ভোট দিতে গিয়ে আঙুলের ছাপ না মেলা ভোটারদের ক্ষেত্রে ইভিএমে ভোট দিতে গিয়ে ভোটারের আঙুলের ছাপ না মিললে সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তার অনুমতিতে সর্বোচ্চ ১ শতাংশ ভোট দেওয়ার সুযোগ গণপ্রতিনিধত্ব আদেশে (আরপিও) যুক্ত করবে নির্বাচন কমিশন।
সেজন্য আরপিও সংশোধন করে নতুন উপধারা যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
সোমবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এটা বলা হয় ইভিএম ব্যালট ইস্যু। দুয়েকদিনের মধ্যে এ সংশোধনী প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ের পাঠিয়ে দেবে নির্বাচন কমিশন। বর্তমানে ইভিএমের ভোটার শনাক্তে (আঙ্গুলের ছাপ না মিললে) ১ শতাংশের বিষয়টি বিশেষ পরিপত্রে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।”
ওই প্রস্তাব আইনের যুক্ত করা হলে ভোটকেন্দ্রে যদি ১ শতাংশের বেশি ভোটারের আঙুলের ছাপ না মেলে, তাহলে তারা আর ভোট দিতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা নিজের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে সর্বোচ্চ কতজন ভোটারকে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে পারবেন, সেটাও ইসি নির্দিষ্ট করে দিতে চায়।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, “বিষয়টি নিয়ে যাতে অপপ্রচার না হয়, কনফিউশন না হয়, সে কারণে আইনের কাঠামোতে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিষয়টি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিওতে) যুক্ত হচ্ছে; আইনি কাঠামোতে আনার জন্য এ প্রস্তাব।
“আমরা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের একটি সংশোধনী আগেই আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। তার সঙ্গে নতুন এই অংশটুকু যুক্ত হবে। আইন মন্ত্রণালয় বিষয়টি পর্যালোচনা করে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করবে।”
ইভিএমে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে ভোটার শনাক্তে স্মার্টকার্ড ব্যবহার বা স্মার্টকার্ডের আইডি নম্বর বা ১৩/১৭ ডিজিটের এনআইডি নম্বর অথবা আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ভোটারদের সবাই এখনও স্মার্টকার্ড না পাওয়ায় সবার দশ আঙলের ছাপও ইসির তথ্যভাণ্ডানে নেই। ফলে যাদের দুই আঙুলের ছাপ দেওয়া আছে, সেটা তথ্যভাণ্ডারের সাথে না মিললে ভোটার শনাক্তে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে নির্বাচন কমশিনার বলেন, “ইভিএমে ভোট দেওয়ার সময় অনেকের আঙুলের ছাপ মেশিনে মেলে না। বিশেষ করে বয়স্ক ও শ্রমজীবীদের অনেকে একাধিকবার চেষ্টা করেও ছাপ মেলেনি কখনও কখনও।
“বিধান অনুযায়ী, এসব ক্ষেত্রে সেই কেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার চাইলে নিজেদের আঙুলের ছাপ দিয়ে কোনো ভোটারের জন্য ব্যালট ইস্যু করতে পারেন। তবে সেই সুযোগ কেন্দ্রের এক শতাংশের বেশি ভোটারকে দেওয়া যায় না।
তিনি বলেন, “প্রিজাইডিং অফিসার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভোটার নিশ্চিত হলে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেন। এখানে প্রিজাইডিং অফিসার শুধু ভোট দেওয়ার অনুমতি দেন। ভোট ভোটার নিজেই দেন।”
ইভিএমে আঙুলের ছাপ মেলার সমস্যা দূর করতে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সব ভোটারের দশ আঙুলের ছাপ নিয়ে স্মার্ট কার্ড দেওয়ার পরিকল্পনার কথা আগেই জানিয়েছিল কমিশন।
তখন যে কোনো আঙুলের ছাপ মিললে সহজেই ভোটার শনাক্তের বিড়ম্বনা এড়ানো করা সম্ভব বলে মনে করে এই মো. আলমগীর।
“১০ আঙুলের ছাপ নেওয়া থাকলে ১ শতাংশের বিষয়টি আগামীতে আর ব্যবহার করতে হবে না। তারপরও শেষ ব্যবস্থা হিসেবে আমরা এটা রাখছি।”