Loading...
The Financial Express

’ভাষা আন্দোলনের সত্তর বছর পরও আদালতের সর্বস্তরে বাংলার প্রচলন না হওয়া লজ্জাজনক’

হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের মুক্ত আলোচনায় বক্তারা


| Updated: February 20, 2023 18:18:28


’ভাষা আন্দোলনের সত্তর বছর পরও আদালতের সর্বস্তরে বাংলার প্রচলন না হওয়া লজ্জাজনক’

স্বেচ্ছাসেবী মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন’-এর উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, ভাষা আন্দোলনের সত্তর বছর পার হয়ে গেলেও এখনো আদালতের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন করা যায় নি, এটা লজ্জাজনক।

বক্তারা বলেন, আইনের ভাষা কঠিন করা হয় সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করার জন্য। আমাদের মাঝে এখনো ‘কলোনিয়াল’ মানসিকতা রয়েছে। সর্বস্তরে বাংলার বিষয়েও প্রতিকূল পরিবেশ রয়েছে। আদালতের ভাষা বাংলা করা গেলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে। আর খেয়াল রাখতে হবে সরকারি নির্দেশনাগুলো যেনো দূর্বোধ্য করা না হয়।

তারা বলেন, আমাদের দেশে যারা কুলীনতা বজায় রাখতে চান তারা আদালতের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন চান না। ভাষা আন্দোলনের সত্তর বছর পরও বাংলা এখনো আইনের ভাষা হয়নি, এটা লজ্জাজনক। সবকিছুই পরিবর্তন করা যায় যদি সদিচ্ছা থাকে।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে ‘আদালতের সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলন’ শীর্ষক এ মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মোঃ আবদুল মতিন, শিক্ষাবিদ ও দার্শনিক অধ্যাপক ডঃ আনিসুজ্জামান, সাবেক জেলা জজ মাসদার হোসেন।

হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন- এর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নাহিদ ফেরদৌসী।

অন্যান্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ ডঃ মোঃ শাহজাহান, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা, দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের প্ল্যানিং এডিটর আসজাদুল কিবরিয়া, বিশিষ্ট কলামিস্ট ও লেখক ফারুক ওয়াসিফ, বিশিষ্ট লেখক ও প্রাবন্ধিক ফিরোজ আহমেদ এবং বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক রাখাল রাহা প্রমূখ।

মুক্ত আলোচনার বিশেষ আলোচক সাবেক বিচারপতি মোঃ আবদুল মতিন বলেন, “চাইলে রাতারাতিই আদালতের সর্বস্তরে বাংলার প্রচলন সম্ভব। এটা জনগণকে ভয়াবহ ভাবেই চাইতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ম্যানিফেস্টোতেও বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।“

অধ্যাপক ডঃ আনিসুজ্জামান বলেন, “ইংরেজী ভাষার বাস্তবতাকেও মাথায় রাখতে হবে। আর আদালতের ভাষা কতটুকু সহজবোধ্য করা যায় সেটাও ভেবে দেখার বিষয়। সাবেক জেলা জজ মাসদার হোসেন বলেন- সুপ্রীম কোর্ট এ নিয়ে একটা রুল দিলেই তা মানতে বাধ্য সকল আদালত। সরকার এটা করার জন্য অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে পারে।”

সভাপতির বক্তব্যে হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, “ভাষা আন্দোলনের সত্তর বছর পর আজকে আমরা এ দাবী নিয়ে দাঁড়িয়েছি, এ দায় আমাদের পূর্বপুরুষদের এবং সমকালীনদের। অথচ স্বাধীনতা যুদ্ধের সূতিকারগার-ই ছিল এই ভাষা আন্দোলন। আমরা দাঁড়িয়েছি, কতটা পারবো তা ভবিষ্যত-ই বলে দেবে।”

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বেচ্ছাসেবী মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনজনসাধারণের মাঝে সার্বজনীন মানবাধিকারের বার্তা পৌঁছে দিতে মানবাধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত কর্মশালা, সেমিনার, মতবিনিময় সভা, মানববন্ধন ও গোলটেবিল বৈঠক আয়োজনের মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টির প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।

Share if you like

Filter By Topic