এক যুগ পর বিশ্বকাপে ফিরে রাশিয়া আসরটা পোল্যান্ডের জন্য কাটে খুব বাজে। গ্রুপ পর্বেই শেষ হয়ে যায় তাদের অভিযান। পরের ধাপে যেতে আসছে কাতার বিশ্বকাপেও তাদের দিতে হবে বড় পরীক্ষা। সেই পথে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ দেখছেন পোল্যান্ডের অধিনায়ক ও তারকা স্ট্রাইকার রবের্ত লেভানদোভস্কি। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
চার বছর আগের আসরে তিন ম্যাচের একটি জিতে গ্রুপে সবার নিচে থেকে শেষ করেছিল পোল্যান্ড। সেনেগাল ও কলম্বিয়ার কাছে হারের পর জাপানের বিপক্ষে জিতেছিল তারা।
সেটিই ছিল লেভানদোভস্কির প্রথম বিশ্বকাপ। সেবার বাছাইপর্বে ১০ ম্যাচে ইউরোপ অঞ্চলের সর্বোচ্চ ১৬ গোল করলেও মূল আসরে জালের দেখা পাননি তিনি।
ফিফার ওয়েবসাইটে শনিবার দেওয়া সাক্ষাৎকারে ৩৪ বছর বয়সী লেভানদোভস্কি বলেন, রাশিয়া আসরের ব্যর্থতা এখনও পোড়ায় তাকে।
“ওটা ছিল আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় হতাশা। গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ার কারণেই শুধু নয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারিনি। আমি কোনো সুযোগই পাইনি, একটি গোলও করতে পারিনি এবং বিষয়টি এখনও কষ্ট দেয় আমাকে।”
কাতার বিশ্বকাপে ‘সি’ গ্রুপে পোল্যান্ডের তিন প্রতিপক্ষ আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো ও সৌদি আরব।
আর্জেন্টিনা এবারের আসরের ফেভারিটদের একটি। রেকর্ড ৩৫ ম্যাচ অপরাজিত আছে দুবারের বিশ্বকাপ জয়ীরা। লেভানদোভস্কি তাই ভালো করেই বুঝতে পারছেন, মেসিদের বিপক্ষে কতটা চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে তাদের জন্য।
“আর্জেন্টিনাকে নিয়ে খুব বেশি কিছু বলার নেই। তারা বড় দল, আমার মতে টুর্নামেন্ট জেতার জন্য সবচেয়ে ফেভারিটদের একটি। লিও মেসির মতো একজন কিংবদন্তি তাদের নেতা। কোনো সন্দেহ নেই যে তাদের বিপক্ষে আমাদের সবচেয়ে কঠিন ম্যাচ হবে। এই ধরনের প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া দুর্দান্ত একটি দলের বিপক্ষে খেলা দারুণ হবে।”
গ্রুপের অন্য দুই প্রতিপক্ষকেও খাটো করে দেখছেন না চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার হয়ে দারুণ ছন্দে থাকা স্ট্রাইকার।
“মেক্সিকো কঠিন প্রতিপক্ষ, শেষ বাঁশি বাজার আগ পর্যন্ত তারা লড়াই করে এবং কখনও হাল ছাড়ে না। তাদের দলে তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার সমন্বয় রয়েছে। মেক্সিকানরা জানে কিভাবে বড় টুর্নামেন্টে খেলতে হয়, আর আমরা সেটা ভালো করেই জানি। ম্যাচটি আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে।”
সৌদি আরব যেকোনো সময় চমকে দিতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
“সৌদি আরবের চমকে দেওয়ার সামর্থ্য আছে। আমরা জানি, তাদের রক্ষণ জমাট এবং ম্যাচে পরিস্থিতি অনুযায়ী কৌশলগত ফুটবল খেলতে পারে। তারা দ্রুত আক্রমণে উঠতে সক্ষম...তাই বিষয়টা আমাদের ওপর নির্ভর করবে যে আমরা তাদের বিপক্ষে কিভাবে খেলব।”
“আমরা ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে গ্রুপ পর্বের লড়াইয়ে নামব। প্রতিটি ম্যাচ আমরা হাসি মুখে খেলব, যদিও আমরা জানি যে খুব কঠিন পরীক্ষা হবে।”
গত দুটি বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব মিলিয়ে ১৯ ম্যাচে ২৫ গোল করেছেন লেভানদোভস্কি। এর মধ্যে এই বিশ্বকাপের বাছাইয়ে ৯ ম্যাচে তার গোল ৯টি। এত গোল করে দলকে বিশ্বকাপে তুলতে পেরে খুশি গত দুবারের ফিফা বর্ষসেরা এই ফুটবলার।
“বাছাইয়ে এত গোল করতে পেরে আমি অবশ্যই খুশি, বিশেষ করে আমরা বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছি বলে। আমি জানি, আমার প্রতিটি গোল দলকে জেতাতে সাহায্য করতে পারে, তাই আমি এত বেশি গোল করতে পেরে সত্যিই খুব খুশি ও গর্বিত।”