পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খানের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে দেশটির বর্তমান রেলমন্ত্রী খাজা সাদ রফিক বলেছেন, এটা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রও হতে পারে।
না হলে কেন হামলার পরপরই পিটিআইয়ের নেতারা সরকার ও সামরিক বাহিনী তিন কর্মকর্তাকে দায়ী করবেন, শুক্রবার ইসলামাবাদে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রশ্ন করেন বলে জানিয়েছে ডন।
“আপনাদের কাছে কোনো প্রমাণ নেই, তাও আপনারা নাম বলা শুরু করেছেন। ইমরান প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন এমন কোনো ছবিও নেই। হতে পারে এটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র,” ঘটনা তদন্তের আহ্বান জানিয়ে এমনটাই বলেছেন সাদ রফিক। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
“পিটিআই যদি এ বিষয়ে সিরিয়াস হয় তাহলে পাঞ্জাব ও কেন্দ্রীয় সরকার মিলে এ ঘটনার বিষয়ে যৌথ তদন্তে নামতে পারে, যেন সত্য আলোর মুখ দেখে,” বলেছেন পাকিস্তান মুসলিম লীগের (নওয়াজ) এ নেতা।
ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া ইমরান ২০১৮ সালে ভোটে জিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন। দেশটির রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারকারী সেনাবাহিনীর সমর্থন তখন তার দিকে থাকলেও কিছু দিন পর তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়।
সেনা সমর্থন হারানো ইমরানের বিরুদ্ধে এই বছরের শুরুতে জোট বেঁধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে দেশটির বড় দুই রাজনৈতিক দল। তাতে হেরে গত এপ্রিলে ইমরানের সরকারের পতন ঘটলে প্রধানমন্ত্রী হন মুসলিম লিগের শাহবাজ শরিফ, যিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই।
ক্ষমতা হারানো ইমরান নতুন নির্বাচনের দাবি তুলে পাকিস্তানে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’ লংমার্চের ডাক দেন। গত ২৯ অক্টোবর লাহোর থেকে শুরু হয় এই কর্মসূচি।
রাজধানী ইসলামাবাদের পথে চার দিন পর বৃহস্পতিবার পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদে সমাবেশের জন্য তৈরি হলে সেখানে হয় গুলিবর্ষণ।
সেখানে গুলিবিদ্ধ হন ইমরান খানও, তবে তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে পরে তার দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়। গুলির ঘটনায় একজন নিহতেরও খবর পাওয়া যায়। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।
এই ঘটনায় তিন ব্যক্তিকে দায়ী করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান।
তারা হলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এবং প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর শীর্ষ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ফয়সাল।
ইমরানের দল পিটিআইয়ের মহাসচিব আসাদ উমর একথা জানিয়েছেন বলে পাকিস্তানের গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
ওই প্রসঙ্গেই শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এসে প্রত্যুত্তর দেন সাদ রফিক।
দলের চেয়ারম্যানের ওপর হামলার ঘটনায় পিটিআইয়ের প্রতিক্রিয়াকে ‘উদ্বেগজনকও’ অভিহিত করেন তিনি।
ইমরানের ওপর হামলার পরপরই পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে পিটিআইয়ের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। শুক্রবার নামাজের পর দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাকও দেন তারা। সেসব বিক্ষোভে সরকারবিরোধী ব্যাপক স্লোগান চলছে বলে জানিয়েছে ডন।
ইমরানের লং মার্চে নিরাপত্তাজনিত কোনো ত্রুটি থাকলে তা পাঞ্জাব সরকারের, বলেছেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ।