Loading...
The Financial Express

ইরানে আমিনির কবরস্থলে শোকার্তরা, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ

| Updated: October 27, 2022 16:00:00


ছবি: রয়টার্স ছবি: রয়টার্স

মাশা আমিনির মৃত্যুর ৪০দিন উপলক্ষ্যে শোক জানাতে কুর্দি অধ্যুষিত শহর সাকেজে এ তরুণীর কবরে অনেক মানুষ জড়ো হয়েছিল। এ সময় তাদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের। 

সমবেত জনতাকে লক্ষ্য করে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী গুলিও ছুড়েছে বলে দাবি করেছেন একজন প্রত্যক্ষদর্শী।কুর্দি একটি মানবাধিকার গোষ্ঠীও সাকেজ শহরের জিনদান স্কয়ারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলি এবং টিয়ারগ্যাস ছোড়ার কথা জানিয়েছে।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর ভাইয়ের সঙ্গে তেহরান গিয়ে ঠিকমত হিজাব না পরার অভিযোগে ইরানের নীতি পুলিশের হাতে আটক হন ২২ বছরের তরুণী ‍মাশা। তিনদিন পর ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি মারা যান। মাঝের এই তিন দিন তিনি হাসপাতালে কোমায় ছিলেন।

মাশার পরিবারের দাবি, পুলিশি নির্যাতনে মাশা কোমায় চলে যান। পুলিশের দাবি, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

মাশার মৃত্যু ঘিরে প্রথম তার নিজ শহর সাকেজে এবং সেখান থেকে পুরো ইরানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা এখন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির পতন চাইছেন।

ইরান সরকার বিক্ষোভ দমনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সারা দেশে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে বহু মানুষ নিহত হয়েছে।

বুধবার মাশার মৃত্যুর ৪০দিন পূরণ হয়। ইসলাম ধর্মে সাধারণত কারো মৃত্যুর ৪০দিন পর তার স্মরণে বিশেষ আয়োজন করা হয়।

মাশার জন্য অবশ্য তার পরিবার থেকে তেমন আয়োজন ছিল না। কিন্তু পুরো প্রদেশ থেকে বহু মানুষ মাশার জন্য শোক করতে তার শহরে এদিন উপস্থিত হয়েছিলেন।

সেখানে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘‘মাশার স্মরণে শোক প্রকাশ করতে লোকজন কবরস্থানে জড়ো হয়েছিল। দাঙ্গা পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে......সেখান থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।”

এ বিষয়ে রয়টার্স ইরানি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পারেনি।

ইরানের আধাসরকারি সংবাদ সংস্থা সানা জানায়, কবরস্থানে প্রায় ১০ হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিল। তাদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ বেধে গেলে ওই এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রাখা হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নানা ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, সাকেজ শহরে প্রচুর দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করার পরও হাজার হাজার মানুষ মিছিল করে মাশাকে যেখানে কবর দেওয়া হয়েছে সেই কবরস্থানের দিকে যাচ্ছে।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মিছিল থেকে ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ বলে স্লোগান দেওয়া হচ্ছিল। সেখানে অনেক বাসিজ মিলিশিয়া এবং দাঙ্গা পুলিশ উপস্থিত ছিল বলেও জানান তিনি।

বলেন, ‘‘কুর্দিস্তান প্রদেশের সব এলাকা থেকে মানুষ কবরস্থানে জড়ো হয়েছিল। আমরা সবাই মিলে মাশার মৃত্যুতে শোক করছিলাম।”

মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, মাশার চল্লিশায় আবার বিক্ষোভ উস্কে উঠতে পারে আশঙ্কায় নিরাপত্তা বাহিনী থেকে মাশার পরিবারকে হুমকি দিয়ে বলা হয়েছিল তার চল্লিশার আয়োজন না করতে। নতুবা ‘তাদের ছেলেদের গ্রেপ্তার করা হবে’।

যদিও কুর্দিস্তান প্রদেশের গভর্নর অভিযোগ অস্বীকার করে রাষ্ট্রায়াত্ত সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘চল্লিশার অনুষ্ঠান আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত তার পরিবারের ছিল’।

অথচ, কর্তৃপক্ষ এদিন কুর্দিস্তান প্রদেশর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছিল। তার কার হিসেবে বলে, ‘ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রাদুর্ভাবের কারণে’ এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, মাশার মৃত্যু ঘিরে ইরান জুড়ে যে বিক্ষোভ হয়েছে তাতে অন্তত ২৫০ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে কিশোরীরাও রয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

ইরান সরকার এ বিক্ষোভের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ‘ইন্ধন’ কে দায়ী করেছে। বলেছে, বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর ৩০ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন।

Share if you like

Filter By Topic