উন্নত জীবনের আশায় আফ্রিকা থেকে ইউরোপে পাড়ি জমাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জাহাজের হালে বসেই ১১ দিন কাটিয়েছেন নাইজেরিয়ার তিন ব্যক্তি।
সিএনএন জানিয়েছে, সাগরে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ক্যানারি দ্বীপপূঞ্জে পৌঁছালে স্প্যানিশ কোস্টগার্ড তাদের উদ্ধার করে। পরে তাদের বন্দরে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
সোমবার স্প্যানিশ কোস্টগার্ডের এক ছবিতে দেখা যায়, তেল ও রাসায়নিকের ট্যাঙ্কার অ্যালথিনি-২ পেছনে হালের উপরে বসে রয়েছেন তিনজন।
জাহাজের অবকাঠামোর নিচে থাকা ওই হালের উপরিভাগ পানি থেকে মাত্র দুই-তিন ফুট উঁচু। আর সেখানেই ওই তিন অভিবাসন প্রত্যাশী বসে ছিলেন।
জাহাজের অবস্থান শনাক্তকারী ওয়েবসাইট ‘মেরিন ট্রাফিক’ বলছে, নাইজেরিয়ার লাগোস থেকে যাত্রা শুরু করে ১১ দিন পর গ্র্যান ক্যানারিয়ার লাস পালমাসে পৌঁছায় অ্যালথিনি-২। স্পেনের মালিকানাধীন ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ আফ্রিকার অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য জনপ্রিয় প্রবেশদ্বার।
স্প্যানিশ পরিসংখ্যান বলছে, সাগরপথে ওই দ্বীপপুঞ্জ অভিমুখে অভিবাসন প্রত্যাশীদের যাত্রা এ বছরের প্রথম পাঁচ মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫১ শতাংশ বেড়েছে।
রেডক্রসের হিসাবে, গত বছর পশ্চিমা আফ্রিকা উপকূল থেকে ক্যানারি দ্বীপপূঞ্জের পথ পাড়ি দিয়েছেন ২০ হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী। তাদের মধ্যে অন্তত ১ হাজার ১০০ জন সাগরেই মারা গেছেন।
নওরেজিয়ান সংবাদমাধ্যমের বরাতে সিএনএন জানিয়েছে, ২০২০ সালে নাইজেরিয়ার চার ব্যক্তি নওরেজিয়ান ওয়েল ট্যাঙ্কারের হালের উপরের একটি খুপরিতে ১০ দিন কাটিয়েছিলেন। লাগোস থেকে ওই ট্যাঙ্কারটি ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের লাস পালমাসের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল।
একই বছর ১৪ বছর বয়সী নাইরেজিয়ার এক কিশোর স্প্যানিশ সংবাদপত্র ই-১ পেইসকে বলেছিল, তেলবাহী একটি কার্গোর হালের উপরের একটি ছোট প্রকোষ্ঠে লুকিয়ে ১৫দিন কাটিয়েছিল সে। ওই জাহাজটিও লাগোস থেকে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল।
রেডক্রস বলছে, দারিদ্র্য, সহিংস সংঘাত এবং বেকারত্ব পশ্চিম আফ্রিকার অভিবাসন প্রত্যাশীদের এভাবে ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রযাত্রায় উসকে দিচ্ছে।