ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাব কেটে যাওয়ার পর পরই আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়েছে মানুষ।
সোমবার রাত ৯টায় ঝড়টি ভোলার পাশ দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম শুরু করে। ঝড়ের তাণ্ডবে ছয় জেলায় ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
ঝড়ের আগে রাত পর্যন্ত প্রায় সাত হাজার আশ্রয়কেন্দ্রে ৬ লাখ ৩৭ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সোমবার রাত ১০টার পর থেকেই দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ জেলা-উপজেলায় বাতাসের বেগ ও বৃষ্টি কমতে থাকে। আবহাওয়া অনুকূলে আসার পর পরই লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে ছেড়ে বাড়ি যাওয়া শুরু করে বলে জানায় উপকূলীয় জেলা-উপজেলার প্রশাসন।
তবে যাদের বাড়িঘর নিম্নাঞ্চলে এবং প্লাবিত হয়েছে তাদের একটা অংশ রাতে আশ্রয়কেন্দ্রেই ছিলেন। তারা ভোর থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে ছাড়তে শুরু করেন। সকালের মধ্যে অধিকাংশ আশ্রয়কেন্দ্রই খালি হয়ে যায়।
বাগেরহাট: জেলার ৩৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) খন্দকার রিজাউল করিম মঙ্গলবার সকালে বলেন, “ঝড়-বৃষ্টি থামার পর রাতেই মানুষ বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেন। যারা ছিলেন তারা আজ সকালে বাড়ি ফিরে গেছেন। রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়েছে।”
সোমবার বিকালের পর থেকে লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে আসা শুরু করেছিল। সন্ধ্যার পর পর্যন্ত অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন।
পিরোজপুর: জেলার ২৬০টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৬০ হাজার উপকূলবাসী আশ্রয় নিয়েছিলেন।
জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুনিরা পারভীন সকালে জানান, ঝড়ের তাণ্ডব সোমবার রাতেই অনেকটা কমে গিয়েছিল। যাদের বাড়িঘর কাছাকাছি ছিল তারা রাতেই ফিরে গেছেন। বাকি যারা ছিলেন তারা ভোর থেকে সকালের মধ্যেই আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়েছেন।
এখন আবহাওয়া পরিস্থিতি ভাল। অনেক জায়গায় বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোথাও কোথাও পানি জমতে দেখা গেছে।
নোয়াখালী: জেলার ৪০১টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, “মঙ্গলবার সকাল থেকেই লোকজন বাড়ি যেতে শুরু করেছেন। এখন যেহেতু আবহাওয়া ভাল, ঝড় ও বাতাস কমে গেছে তাই তারা বাড়ি ফিরছেন।
তবে জেলায় কী পরিমাণ ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে তা এখনও নিরূপণ করতে পারেনি জেলা প্রশাসন।
বরগুনা: জেলার ৬৪২টি আশ্রয়কেন্দ্রে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন।
জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান এবং সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাওসার হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের আঘাত হানার ঘণ্টাখানেক পরেই ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টি থেমে যায়। তারপর রাত থেকেই লোকজন বাড়িমুখী হতে শুরু করে। যারা ছিলেন তারা মঙ্গলবার সকালে বাড়ি ফিরে গেছেন।