প্রবাসী আয় দেশে আসার ধাক্কা একটু একটু কাটছে; ডিসেম্বরেও প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রয়েছে, আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে রেমিটেন্স বেড়েছে ৪ দশমিক ২৪ শতাংশ।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, অর্থবছরের ছয় মাসের হিসাবেও রেমিটেন্স ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে প্রায় ১ হাজার ৪৯ কোটি ডলারের রেমিটেন্স এসেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ের থেকে তা ২ দশমিক ৪৮ শতাংশ (২৫ কোটি ৩২ লাখ ডলার) বেশি।
আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিটেন্স এসেছিল ১ হাজার ২৪ কোটি ডলার। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
এদিকে একক মাস ডিসেম্বরে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত বছরের তুলনায় তা ৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার বা ৪ দশমিক ২৪ শতাংশ বেশি। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে রেমিটেন্স আসার পরিমাণ ছিল ১৬৩ কোটি ডলার।
হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের আগের তিন মাসের হিসাবেও তা কিছুটা বেশি। এরমধ্যে গত নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৫১ লাখ ডলারের চেয়ে পরের মাস ডিসেম্বরে বেশি এসেছে ১০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার বা ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ। নভেম্বরে রেমিটেন্সে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
রাশিয়া-ইউক্রেইনের যুদ্ধের পর বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট বাড়ায় গত বছরের প্রথম ভাগে প্রবাসী আয় কমতে শুরু করে। জুনে সেই প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক ধারায় শেষ হয়। এরপর ওঠানামার মধ্যে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে আরও কমে, যা পরের দুই মাসে আবার বাড়ে।
বৈধ উপায়ে দেশে রেমিটেন্স পাঠানোকে উৎসাহিত করতে গত জানুয়ারির প্রথম দিন থেকেই সরকার নগদ প্রণোদনার হার ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করেছিল। একই সঙ্গে অন্যান্য শর্তের কড়াকড়িও শিথিল করা হয়।
চলতি অর্থবছর থেকে একদিনে যেকোনো অঙ্কের রেমিটেন্স পাঠানোর সুযোগও আসে। কাগজপত্র জমার বাধ্যবাধকতাও রাখা হয়নি।
এছাড়া ব্যাংকিং চ্যানেলের নিজস্ব এক্সচেঞ্জ হাউজের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠাতে চার্জ তুলে দেওয়া হয়।
তবে এত চেষ্টার পরও রেমিটেন্সে কাঙ্ক্ষিত হারে না বাড়ার জন্য ‘হুন্ডি ব্যবস্থাকে’ দায়ী করেছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স বাড়াতে বাংলাদেশি মোবাইল এমএফএস (বিকাশ, রকেট, এমক্যাশ, উপায়, নগদ ইত্যাদি) অ্যাকাউন্ট খুলতে ও পরিচালনা করার সুবিধার কথা ঘোষণাও দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
সুবিধাটি চালু হলে কোনো এজেন্ট ছাড়াই তৎক্ষণাৎ রেমিটেন্স যেমন পাঠানো যাবে, তেমনি দেশে ফিরে নিজের সেই অ্যাকাউন্টের অর্থ ব্যবহার করতে পারবেন প্রবাসীরা।