বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগের দিনেই মুখরিত হয়ে উঠেছে টঙ্গীর তুরাগ তীর।
শীত উপক্ষো করে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মুসলমানরা ইজতেমা মাঠে বানানো খিত্তায়-খিত্তায় জড়ো হচ্ছেন; এসেছেন বিদেশিরাও।
বৃহস্পতিবার ভোরে ফজরের পর তাদের জন্য হয়েছে প্রাথমিক আম বয়ান। শুক্রবার ফজরের নামাজের পর বয়ানের মধ্য দিয়ে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বিশ্ব সম্মিলনের কার্যক্রম শুরু হবে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
ইজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী আব্দুন নূর জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে প্রাথমিক আম বয়ান করেছেন ভারত থেকে আসা মাওলানা আবদুর রহমান, বয়ানের বাংলা তরজমা করেছেন মাওলানা আব্দুল মতিন।
রোববার আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত চলবে তাবলীগের ছয় উসুলের এ বয়ান। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের আলেমরা মূল বয়ান করবেন। মূল বয়ান বাংলাসহ বিভিন্ন ভাষাভাষীদের জন্য তাৎক্ষণিক তরজমা করে শোনানো হবে।
আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে রোববার ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষে ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি হবে দ্বিতীয় পর্ব।
প্রায় এক বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিশাল মাঠকে বাঁশের খুঁটির উপর চটের ছাউনি দিয়ে ইজতেমার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। বয়ান মঞ্চ করা হয়েছে ইজতেমা মাঠের পশ্চিম-উত্তরের মাঝ বরাবর।
বয়ান শোনার জন্য লাগানো হয়েছে বিশেষ ছাতা মাইক। বয়ান ও দোয়া মঞ্চ ছাড়া নামাজের মিম্বরও তৈরি করা হয়েছে আলাদাভাবে।
আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মো. মাহফুজ জানান, মহামারীর কারণে গত দুবছর বিশ্ব ইজতেমা না হওয়ায় এবার আগেভাগেই মানুষ আসছে। শুক্রবার মূল পর্ব শুরুর কথা থাকলেও তাবলীগ জামাতের অনুসারী এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বুধবার থেকেই দলে দলে ইজতেমা ময়দানে এসে অবস্থান নিচ্ছেন। লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ইজতেমা ময়দান প্রায় পূর্ণ হয়ে গেছে।
বাস, ট্রাক, ট্রেনের চড়ে, অনেকে পায়ে হেঁটে গাজীপুরের টঙ্গীতে আসছেন ইজতেমায় যোগ দিতে। রোববার আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত এ আগমন ধারা অব্যাহত থাকবে।
শুক্রবার দুপুরে এই এইজতেমা মাঠেই হবে জুমার নামাজে দেশের সর্ববৃহৎ জামাত। কাকরাইল মসজিদের মাওলানা জোবায়ের ইমামতিতে কয়েক লাখ মানুষ এই জামাতে নামাজ পড়বেন বলে ধারণা দেন মাহফুজ।
রাজধানী ঢাকা ও গাজীপুরের বিভিন্ন উপজেলা এবং আশপাশের জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ সেই জামাতে যোগ দিতে আসবেন। ইজতেমা ময়দান ছাপিয়ে কামারপাড়া, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ আশেপাশের অলি-গলিতেও কাতারবদ্ধ হয় জুমার নামাজে অংশ নিতে দেখা যাবে অনেককে।
ইজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী আব্দুন নূর জানান, পুরো মাঠকে জেলাওয়ারী আলাদা ৯১ ভাগে (খিত্তায়) ভাগ করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মানুষ থাকবেন সেসব খিত্তায়।