অর্থনৈতিক টানাপোড়েনে বিপর্যস্ত পাকিস্তানের সাড়ে ৬ বিলিয়ন ডলার ঋণের আবেদন নিয়ে আলোচনায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) আরো কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
শুক্রবার পেশোয়ারে এক বৈঠকে তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে আমরা কল্পনাতীত সঙ্কটের মধ্যে আছি। এই অবস্থায় ঋণ পেতে আইএমএফের যেসব শর্ত পূরণ করতে হবে, তা ভাবার মত অবস্থাও আমাদের নেই।”
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানায়, সোমবার এই পেশোয়ারের পুলিশ লাইনস এলাকার একটি মসজিদে আত্মঘাতী হামলায় পর শুক্রবার সেখানে সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শাহবাজ শরিফ।
তিনি বলেন, “আপনারা জানেন, আমাদের সম্পদ ফুরিয়ে আসছে। আমরা যে অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি, তা অচিন্ত্যনীয়।”
ঋণের শর্ত নিয়ে শাহবাজ শরিফের ওই বক্তব্যের বিষয়ে তাৎক্ষণিক আইএমএফ মিশনের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বেইলআউট কর্মসূচির অধীনে আইএমএফ’র ৬৫০ কোটি ডলার ঋণের বিষয়ে এখনও দেনদরবার চালাতে হচ্ছে পাকিস্তানকে। এ ঋণের জন্য শর্ত নিয়ে নবমবারের মত পর্যালোচনা বৈঠকে অংশ নিতে বর্তমানে পাকিস্তান সফর করছেন আইএমএফ কর্মকর্তারা।
গত নভেম্বরে আইএমএফের সঙ্গে বৈঠকে কথা হয়েছিল, সব ঠিক থাকলে প্রথম কিস্তিতে আড়াইশ কোটি ডলার পাবে পাকিস্তান। কিন্তু আইএমএফ তা ছাড় না করে নতুন রে পর্যালোচনা করছে।
ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি মুদ্রার দর কমতে কমতে বৃহস্পতিবার রেকর্ড ২৭১ দশমিক ৩৬ রুপিতে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। খোলাবাজারে এক ডলারে মিলছে ২৭৫ দশমিক ৫০ রুপি, আগেরদিনও যা ২৭৫ রুপি ছিল।
পাকিস্তানের স্টেট ব্যাংকের (এসবিপি) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধের পর জানুয়ারির ২৭ তারিখে তাদের রিজার্ভের পরিমাণ ১৬ শতাংশ কমে ৩০৯ কোটি ডলারে নেমে গেছে।
এই অর্থ দিয়ে দেশটির তিন সপ্তাহের আমদানি ব্যয়ও মেটাতে পারবে না। সঙ্কট কাটাতে আইএমএফ’র দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া কোনো বিকল্পও পাকিস্তানের নেই।
আইএমএফের এই ঋণ এলে অন্যান্য সহযোগী প্ল্যাটফর্ম থেকে অর্থ পাওয়া সহজ হবে বলে মনে করছে দেশটির নীতিনির্ধারকরা।