টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে অবস্থানরত অনেকেই ঠাণ্ডাজ্বরের পাশাপাশি আক্রান্ত হচ্ছেন ডায়ারিয়ায়।
আক্রান্তরা ইজতেমা ময়দানের পাশে থাকা ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ময়দানের ১ নম্বর খিত্তায় অবস্থানরত গাজীপুর নগরের ভোগড়া এলাকার বাসিন্দা মাসুদ রানা বলেন, পাশের ১৩ ও ১৪ নম্বর টয়লেট ভবনের সামনে থাকা হাউসের পানি ময়লা। ময়লাগুলো অধিকাংশ সময় ভাসতে দেখা যায়।
“ময়লা এ পানি রান্নাবান্না ও খাবারের কাজে ব্যবহার করছেন ইজতেমায় আসা লোকজন। ফলে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা।”
ময়মনসিংহ থেকে আসা মোবারক হোসেন বলেন, ইজতেমা মাঠের ভেতরে জায়গা না পাওয়ায় ফুটপাতসহ রাস্তার আশেপাশে খোলা জায়গায় পলিথিন কিংবা ত্রিপল টানিয়ে লোকজন অবস্থান করছেন।
এতে শীত ও কুয়াশার কারণে তিনিসহ অনেকেই জ্বর ও ঠাণ্ডায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। ধুলোবালি কারণে অনেকে অ্যাজমাতেও ভুগছেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
ইজতেমা ময়দানে হামদর্দ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. খোরশেদ আলম জানান, এখন পর্যন্ত ইজতেমায় আসা প্রায় দুই হাজার মানুষকে তারা চিকিৎসা দিয়েছেন; তাদের অধিকাংশই ডায়রিয়া, অ্যাজমা ও জ্বরে আক্রান্ত।
টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ইজতেমায় আসা ১ হাজার ৩১৩ জন তার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
“এখন পর্যন্ত এক বিদেশিসহ ১০ জন ভর্তি রয়েছেন। আর তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।”
এ বিষয়ে জানতে গাজীপুর জনস্বাস্থ্যর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলমগীর হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার ফজরের নামাজের পর মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বিশ্ব সম্মিলনের কার্যক্রম শুরু হয়। রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষে ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি হবে দ্বিতীয় পর্ব।
এবার প্রথম পর্বের ইজতেমায় অংশ নিচ্ছেন মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা। আর দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা অংশ নেবেন দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায়।
বিশ্ব ইজতেমা শুরুর একদিন আগেই বৃহস্পতিবার ময়দান কানায়-কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। মানুষের চলাচলের কারণে সকাল থেকেই ভয়াবহ যানজটের কবলে পড়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ আশপাশের সব রাস্তা।
এবারের ইজতেমায় অন্য কয়েক বছরের তুলনায় লোকজনের সমাগম একটু বেশি। মূল ময়দানে জায়গা না পেয়ে অনেক মানুষ শীত উপেক্ষা করে ময়দানের বাইরে ফুটপাতে ও টয়লেট বিল্ডিং এর ছাদে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নিয়েছেন।