জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা সরকারের তত্ত্বাবধানে যাওয়া নিয়ে বিগত কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের আপত্তি থাকলেও এ নিয়ে মাথাব্যথা নেই কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশনের।
সরকারের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর পরদিন মঙ্গলবার সিইসি হাবিবুল আউয়াল নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসায় বলেন, “জাতীয় পরিচয়পত্র সেবার বিষয়টি সরকারের। এ নিয়ে ইসির মাথা ঘামানোর কিছু নেই।” খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
দেড় দশক আগে ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরির সময় জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজটি সাংবিধানিক সংস্থা নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হয়েছিল। এরপর নির্বাচন কমিশনই ছিল এর ব্যবস্থাপনায়।
বিগত কমিশনের আপত্তির মধ্যেই তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে সরকার। নতুন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন সোমবারই মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে।
সিইসি আউয়াল বলেন, “নির্বাচন কমিশনের কাছে স্বচ্ছ ভোটার তালিকা থাকবে। আমরা ভোটার তালিকা দিয়ে নির্বাচন করব। এনআইডি নিয়ে আমরা মাথা ঘামাব না।
“এখন নির্বাচনটা যদি নিয়ে যেতে চায়, যে নির্বাচনটা অন্য কেউ করবে, তখন আমি কথা বলব। এনআইডি যদি চলে যায়, এতে নির্বাচন প্রসেস যদি বিঘ্নিত হয়, তখন আমরা দেখব।”
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছিলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র দেখভাল করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইসির প্রয়োজন হলে তারাও তা ব্যবহারের সুযোগ পাবে।
সিইসি বলেন, “আইন তো এখনও হয়নি, নীতিগত অনুমোদন হয়েছে। ভোটার তালিকার বাই প্রোডাক্ট হচ্ছে এনআইডি। এনআইডির বাই প্রোডাক্ট কিন্তু ভোটার তালিকা নয়।
“এনআইডি চলে গেলে তো আমাদের ব্যাপার নয়। এটা রাষ্ট্র, সরকার এবং পার্লামেন্টের বিষয়। কাজেই এটা নিয়ে আমাদের চিন্তা-ভাবনার কোনো কারণ নেই। এটা নিয়ে আমরা মাথা ঘামাব না। আমাদের কাজ হচ্ছে নির্বাচন করা। ”
ভোটার তালিকার সঙ্গে এনআইডির সংযোগের কোনো প্রয়োজন নেই মন্তব্য করে সাবেক সচিব আউয়াল বলেন, “যে শিশুটির জন্ম হবে সেও এনআইডি পাবে। এখন সরকার যদি একটা উদ্যোগ নিয়ে থাকে সেখানে আমাদের প্রশংসা করা দরকার।”
এদিকে আইন না হওয়া পর্যন্ত এনআইডি কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের অধীনেই থাকবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “আইন যতদিন পর্যন্ত না হবে, ততদিন স্বরাষ্ট্রতে আসবে না। এখন যেভাবে আছে চলতে থাকবে, ওই নির্বাচন কমিশনের অধীনে।”
প্রক্রিয়া শেষ হয়ে পুনরায় মন্ত্রিসভায় আইনটি উঠতে এক মাসের মতো সময় লাগতে পারে বলে জানান তিনি।