Loading...
The Financial Express

আমাদের প্রধানমন্ত্রীর জীবন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে: পুলিশ কমিশনার

| Updated: December 23, 2022 20:08:17


শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নিরাপত্তা প্রস্তুতি দেখেতে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নিরাপত্তা প্রস্তুতি দেখেতে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।

আওয়ামীলীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের আগের দিন শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নিরাপত্তা প্রস্তুতি দেখেতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঐতিহাসিক এ উদ্যানে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সারাদেশের থেকে লক্ষাধিক নেতাকর্মী সম্মেলনে যোগ দেবেন।

পুলিশ কমিশনার বলেন, “ঝুঁকি বিবেচনায় সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর জীবন সবসময়ই ঝুঁকির মধ্যে থাকে, ইতোপূর্বে অনেকবার জীবননাশের চেষ্টা করা হয়েছে, আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি বেঁচে গেছেন। এজন্য আমরা তার নিরাপত্তাটাকে সবসময়ই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে থাকি।”

তিনি বলেন, নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে উদ্যান ও আশপাশে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের বিশেষ শাখা, র‌্যাবসহ সকল বাহিনী মিলে নিরাপত্তার আয়োজন সাজানো হয়েছে।

সম্মেলনস্থলে প্রবেশের প্রতিটি গেইটে থাকছে আর্চওয়ে, বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে নজরদারির ব্যবস্থা হয়েছে। ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে মঞ্চের আশপাশের এলাকায় তল্লাশি হচ্ছে। পুলিশ সদস্যরা সাদা পোশাকেও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন বলে জানান খন্দকার গোলাম ফারুক।

তিনি বলেন, “এক কথায় আমরা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা রেখেছি, যাতে আওয়ামী লীগ উৎসবমুখর পরিবেশে কাউন্সিল সম্পন্ন করতে পারে। আওয়ামী লীগের ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দসহ প্রধানমন্ত্রীর যাতে কোনো ধরনের নিরাপত্তার ত্রুটি না থাকে, সে বিষয়টাই আজকে তদারকি করতে এসেছি।”

এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, “আপনারা জানেন বিশ্বে যত বড় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আছেন, তার মধ্যে আমাদের প্রধিনমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবন সবচেয়ে বেশি রিস্কে। একাত্তরের পরাজিত শক্তিরা বারবার তার জীবননাশের চেষ্টা করেছে। অনেকগুলো প্রমাণ আপনাদের কাছে আছে, ২১ অগাস্ট, টুঙ্গিপাড়া…।

“সেগুলো সামনে রেখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনসহ সবগুলো খুঁটিনাটি বিষয় মাথায় রেখে নিরাপত্তার ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে।”

তবে দুই জঙ্গি ছিনতাই এবং দেশে নতুন জঙ্গি সংগঠনের উত্থানে সুনির্দিষ্ট কোনো ‘হুমকি’ তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন না ঢাকার পুলিশ প্রধান।

তিনি বলেন, "জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান শুরু করেছি। ইতোমধ্যে ওই জঙ্গিদের বেশ কয়েকজন সহযোগী এবং অন্য গ্রুপের বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। বাকি জঙ্গিদের নাম ঠিকানাও সংগ্রহ করতে পেরেছি। আমরা আশা করি তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পারব।”

যতবারই জঙ্গিরা মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করেছে, ততবারই তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ সক্ষম হয়েছে দাবি করে খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, “ভবিষ্যতেও সক্ষম হব। সামাজিক মাধ্যম মনিটরিং করার সিস্টেম আছে, মনিটর করা হচ্ছে। আশা করব সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়িয়েও সমাজে কোনো অস্থিরতা তৈরি করতে পারবে না।“

‘ব্যর্থতা ছিল’

র‌্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেনও শুক্রবার সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসেন সম্মেলনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখতে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি তারা দেখছেন না।

“আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে কোনো অপশক্তিই কিছু করবে পারবে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা পুরোপুরি সক্ষম।“

নির্বাচনের এক বছর আগেই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ শুরু হওয় যাওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এই র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, “রাজনীতিতে সরকারি দল থাকবে, বিরোধী দল থাকবে। এটাকে উত্তাপ বলে মনে হয় না, রাজনীতির স্বাভাবিক গতি বলে মনে করি। এটা হবেই, যেহেতু সামনে নির্বাচন। তবে এটাকে কেন্দ্র করে অন্য কোনো শক্তি কিছু করতে পারবে বলে মনে করি না।”

গত কিছু দিনের ঘটনাপ্রবাহে মানুষের মনে তৈরি হওয়া উদ্বেগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে খুরশীদ হোসেন বলেন, “মানুষের মধ্যেতো প্রতিক্রিয়া আছেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কত কথাই আসে, সবই কি সত্যি? মানুষতো ভাবতেই পারে। আমাদের চিন্তার স্বাধীনতা আছে, কথা বলার স্বাধীনতা আছে। আমি সেটা বলতেই পারি, ভাবতেই পারি। তবে এটার জন্য কোনো হুমকি আছে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না “

অবশ্য আদালত চত্বরে পুলিশের হাত থেকে দুই জঙ্গির পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় যে ব্যর্থতা ছিল, সে কথাও স্বীকার করছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক ।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা আত্মসমালোচনায় বিশ্বাস করি। আমি অবশ্যই আমার দুর্বলতা থাকলে স্বীকার করব। দুই জঙ্গি পালিয়ে গেছে, এটা আমাদের ব্যর্থতা। দুইজন জঙ্গি চলে গেছে এবং হয়ত তারা দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করেই গেছে। তাদের এখনো ধরতে পারিনি, কিন্তু আমাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছি।”

তিনি জানান, আওয়ামী লীগের সম্মেলনে নিরাপত্তা দিতে বিভিন্ন পয়েন্টে র‌্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্স, পেট্রোল পার্টি থাকবে। ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে তল্লাশি করা হবে। বম ডিসপোজাল টিম, সাদা পোশাকের সদস্যরাও সতর্ক থাকবেন মাঠে।

“এবং আমাদের কমান্ডো টিম প্রস্তুত থাকবে। অর্থাৎ, যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য এবং সম্মেলনের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য র‌্যাব ফোর্সেস সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে।

“আমরা চাই যে কোনো একটা অনুষ্ঠান যাতে সুন্দরভাবে হতে পারে। যারা আসবে, নিরাপত্তার সাথে আসবেন, নিরাপত্তার সাথে চলে যাবেন। কোনো ধরনের ঝামেলা যাতে না হতে পারে, বা বাইরে থেকে যাতে কোনো অপশক্তি এসে ঝামেলা করতে না পারে, এটা মাথায় রেখেই আমাদের নিরাপত্তা পরিকল্পনা করা।”

আরেক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব প্রধান বলেন, সম্মেলনে যারা আসবেন তারা আমন্ত্রিত, সবাইকে কার্ড দেওয়া হয়েছে। কার্ড যাচাইয়ের কাজটি করবে মূলত এসবি। আর র‌্যাবের কাজ হবে তল্লাশি করা।

Share if you like

Filter By Topic