Loading...
The Financial Express

ঋণ সীমায় হাত না দিয়ে রেপোর কৌশল, মূল্যস্ফীতি বশে আসবে?

| Updated: October 08, 2022 17:25:55


ঋণ সীমায় হাত না দিয়ে রেপোর কৌশল, মূল্যস্ফীতি বশে আসবে?

মূল্যস্ফীতির চাপ সামলাতে চার মাসের মধ্যে তিনবার নীতি সুদহার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক ঋণের সুদহার না বাড়িয়ে তা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কতটা ভূমিকা রাখছে সেই আলোচনা সামনে এসেছে এরপর। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

অর্থনীতিবদরাও একই প্রশ্ন রেখে বলছেন, শুধু রেপোর সুদহার বাড়িয়ে বাজারে মুদ্রা সরবরাহ কমিয়ে আনার মাধ্যমে মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার পদক্ষেপ তেমন কাজে আসবে না। ঊর্ধ্বমুখী ঋণ প্রবৃদ্ধিকে ধীর করতে খুব একটা সুফল মিলবে না এ কৌশলে। ব্যাংক ঋণের সুদহারে সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে রেখে এ পদক্ষেপের কার্যকর ফল পাওয়া যাবে না বলে তাদের পর্যবেক্ষণ।

এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ঋণের সুদহার বাড়লেই তা বাজারে মুদ্রা সরবরাহ কমাতে ভূমিকা রাখবে, যা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখবে। কেননা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বোচ্চ সীমা বহাল থাকার নির্দেশনায় রেপোর কারণে ব্যাংকের অর্থ ধার নেওয়ার খরচ বাড়লেও ঋণ দিতে সুদহার ৯ শতাংশের বেশি বাড়ানোর সুযোগ বন্ধ।

এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের এ পদক্ষেপ ঋণ কমিয়ে বাজারে মুদ্রা সরবরাহ কমাতে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর।

ইতোমধ্যে অল্প সময়ের মধ্যে তিনবার রেপো সুদহার বাড়ানো হলেও মূল্যস্ফীতির পারদ নিম্মমুখী হয়নি, উল্টো বেড়েছে। যে কারণে বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা অফিসের লিড ইকনোমিস্ট কনসালটেন্ট জাহিদ হোসেনের প্রশ্ন “রেপো রেট বাড়ল কিন্তু ঋণের সুদহার বাড়ল না তাহলে কার্যকরটা কোথায়?”

সরকারের পরামর্শে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২০ সালের এপ্রিলে সুদহারে ‘নয়-ছয়’ সীমা বেঁধে দেয়। ৯ শতাংশের বেশি সুদে ঋণ দেওয়া যাবে না বলে বাধ্যবাধকতা আরোপ করে, যা এখনও বহাল আছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাড়তে থাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পথে যা কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে ঋণ গ্রহীতাদের জন্য ব্যাংক অর্থায়নকে ব্যয়বহুল করতে পারছে না। উল্টো বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ জুলাই ও অগাস্টে বেড়েছে। জুলাইয়ে হয়েছে ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ, যা প্রায় চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যেকোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে থাকা দুটি উপায়ের একটি হচ্ছে নীতি সুদহার বা পলিসি রেটের ব্যবহার।

তার মতে, প্রশাসনিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণে ৯ শতাংশ সুদহার নির্ধারণ করে দিয়েছে। এখানে কোনো পরিবর্তন আনেনি। এটি বাড়ালে বা কিছুটা শিথিল করে অর্থাৎ ৯ থেকে সর্বোচ্চ ১২ বা ১৫ শতাংশ করলে ব্যবসায়ীদের ঋণের খরচ বাড়ত। তখন তারা ব্যয় নিয়ন্ত্রণে যেত।

এতেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ হত মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক উল্টো ব্যবসায়ীদের কম খরচে অর্থ দেওয়ার ব্যবস্থা করছে।“

সাধারণত এক থেকে ২৮ দিনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর টাকা ধার করার নামই হচ্ছে রেপো। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে তারল্য ও বিনিয়োগ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। রেপো সুদহার হিসেবে পরিচিত নীতি সুদহার বাড়ানোর অর্থ হল কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অর্থ ধার করতে এখন বাড়তি সুদ দিতে হবে ব্যাংকগুলোকে।

অন্যান্য দেশকে অনুসরণ করে বাংলাদেশ ব্যাংকও মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে দুই বছর পর গত ২৯ মে প্রথম রেপো সুদহার ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশে উন্নীত করে।

এরপর চার মাসের মধ্যে গত ২৯ সেপ্টেম্বর তৃতীয়বার আরও ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে রেপো হার ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ নিয়ে যায়। অন্যান্য রিভার্স রেপো (৪ শতাংশ), বিশেষ রেপো (৮ শতাংশ) ও ব্যাংক রেটের (৪ শতাংশ) মত নীতিসুদ হারে কোনো বদল আনেনি।

মূল্যস্ফীতি দমিয়ে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন পদক্ষেপও তেমন ভূমিকা রাখেনি। উল্টো করোনাভাইরাস মহামারীর বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পর বৈশ্বিক অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলে পণ্যমূল্য বাড়তে থাকার প্রভাবে তা বাড়তে থাকে।

এর সঙ্গে ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হলে জ্বালানির মূল্য বেড়ে যাওয়াসহ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের বাড়তি পরিবহন ব্যয় অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও মূল্যস্ফীতির পারদকে উসকে দেয়। দেশে গত জুনে মূল্যস্ফীতি গিয়ে পৌঁছায় ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশে পৌঁছায়, যা নয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। জুলাইয়ে তা কিছুটা কমে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ হয়।

এর পরের দুই মাসের তথ্য এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ না হলেও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক শামসুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, অগাস্টে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ এবং পরের মাস সেপ্টেম্বরে কিছুটা কমে ৯ দশমিক ১ শতাংশ হয়েছে। মূল্যস্ফীতির এ হার গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ মো. হাবিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, মূলত তা নিয়ন্ত্রণের জন্যই রেপো রেট বাড়ানো হয়েছে যাতে ব্যাংকগুলোর তহবিল খরচ বেড়ে যায়। এতে ব্যাংকের ঋণ প্রবাহের গতি কমে আসবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাচ্ছে টাকার সরবরাহ কিছুটা কমে আসুক।’’

এক্ষেত্রে ব্যাংক ঋণের সুদহারে সীমা বেঁধে দেওয়াকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনও সমস্যা মনে করছে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণের সুদের গড়হার ৭ শতাংশের ঘরেই রয়েছে। এটি ৯ শতাংশে গেলে তখন দেখা যাবে।’’

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, গত অগাস্ট শেষে ব্যাংকিং খাতের সার্বিক গড় ঋণের সুদহার ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। ব্যাংক ভেদে তা কোনটিতে ৮ দশমিক ৯৮ শতাংশেও ওঠে।

তবে এ বিষয়ে ভিন্ন মত জানিয়ে অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্তে এখন শুধু কলমানি মার্কেটে চাহিদা বাড়বে অর্থের যেখানে সুদহার সাড়ে ৫ শতাংশ থেকে আরেকটু বাড়বে। এছাড়া আর কোনো প্রভাব পড়বে না।

অর্থনীতিতে এখন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই ‘সবচেয়ে জরুরি’ মন্তব্য করে তার পরামর্শ ঋণের সুদহার বাড়িয়ে দেওয়া ছাড়া যা সম্ভব নয়। এতে ব্যবসায়ীরা নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঋণ নেবেন না এবং সঠিক ব্যবহারে উৎসাহিত হবেন।

রেপোর সঙ্গে বাড়ছে ঋণ প্রবৃদ্ধিও

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় গত ৩০ জুন এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার রেপোর সুদহার বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক; ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে সাড়ে ৫ শতাংশ করা হয়।

এর পরের মাস জুলাইয়ে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছিল ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ, যা প্রায় চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। মে মাসে এ হার ছিল ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। রেপোর মাধ্যমে টাকার সরবরাহ কমানোর পদক্ষেপের মধ্যে গত অগাস্ট শেষে তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।

এতে দেখা যায়, মে ও জুনে রেপো হার বাড়িয়েও বাজারে অর্থের সরবরাহ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। এমন প্রেক্ষাপটেই ব্যাংক ঋণের হারে সর্বোচ্চ সীমা বহাল রেখে শুধু রেপো হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন অর্থনীতিবিদদের।

বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক লিড ইকোনোমিস্ট জাহিদ হোসেন এমন পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রেপোর বাইরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে থাকা অপর উপায় ট্রেজারি বিল ও বন্ড বিক্রি করে বাজার থেকে টাকা তুলে নেওয়ার পরামর্শ দেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম বাগে রেখে পণ্যমূল্যের দাম সহনীয় রাখার মাধ্যমেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা গত ১৫ মাস ধরে করছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার ডলার বিক্রি করে বাজার থেকে অর্থ তুলে নিয়েছে। চলতি অর্থবছরেও তা বজায় রেখেছে।

জাহিদ হোসেন মনে করছেন, এজন্যই মুদ্রা বাজারে বিনিময় হারে ব্যাপক ওঠানামা দেখা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, গত জুলাই শেষে রিজার্ভ মানি কমেছে আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ৪ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। আর ব্রড মানি (এম২) এর প্রবৃদ্ধি গত অগাস্টে হয়েছে ৮.২৩ শতাংশ; গত বছরের একই সময়ে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১২ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

সরকারের যত ব্যয় সাশ্রয়

পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে ডলার আকাশচুম্বী হয়ে পড়লে সরকার ব্যয় সাশ্রয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়। বাজারে অর্থের প্রবাহ কমার ক্ষেত্রে যেগুলো কিছুটা প্রভাব ফেলার মাধ্যমে পরোক্ষভাবে মূল্যস্ফীতির চাপ সামলাতে ভূমিকা রাখে।

সরকারের এমন পদক্ষেপের মধ্যে বাজেটে কৃচ্ছতা সাধনের উদ্যোগ, ডলার সংকট তীব্র হলে জনগুরুত্বপূর্ণ বাদে অন্যান্য প্রকল্প স্থগিত রাখা বা এগুলোতে অর্থ ছাড়ে বিলম্ব করা, বিদেশ ভ্রমণ সীমিত করা, জ্বালানির খরচ বাঁচাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে লোড শেডিং ফিরিয়ে আনা, শিল্প কারখানায় এলাকাভিত্তিক ছুটি, সূর্যের আলোর ব্যবহার বাড়াতে সরকারি অফিস সূচি দুই ঘণ্টা এগিয়ে এনে সকাল ৮টা থেকে শুরু করা, সরকারি গাড়ি কেনা বন্ধ এবং ২০ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয় করা।

অপরদিকে জ্বালানিসহ ভোজ্যতেল ও চাল আমদানিতে শুল্ক ছাড় দিয়েছে সরকার। এসব পদক্ষেপেও মূল্যস্ফীতির পারদ চড়ছেই, কমছে না সংসার খরচ; চাপ বাড়ছে সীমিত আয়ের মানুষের।

যে পথে যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ অন্য দেশ

বিশ্ব অর্থনীতি গত আড়াই বছর ধরে কোভিড পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া এবং ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে নানামুখী সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এর নেতিবাচক দেখা গেছে বিশ্বজুড়েই। আরেকটি বিশ্ব মন্দার আশঙ্কার মধ্যে মূল্যস্ফীতির ক্রমাগত চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলোসহ ছোট-বড় সব অর্থনীতির দেশই।

মূল্যস্ফীতির বাড়তি এ চাপ ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে প্রতিবেশী ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও নিয়মিত রেপো সুদহার বাড়াচ্ছে।

ভারতের সংবাদপত্রগুলো বলছে, খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া ও ডলারের বিপরীতে রুপির মান ধারাবাহিকভাবে কমে রেকর্ড ৮১ হওয়ার মধ্যে গত অগাস্টে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। উচ্চ হারের এ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজারে মুদ্রা প্রবাহ সংকোচনে চতুর্থবার নীতি সুদহার বাড়ায় দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপরও সেপ্টেম্বর শেষে মূল্যস্ফীতি না কমে বরং আরও বেড়ে ৭ দশমিক ৫৯ শতাংশে উন্নীত হতে পারে বলে প্রক্ষেপণ করেছে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)।

অপরদিকে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রতিনিয়ত খবর হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতিও। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভও সুদহার বাড়ানোর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা শুরু করে। এতে ডলারের দাম বাড়তে থাকে। বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী এ মুদ্রা শক্তিশালী করার পদক্ষেপের মধ্যে গত জুনে ১৯৯৪ সালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হারে বাড়ায় রেপোর সুদহার, যা এখন চার দর্শকের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে।

অনেকটা বাধ্য হয়ে জাপান, যুক্তরাজ্যসহ ৮০টি দেশও ফেডকে অনুসরণ করে সুদহার বাড়িয়েছে এবং বাড়ানোর পথে রয়েছে। তবে এতেও যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ বড় অর্থনীতির দেশগুলোতেও মূল্যস্ফীতি বাগে আসেনি। বরং এর প্রভাবে দুর্বল মুদ্রার দেশগুলোকে বেশি মূল্য দিতে হচ্ছে; মূল্যস্ফীতির পারদ চড়ছেই।

নীতি সুদহার বাড়ানোর পাশাপাশি পণ্যের আমদানি শুল্ক কমিয়ে দিয়ে মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার পথ খুঁজছে যুক্তরাজ্য।

‘আরও অপেক্ষার প্রয়োজন ছিল’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ মনে করেন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রেপোর সুদহার বাড়ানোর মত পদক্ষেপ আরও অপেক্ষা করে নেওয়া প্রয়োজন ছিল।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ‘‘অগাস্টে বেসরকারি খাতের ঋণের সরবরাহে ১৪ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ ঋণ যদি উৎপাদন খাতে যায় তাহলে তা অর্থনীতির জন্য ভালো।

‘‘এতে কর্মসংস্থান বাড়বে। মানুষের আয়ের খাত তৈরি হবে। মূল্যস্ফীতির চাপ সামলাতে তা সহায়ক হবে।“

ঋণ প্রবাহ বেড়ে যাওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে তুলে ধরে তিনি বলেন, আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি দেখতে পায় ঋণগুলো বড় বড় গোষ্ঠীরা নিয়েছে বা এমন কাজে গিয়েছে যার তাৎক্ষণিক কোনো ফল পাবে না অর্থনীতি। তখন তা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেয়ে বাড়িয়ে দেবে। সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবস্থা নিতে পারত বলে মন্তব্য তার।

Share if you like

Filter By Topic