ওবায়দুল কাদেরের হ্যাটট্রিক


FE Team | Published: December 24, 2022 19:20:09 | Updated: December 24, 2022 21:23:33


ওবায়দুল কাদেরের হ্যাটট্রিক

আওয়ামী লীগের ২২তম কাউন্সিলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে টানা তৃতীয়বার সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গী করেছেন কাউন্সিলররা।

২০১৬ সালে দলের ২৩ অক্টোবর দলের বিংশতম কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের জায়গায় আসেন ওবায়দুল কাদের। এরপর ২০১৯ সালের ২১ ডিসেম্বর দলের ২১তম সম্মেলনে একই পদে দ্বিতীয় বার নির্বাচিত হন তিনি।

সভাপতি পদে পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা না থাকায় এবারও কাউন্সিল ঘিরে সবার আগ্রহ ছিল সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে। তবে শেখ হাসিনা নতুন কাউকে না নিয়ে পুরনো কাদেরই ভরসা রেখেছেন।

শনিবার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলন উদ্বোধনের পর বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনয়তনে শুরু হয় কাউন্সিল অধিবেশন, যাতে সাড়ে ৭ হাজার কাউন্সিলর বসেন পরবর্তী নেতৃত্ব নির্বাচনে।

কাউন্সিলে নির্বাচনী অধিবেশনে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান ফারুক সভাপতি পদে শেখ হাসিনার নাম প্রস্তাব করেন। তা সমর্থন করেন দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার।

এরপর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদেরের নাম প্রস্তাব করেন নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার। তা সমর্থন করেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুন।

নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রক্রিয়া পরিচালনা করতে গঠিত তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশনের প্রধান ও দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন সভাপতি পদে শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক পদে কাদেরের নাম কাউন্সিলরদের বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করেন।

সারাদেশ থেকে আসা কাউন্সিলররা সমস্বরে এই প্রস্তাব সমর্থন করেন। ফলে সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদের হ্যাটট্রিক হল।

ওবায়দুল কাদেরের জন্ম নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি। বসুরহাট সরকারি হাইস্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে তিনি নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধাতালিকায় স্থান পান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রি নেন।

কলেজজীবন থেকেই রাজনীতিতে যুক্ত ওবায়দুল কাদের। ১৯৬৬ সালের ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তিনি। ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। ওবায়দুল কাদের একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি মুজিব বাহিনীর কোম্পানীগঞ্জ থানার কমান্ডার ছিলেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ওবায়দুল কাদেরও বন্দি হয়েছিলেন। কারাগারে থাকা অবস্থাতেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। পরপর দুবার এ পদে ছিলেন তিনি।

রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি ওবায়দুল কাদের এক সময় শেখ ফজলুল হক মনি প্রতিষ্ঠিত দৈনিক বাংলার বাণীতে কাজ করতেন।

২০০০ সালে সংস্কৃতি ও শিক্ষা সম্পাদক পদ পাওয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পান তখনকার যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কাদের।

২০০৯ সালে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হওয়ার আগে তিনি সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদেও ছিলেন। এর আগে আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েছিলেন তিনি। ২০০৮ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন তিনি।

এর আগে নির্বাচন করলেও ১৯৯৬ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন কাদের। সপ্তমের পর নবম, দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনেও নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ) আসন থেকে নির্বাচিত হন তিনি।

শেখ হাসিনার তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর ২০১৩ সালে ওবায়দুল কাদের যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। তার সময়ে মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তিত হয় ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়’ নামে।

২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের চতুর্থ মেয়াদের সরকারেও ওই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দ্বিতীয়বারের মতো কাদেরকে দেন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগে সর্বাধিক টানা চার বার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জিল্লুর রহমান। তিন বার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ। তারপর ওবায়দুল কাদেরই তিন বার সাধারণ সম্পাদকের পদ পেলেন। à¦–বর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের। 



Share if you like