কক্সবাজার শহরের হোটেল-মোটেল জোনের আবাসিক হোটেল কক্ষ থেকে মা ও কন্যাশিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে; ঘটনার পর অন্য ‘দুই সন্তানকে’ নিয়ে স্বামী পরিচয়দাকারী ব্যক্তি পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় কলাতলী এলাকার আবাসিক হোটেল সি আলিফ থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয় বলে জানান কক্সবাজার সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. মিজানুর রহমান।
নিহতরা হল- চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার নাথপুরা এলাকার শচীন্দ্র দে’র মেয়ে সুমা দে (৩৬) এবং তার আট মাস বয়সী কন্যাশিশু। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
হোটেলের রেজিস্ট্রারে সুমার স্বামীর পরিচয়দানকারী ব্যক্তির নাম জেমিন বিশ্বাস লেখা রয়েছে। তার বাড়ী চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায়। অপর দুই সন্তানের নাম জানা না গেলেও তাদের একজনের বয়স আড়াই থেকে তিন বছর এবং অপরজনের বয়স হবে পাঁচ-ছয় বছর।
হোটেল কর্তৃপক্ষের বরাতে এএসপি মিজানুর বলেন, পুলিশ গিয়ে হোটেলটির চতুর্থ তলার ৪১১ নম্বর কক্ষের মেঝে ও খাটের উপর পড়ে থাকা অবস্থায় গৃহবধূ এবং তার কন্যাশিশুর মরদেহ দেখতে পায়।
“কক্ষটির দরজা বাইরে থেকে খোলা ছিল। গৃহবধূর গলায় আঘাতের সামান্য চিহ্ন পাওয়া গেছে। তার শরীর কালো হয়ে গেছে। শিশুর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। ফলে তাদের শ্বাসরোধে নাকি বিষক্রিয়ায় হত্যা করা হয়েছে তা মরদেহের ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
“প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হত্যার পর স্বামী পরিচয়দানকারী জেমিন বিশ্বাস পালিয়ে গেছেন। সঙ্গে বাকি দুই শিশুকে নিয়ে গেছেন।
এএসপি আরও বলেন, কী কারণে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে পুলিশ এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি। পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তি গ্রেপ্তার হলে জানা যাবে।
হোটেল সি আলিফের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মোহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, মঙ্গলবার স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে তিন শিশুসহ সুমা দে ও জেমিন বিশ্বাস হোটেলে উঠেন। তাদের শুক্রবার পর্যন্ত হোটেল অবস্থানের কথা ছিল। সুমা দে তার জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিয়েছেন। তবে সেটি মনে হচ্ছে, বিয়ের আগের। কারণ সেখানে স্বামীর নাম নেই। স্বামী পরিচয়দানকারী ব্যক্তির কাছে এনআইডি ছিল না; তিনি মোবাইল নম্বর দিয়েছেন।
“বেলা সাড়ে ১১টায় হোটেল কক্ষটি ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে জেমিন বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে চেক আউট করতে হোটেলের এক কর্মচারী কক্ষটিতে যান। এ সময় বাইরে থেকে দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভিতরে মা ও শিশুসন্তানকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখতে পায়। পরে ঘটনার ব্যাপারে পুলিশকে অবহিত করা হয়।“
জিএম আরও বলেন, তিন শিশুসহ তারা হোটেলে উঠেছিলেন। ঘটনার পর থেকে জেমিন বিশ্বাস ও দুই সন্তানের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এএসপি মিজানুর রহমান।
ঘটনার পর কক্সবাজার সদর থানার পুলিশ ছাড়াও সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট এবং ট্যুরিস্ট পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।