পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান বলেছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি তাকে হত্যার নতুন এক চক্রান্তের পেছনে আছেন।
এ জন্য পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) কো-চেয়ারম্যান জারদারি একটি ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে টাকাও দিয়েছেন’ বলে অভিযোগ তার।
শুক্রবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বক্তৃতায় ইমরান এই বিস্ফোরক অভিযোগ করেন বলে ডনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরপরই তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
“আগে এক জনসভায় সমর্থকদের বলেছিলাম, চারজন লোক আছে, যারা আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে; এ কথা বলায় ওই পরিকল্পনা ভণ্ডুল হয়ে গিয়েছিল।
“তারপর ধর্মের নামে আমাকে ‘শেষ করে দেওয়ার’ নতুন পরিকল্পনা ‘প্ল্যান বি’ হয়। কিন্তু আমি সেটাও জানতে পারি এবং দুটো জনসভায় ওই পরিকল্পনা উন্মোচন করে দিই,” বলেন ইমরান।
লংমার্চে ওয়াজিরাবাদে তার ওপর হওয়া হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, “এইসব চক্রান্তকারীরা প্রায় সফল হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছে।”
“এখন তারা প্ল্যাস সি বানিয়েছে, আর জারদারি এর পেছনে আছেন। তার আছে অফুরন্ত অবৈধ অর্থ, সিন্ধু সরকারের কাছ থেকে লুট করা যে অর্থ তিনি নির্বাচনে কাজে লাগান, বিধায়ক কেনেন; যেখানেই নির্বাচন হোক না কেন, খাইবার পাখতুনখোয়া বা গিলগিত-বালতিস্তান, তিনি সেখানে সমানে টাকা ঢালেন।
“তিনি একটি জঙ্গি গোষ্ঠীকে টাকা দিয়েছেন। তার সহায়তাকারীরা সংস্থার প্রভাবশালী লোকজন। তিন দিক থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তারা পরবর্তী অপরাধ কার্যকরের পরিকল্পনা সাজিয়েছে,” বলেছেন পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান।
তবে যে চক্রান্তই হোক না কেন, সুস্থ হওয়ার পর ফের রাস্তায় নামবেন বলেও সমর্থকদের প্রতিশ্রুতি দেন ওয়াজিরাবাদে হামলায় আহত ইমরান।
“কিন্তু যদি আমার কিছু হয়ে যায়, তাহলে এর পেছনে কে আছে, তা জানা উচিত দেশের, যেন দেশ কখনোই তাদের ক্ষমা না করে,” বলেছেন তিনি।
ইমরানের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পিপিপি নেতারা।
দলটির অন্যতম প্রভাবশালী নেতা সাজিয়া মারি বলেছেন, জারদারির দিক থেকে ইমরানের কোনো বিপদ নেই, আর সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উচিত, তার ‘নিজের আস্তিনে থাকা সাপদের’ নিয়ে সাবধান থাকা।
পিপিপির আরেক নেতা সেলিম মন্দভিওয়ালা বলেছেন, জারদারির বিরুদ্ধে উল্টোপাল্টা অভিযোগ এনে ইমরান দেশকে বিভ্রান্ত করতে চেষ্টা করছেন।
ইমরান অতীতে নিজেই সন্ত্রাসীদের সমর্থক ছিলেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
“ইমরান খানে মানসিক অবস্থার পরীক্ষা নিরীক্ষা দরকার। মিথ্যা অভিযোগ এনে তিনি সরকারকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছেন। তিনি এরকম মিথ্যা আর বিভ্রান্তিকর কল্পকাহিনী দিয়ে তার মৃত রাজনীতিকে বাঁচাতে চাইছেন,” বলেছেন সেলিম।