বেসিক ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের মামলার বিচারে দেরিতে উষ্মা প্রকাশ করেছে উচ্চ আদালত।
মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত এক শুনানিতে হাই কোর্ট থেকে এমন মন্তব্যও আসে, জনগণের টাকা আত্মসাৎ, লুটপাট ও পাচারকারীদের গুলি করে শাস্তি দেওয়া উচিৎ।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চে বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ পাচারের মামলার আসামি মোহাম্মদ আলীর তিনটি জামিন আবেদন শুনানির জন্য উঠেছিল এদিন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবুল হোসেন; সঙ্গে ছিলেন মো. জুবায়দুর রহমান। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
শুনানিতে আইনজীবী আবুল হোসেন মামলার সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরে বলেন, পাঁচ বছর পার হয়ে গেছে। এখনও এসব মামলার তদন্তই শেষ হয়নি। দুদক এসব মামলার অভিযোগপত্র দিতে পারেনি। যে কারণে বিচারও শুরু করা যাচ্ছে না।
তখন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক বলে ওঠেন, “অর্থ পাচারকারীরা জাতির শত্রু। কেন এত বছর পার হয়ে যাওয়ার পরও এসব মামলার বিচার হবে না?”
এসময় দুদকের আইনজীবীর কাছে আদালত জানতে চান, “কেন মামলার চার্জশিট দিচ্ছেন না?”
পরপরই বিচারক বলেন, “অর্থ লুটপাট, পাচারের মামলার সামারি ট্রায়াল (দ্রুত বিচার) হওয়া উচিৎ। যারা জনগণের টাকা আত্মসাৎ করে তাদের গুলি করার শাস্তি হওয়া উচিৎ।”
এরপর আদালত জামিন আবেদনের শুনানি ২১ নভেম্বর পর্যন্ত মুলতবি রেখে এ সময়ের মধ্যে বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি সংক্রান্ত সব মামলা ও আসামির হালনাগাদ তথ্য দিতে দুদককে নির্দেশ দেয়।
পরে জুবায়দুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে বেসিক ব্যাংক সংক্রান্ত ১৫ থেকে ১৬টি মামলা। তিনটি মামলায় জামিন আবেদন করা হয়েছিল গত ২০ এপ্রিল। তখন আদালত জামিন আবেদনের শুনানি ছয় মাস মুলতবি রেখে দুদককে এই সময়ের মধ্যে মামলা তিনটির তদন্ত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছিল।
“কিন্তু দুদক প্রতিবেদন না দেওয়ায় আজ জামিন শুনানি হয়। শুনানির পর আদালত বেসিক ব্যাংক সংক্রান্ত সব মামলার হালনাগাদ জানতে চেয়েছেন। সেই সঙ্গে এসব মামলার আসামিরা কে কোথায় আছে সে বিষয়টিও জানতে চেয়েছেন।”
আগামী ২১ নভেম্বর আবেদন তিনটি শুনানির জন্য রাখা হয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী।
রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির ৫৬ মামলার সবই এখনও ঝুলে আছে।