Loading...

অনলাইনে কেনা ট্রেন-টিকেট অনলাইনেই ফেরত

| Updated: February 16, 2023 18:36:50


ফাইল ছবি (সংগৃহীত) ফাইল ছবি (সংগৃহীত)

ট্রেনের টিকেট অনলাইনে কেনার পর যাত্রা বাতিল করতে চাইলে তা অনলাইনেই ফেরত দেওয়ার সুবিধা চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

আর টিকেটের টাকা যে পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে পরিশোধ করা হয়েছিল, রিফান্ড হবে একই গেটওয়ের অ্যাকাউন্টে।

আগামী ১ মার্চ থেকে এই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে বলে বুধবার রেল ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

তিনি বলেছেন, “অনলাইনে ইস্যু করা আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট অনলাইনেই ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু হলে যাত্রীকে স্টেশনে এসে টিকেট ফেরত দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকবে না। ফলে ঘরে বসেই টিকেট ফেরত দেওয়া যাবে। এতে মানুষের ভোগান্তি কমবে।”

বর্তমানে অনলাইনে টিকেট কাটার পর সেই টিকেট ফেরত দিতে স্টেশনে যেতে হয় যাত্রীদের। এই ভোগান্তির কথা ভেবে অনেকেই আর টিকেট ফেরত দিতে চান না। তাতে আরেক যাত্রী বৈধভাবে ভ্রমণের সুযোগ হারান।

অনলাইনে টিকেট ফেরত দিতে চাইলে নিজের অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে রিফান্ড অপশনে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে। সেসব তথ্য যাচাইয়ের পর টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

এনআইডি যাচাই বাধ্যতামূলক

একইদিন থেকে কাউন্টার, ওয়েবসাইট বা অ্যাপ- তিন মাধ্যম থেকেই আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট কেনার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। ওয়েবসাইট বা অ্যাপে বর্তমানে যাদের অ্যাকাউন্ট আছে, তাদেরকে অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে এনআইডি নম্বর যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

আর যাদের নিবন্ধন নেই, তাদেরকে বৃহস্পতিবার থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মনিবন্ধন বা পাসপোর্টের মাধ্যমে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

দেশের বিভাগীয় শহরের রেলস্টেশন ও আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রা শুরুর স্টেশনে নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় যাত্রীদের সহযোগিতায় করতে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

নিবন্ধন ছাড়া ১ মার্চ থেকে কেউ আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট কাটতে পারবে না। তবে লোকাল ট্রেনের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।

টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধ এবং বিনা টিকেটে ট্রেনে ভ্রমণকারীদের চিহ্নিত করতে এনআইডি নম্বর যাচাই বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে বলে জানান রেলমন্ত্রী সুজন।

 “কাউন্টার, অনলাইন ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিকেট কিনতে ইচ্ছুক যাত্রীরা অনলাইন অথবা মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে যেকোনো সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমে খুব সহজে নিবন্ধন করতে পারবেন।”

পুরনো নিবন্ধনকারীর ক্ষেত্রে: অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে এনআইডি নম্বর ও জন্ম তারিখ লিখে ভেরিফাই বাটনে ক্লিক করতে হবে। তথ্য সঠিকভাবে দেওয়া হলে এনআইডি যাচাই সফল হবে।

নতুন নিবন্ধনকারীর ক্ষেত্রে: ওয়েবসাইট অথবা অ্যাপে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাইন আপ করা যাবে। পাশাপাশি এসএমএসের মাধ্যমেও নিবন্ধন সম্পন্ন করা যাবে। এক্ষেত্রে BR<space>NID নম্বর <space> জন্ম তারিখ লিখে পাঠাতে হবে ২৬৯৬৯ নম্বরে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী যাত্রীরা বাবা অথবা মায়ের নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে নিবন্ধন করা রেলওয়ে অ্যাকাউন্ট থেকে টিকেট কাটতে পারবে। এক্ষেত্রে টিকেটের উপরে লেখা নামের সঙ্গে যাত্রীর সম্পর্ক যাচাই করতে ভ্রমণের সময় বাধ্যতামূলকভাবে ওই শিশুকে জন্মনিবন্ধন সনদের অনুলিপি সঙ্গে রাখতে হবে।

তবে এই বয়সীরা জন্মনিবন্ধন সনদ আপলোড করার মাধ্যমে নিজের নামে অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন করতে পারবে। সেক্ষেত্রে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকেই টিকেট কাটতে পারবে।

বিদেশি নাগরিকরা পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে ও পাসপোর্টের ছবি আপলোডের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারবে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভ্রমণকালে সব ধরনের যাত্রীকে অবশ্যই নিজের এনআইডি বা জন্মনিবন্ধন সনদের অনুলিপি বা অথবা পাসপোর্ট/ছবি সংবলিত পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে।

নিবন্ধিত এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ চারটি টিকেট কাটতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ভ্রমণকালে কেবল টিকেট কাটা ব্যক্তির পরিচয়পত্র থাকলেই চলবে।

পরিচয়পত্রের সঙ্গে টিকেটের উপর মুদ্রিত যাত্রীর তথ্য না মিললে যাত্রীকে বিনা টিকেটে ভ্রমণের দায়ে অভিযুক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করা হয়।

ট্রেনে থাকবে পিওএস মেশিন

টিকেট পরীক্ষা ব্যবস্থায় ১ মার্চ থেকে বিভিন্ন আন্তঃনগর ট্রেনে প্রাথমিকভাবে ১০০টি পয়েন্ট অব সেলস বা পিওএস মেশিন ব্যবহার করা হবে।

এই যন্ত্রের মাধ্যমে আসল বা জাল টিকেট সহজেই যাচাই করা যাবে উল্লেখ করে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই যন্ত্রের মাধ্যমে বিনা টিকেটের যাত্রীদের জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে জরিমানা হিসাব করে টিকেট ইস্যু করা সম্ভব হবে। এই যন্ত্রের মাধ্যমে নগদ অর্থ বা ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে ভাড়া নেওয়া হবে।

টিকেট হস্তান্তর হয়েছে কি না অথবা বিনা টিকিটের যাত্রী কি না তা সহজেই যন্ত্রটির মাধ্যমে টিটিই বা ভ্রাম্যমাণ রেল টিকেট পরীক্ষক যাচাই করতে পারবেন। যন্ত্রটিতে জিপিএস থাকায় টিটিই বা সংশ্লিষ্টদের কর্মদক্ষতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে টিকেটিং ব্যবস্থায় এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।

সংবাদ সম্মেলনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ন কবির, রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী উপস্থিত ছিলেন।

Share if you like

Filter By Topic