসা পাওয়ার ক্ষেত্রে এখনও বৈষম্য রয়েছে যা কমানোর চেষ্টা করছে সরকার।”
জাহিদ মালেক বলেন, “ক্যান্সার একটি মারাত্মক ব্যাধি। এই রোগের অনেক চিকিৎসা বের হয়েছে, যা আমাদের দেশেও হচ্ছে। সেই চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল বলে যেভাবে পাওয়া উচিত, সেভাবে সবাই এটা পায় না।
“এখানে বৈষম্য কিছুটা রয়েছে। দরিদ্র মানুষ ক্যান্সারের সব চিকিৎসা করাতে পারে না। কারণ এটা অনেক ব্যয়বহুল চিকিৎসা এবং দীর্ঘ মেয়াদে নিতে হয়। সেই বৈষম্য আমরা কমানোর চেষ্টা করছি।”
ক্যান্সারের অনেক রোগীই চিকিৎসার বাইরে থাকে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, বছরে প্রায় এক লাখ লোক ক্যান্সারে মারা যায়, আক্রান্ত হয় দেড় লাখ। তবে বাস্তব চিত্র এর থেকেও খারাপ।
“অনেক লোক চিকিৎসার আওতার বাইরে থাকে। সে কারণে অনেকেই পরিসংখ্যানের আওতার বাইরে থাকে। আমাদের দেশে রোগীর তুলনায় চিকিৎসা ব্যবস্থা খুবই স্বল্প। ২০ লাখ মানুষ আছেন ক্যান্সার আক্রান্ত। তাদের চিকিৎসায় যে বড় মাপের ব্যবস্থাপনা দরকার, সেটি আমরা পারিনি, তবে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।”
দেশের হাসপাতালগুলোয় এখনও পর্যন্ত মানসম্মত চিকিৎসা সেবা দিতে পারছে না বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
তিনি বলেন, “প্রতিটি হাসপাতালে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে সরকার অঙ্গিকারাবদ্ধ। শুধু হাসপাতাল তৈরি করলে, আর কিছু মেশিন কিনে দিলেই চিকিৎসা হয়ে যাবে না। চিকিৎসা সেবা মূলত নির্ভর করে ডাক্তার-নার্সদের ওপর।”
ভবিষ্যতে এসব বিষয়ে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম খুরশীদ আলম অনুষ্ঠানে বলেন, ক্যান্সারের চিকিৎসা ও রোগ নির্ণয়ের ওপর গুরুত্ব আটটি বিভাগে আটটি ক্যান্সার হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে।
“ক্যান্সার স্ক্রিনিংয়ে বিশেষ কিছু ব্যবস্থা রেখেছি। অনেকগুলো প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছি। আমরা প্রাইমারি হেলথ কেয়ারে গুরুত্ব দিচ্ছি। সম্মিলিত উদ্যোগে আমরা ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব।”
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক টিটু মিয়া, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক জামালউদ্দিন চৌধুরী বক্তব্য দেন।