সাত বছর পেরিয়ে গেলেও অর্থনৈতিক সংকটের এই সময়ে সরকারি চাকুরেদের নতুন বেতন কাঠামোয় নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
মঙ্গলবার সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে একথা জানানোর পাশাপাশি তিনি বলেন, এ মুহূর্তে মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়ার কথাও ভাবছে না সরকার।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়। সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান নতুন বেতন কাঠামো প্রশ্নটি রেখেছিলেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার ২০১৫ সালে জাতীয় বেতন স্কেল আদেশ জারি করে, যা বর্তমানেও বলবৎ রয়েছে।
“অতীতে বেতন স্কেল আদেশে সরকারি কর্মচারীদের প্রতি বছর নির্ধারিত পরিমাণে বেতন বৃদ্ধির সুবিধা ছিল। কিন্তু জাতীয় বেতনস্কেল ২০১৫ এ মূল বেতনের শতকরা হারে বেতন বৃদ্ধির বিধানের কারণে সরকারি কর্মচারীদের একটি নির্ধারিত হারে নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ঘটে, যা সর্বস্তরের সরকারি কর্মচারীর জীবনমান উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রেখে আসছে।”
মহামারী পরবর্তী ইউক্রেইন যুদ্ধ অর্থনীতিতে যে সংকট তৈরি করেছে, তা তুলে ধরে মুস্তফা কামাল বলেন, “করোনা পরবর্তী বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতিতে বিশ্বে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ মূল্যস্ফীতি দেখা দিয়েছে, যার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে সরকার নানামূখী পদক্ষেপ নিয়েছে।
“জনসাধারণের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণে সরকার সচেষ্ট আছে। এ পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন পে স্কেল বা মহার্ঘ্য ভাতা প্রদানের কোনো পরিকল্পনা এ মুহূর্তে নেই।”
পাচার করা অর্থ ফেরত ‘কার্যক্রম চলমান’
জাতীয় পার্টির মসিউর রহমান রাঙ্গাঁর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের আইনগত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
পাচারকৃত অর্থ উদ্ধার ‘অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা, গবেষণা সংস্থা বিভিন্ন ধরনের মেথোডলজি ব্যবহার করে পাচারকৃত অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে প্রাক্কলন করে, যার যথার্থতা ওইসব প্রতিষ্ঠানও দাবি করে না।
“এসব সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে বাংলাদেশ হতে কী পরিমাণ অর্থপাচার হয় সে বিষয়ে পরস্পর বিরোধী তথ্য পরিলক্ষিত হয়। বস্তুত, অর্থপাচারের পরিমাণ নির্ধারণ অত্যন্ত দুরূহ বিষয়।“
“তবে দেশ থেকে অর্থপাচারের মাত্রা বা পরিমাণ যাই হোক না কেন, পাচারের সম্ভাব্য উৎসগুলো বন্ধ করার পাশাপাশি অর্থপাচার রোধ এবং পাচারকৃত অর্থ বাংলাদেশে ফেরত আনার বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্যে সরকারের সকল একযোগে কাজ করে যাচ্ছে,” বলেন তিনি।