তুরস্কের ভূমিকম্প দুর্গতদের সহায়তায় নিজেদের এক মাসের বেতন পাঠাচ্ছেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই।
স্বশাসিত দ্বীপটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয় বৃহস্পতিবার বলেছে, আঙ্কারাকে ইতোমধ্যেই কিছু ত্রাণ পাঠিয়েছে তাইপে, কিন্তু সাই ও লাইয়ের বেতন এর বাইরে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যত দ্রুত সম্ভব দেশ পুনর্গঠনে তাদের দেওয়া সহায়তা তুরস্কের কাজে লাগবে বলে আশা করছেন তারা।”
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আগামী বছর তাইওয়ানে হতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাই ও লাই, উভয়েরই অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
বুধবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান ভূমিকম্প মোকাবেলায় তার সরকারের প্রথম দিককার কর্মকাণ্ডে কিছু সমস্যা ছিল বলে স্বীকার করে নিয়েছেন।
সোমবার তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে স্থানীয় সময় ভোররাতের দিকে হওয়া ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে তুরস্ক ও প্রতিবেশী সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে নিহতের সংখ্যা এরই মধ্যে ১৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
সাই ও লাই গত বছর তাদের এক মাসের বেতন যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেইনের মানবিক ত্রাণ তহবিলে দান করেছিলেন। সাইয়ের এক মাসের বেতন ৪ লাখ তাইওয়ানি ডলার, যা ১৩ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলারের সমতুল্য।
তাইওয়ানেও প্রায়ই ভূমিকম্প হয়। বিভিন্ন সময় ভূমিকম্পের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাওয়া স্বশাসিত দ্বীপটি তুরস্কের ভূমিকম্প দুর্গতদের ২০ লাখ ডলার ত্রাণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি ভূমিকম্পদুর্গত এলাকায় ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়া জীবিতদের উদ্ধারে চলা কার্যক্রমে সহায়তায় করতে তারা দুটি উদ্ধারকারী দলও পাঠিয়েছে।
বুধবার সাই দুর্গত এলাকায় উদ্ধারকাজ চালানো তাইওয়ানি দলের কয়েকজনের সঙ্গে কথাও বলেছেন।
“তাইওয়ান ও তুরস্ক যেন একে অপরকে সহায়তা করতে পারে, সেজন্য ঝুঁকিতে ভয় না পেয়ে তুরস্ক যাওয়া দলের সকল সদস্যকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি,” নিজের ফেইসবুক পেইজে এমনটাই লিখেছেন তিনি।
১৯৯৯ সালে তাইওয়ানে হওয়া এক শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর আন্তর্জাতিক তৎপরতায় তুরস্কও অংশ নিয়েছিল। সে সময় তাইওয়ানে উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছিল তারা। সেবারের ভূমিকম্প দ্বীপটির দুই হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল।
বিশ্বের অনেক দেশের মতো তুরস্কেরও তাইওয়ানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। কিন্তু দুই পক্ষই একে অপরের রাজধানীতে দূতাবাস সমপর্যায়ের কার্যালয় খুলে রেখেছে। ইস্তাম্বুল ও তাইপের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইটও আছে।