এডিআরএস বিতর্ক থেকে রেহাই পাচ্ছে না এবারের বিপিএল। মাঠের আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তে স্বচ্ছতা আনার বদলে প্রতিনিয়ত সংশয়ই বাড়াচ্ছে এটি। সবশেষ ঘটনা ফরচুন বরিশাল ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ম্যাচে। টিভি আম্পায়ারের প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্তের বিপরীতে অসহায়ত্ব প্রকাশ করলেন কুমিল্লার প্রধান কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।
সাগরিকায় শনিবার দিনের প্রথম ম্যাচে কুমিল্লার ইনিংসের ১৪তম ওভারে ইফতিখার আহমেদের লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ আউট দেওয়া হয় জাকের আলিকে। তাৎক্ষণিক রিভিউ নেন কুমিল্লার কিপার-ব্যাটসম্যান।
টিভি রিপ্লে দেখে মাঠের সিদ্ধান্তই বহাল রাখেন থার্ড আম্পায়ার। অথচ একবারও মনে হয়নি, ওই ডেলিভারির ৫০ শতাংশ বা তার বেশি অংশ স্টাম্পের লাইনে পড়েছে। ধারাভাষ্য কক্ষেও বলা হচ্ছিল, বদলে যাবে এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু তা হয়নি।
মাঠের আম্পায়ার তাৎক্ষনিকভাবে অনেক সময় ভুল করে বসেন বটে। কিন্তু বারবার রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ থাকার পরও টিভি আম্পায়ারের এমন সিদ্ধান্ত জাগিয়ে তোলে বিস্ময় ও প্রশ্ন।
আগের ম্যাচে ফিফটি করা জাকেরের এমন আউটের পর বরিশালের কাছে শেষ পর্যন্ত ১২ রানে হারে কুমিল্লা। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লার প্রধান কোচ সালাউদ্দিনের এটি প্রশ্ন হলে শুরুতে একটু এড়িয়ে যেতে চাইলেন তিনি। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
“টি-টোয়েন্টিতে আপনি যখন একটা ছন্দ পান তখন ওই অবস্থায় একটা উইকেট পড়ে গেলে দলের জন্য ভালো হয় না। (জাকেরের আউটে ব্যাটিংয়ে ছন্দপতন) হতে পারে আবার নাও হতে পারে। এটা নিয়ে তো আর (মাঠে) ফিরতে পারব না। আমরা হেরে গিয়েছি এটাই সত্য। এই অবস্থা থেকে কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারি, সেটাই বড় কথা।”
পরে অবশ্য মনের আগল অনেকটাই খুলে দিলেন তিনি।
“এডিআরএস থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো আমার মনে হয়। আম্পায়ার যেটা দিয়ে দেবে, সেটা (রেখে) দেওয়াই ভালো। এটা তো একেবারে লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করেছে, এমন না যে...। আমার কাছে মনে হয় এক-দুইটি সিদ্ধান্ত...প্রথম ম্যাচেও একটা সিদ্ধান্ত খারাপ হয়েছে, আজকেও। আমার কাছে মনে হয়েছে... জানি না! তবে এমন ডিআরএস থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো।”
টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই এডিআরএস নিয়ে সংশয়ের কথা বলেছিলেন সালাউদ্দিন। এক-দুইটি ভুল সিদ্ধান্তও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে বাধা হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছিলেন তিনি। তার দলের সঙ্গেই ঘটল এমন ঘটনা।
এর আগে রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানও বলেছিলেন, এরকম রিভিউ সিস্টেম থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো।
তৃতীয় আম্পায়ারের এই ভুল নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখানো বা প্রতিবাদের কিছু দেখছেন না কুমিল্লার কোচ। বিপিএলের সফলতম কোচের মতে, এসব করার কোনো পথ খোলা নেই।
“এই মুহূর্তে আমি আসলে কিছু বলতে পারব না। এটা নিয়ে তো বিতর্ক অনেক চলছে। আমি শুরুতেই বলেছিলাম এক-দুইটা সিদ্ধান্তে আপনি ম্যাচ হেরে যাবেন। সিদ্ধান্তগুলো যদি আরেকটু ভালো হয়, আরেকটু চিন্তা ভাবনা করে দেয় তাহলে ভালো। খালি চোখে যেটা আমরা দেখছি নট আউট, সেটা থার্ড আম্পায়ার আউট দিয়ে দিচ্ছে। কী করতে পারি? আমাদের তো কিছু করার নেই। আমরা মাঠে চিল্লাচিল্লি করি, এটা কি চান?”
“এমনিই সাসপেন্ড করে দেবে। ঠিক আছে! যেহেতু খেলা চলছে। প্রতিবাদ করেও তো লাভ নেই। আমরা লিখিত দেব বা প্রতিবাদ করব যে, সেটা করেও লাভ নেই। কোনো লাভ হবে না। আসলে কিছু করার নেই। হাত-পা বাঁধা আছে। যা হবার তাই হবে আর কী!”