ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্র যত বেশি অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করবে, প্রতিশোধ নিতে রাশিয়া তত বেশি আক্রমণ করবে। এমনকি সেটা পরমাণু যুদ্ধ পর্যন্ত গড়াতে পারে বলে সতর্ক করেছেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানায়, সাংবাদিক নাদানা ফ্রাইদ্রিখনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মেদভেদেভ বলেন, ‘‘ইউক্রেইনের যে অঞ্চলগুলো কিইভের অধীনে আছে তার পুরোটাই জ্বলবে।”
রাশিয়া গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইনে আক্রমণের পর যে কয়েকজন রুশপন্থি যুদ্ধের পক্ষে ক্রমাগত প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন, রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপ প্রধান মেদভেদেভ তার অন্যতম।
ফ্রাইদ্রিখন যখন তাকে প্রশ্ন করেন, দীর্ঘপাল্লার অস্ত্র রাশিয়াকে কিইভের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বাধ্য করতে কিনা।
জবাবে মেদভেদেভ বলেন, ‘‘ফলাফল হবে ঠিক তার উল্টো।
“নৈতিকভাবে উন্মাদরাই কেবল এ ধরণের তর্ক করতে পারে। হোয়াইট হাউজ ও ক্যাপিটলে এই ধরণের মানুষ যথেষ্ট পরিমাণে আছে।”
ইউক্রেইনকে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া দুই হাজার ১৭৫ কোটি মার্কিন ডলারের সামরিক সহায়তা প্যাকেজের আওতায় নতুন করে অত্যাধুনিক কিছু রকেট দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে পেন্টাগন।
শুক্রবারের ওই ঘোষণায় বলা হয়, ওই অস্ত্রগুলো ইউক্রেইনের হামলার পরিসীমা দ্বিগুণ করবে।
আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসণের এক বছর পূর্ণ হবে। এই এক বছরের যুদ্ধে রাশিয়া উল্লেখ করার মত কোনো অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি। বরং গত সাত/আট ধরে সেখানে রুশ বাহিনী উল্টো চাপের মুখে আছে। তাদের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে পরাজয় দেখতে হয়েছে।
এবারের যুদ্ধে ইউক্রেইনের যে চারটি অঞ্চল রাশিয়া নিজেদের সঙ্গে সংযুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিল সেগুলোর কোনোটির উপর তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এখন আর নেই।
রাশিয়া বরাবরই তাদের এই আক্রমণকে পশ্চিমাদের আগ্রাসণের বিরুদ্ধে তাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই বলেছে।
মেদভেদেভ এর আগেও কয়েকবার বলেছেন, রাশিয়া নিজেকে এবং নিজেদের জনগণকে রক্ষা করতে তাদের হাতে থাকা সম্ভাব্য সব ধরণের উপায় ব্যবহার করবে। এমনকি প্রয়োজনে দেশটির পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহারও করতে পারে।
২০১৪ সালের যুদ্ধে ইউক্রেইনের কাছ থেকে ক্রিমেয়া দখল করে রাশিয়া। এবার ইউক্রেইন রুশ বাহিনীকে তাদের দেশ থেকে সম্পূর্ণ রূপে হটিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ক্রিমেয়া পুনরুদ্ধারের প্রতিজ্ঞাও করেছে।