সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘উসকানিমূলক’পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নতুন মামলায় গ্রেপ্তার সুনামগঞ্জের ঝুমন দাসকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছে হাই কোর্ট।
ফেইসবুকে ধর্মীয় বিদ্বেষ বা উসকানিমূলক কোনো মন্তব্য করবেন না– এমন শর্তে তাকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়েছে বলে তার আইনজীবী তাপস কান্তি বল জানান।
তার জামিন আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেয়। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
পরে আইনজীবী তাপস কান্তি বল বলেন, “সুনামগঞ্জের আদালতে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ঝুমন দাসের জামিন নামঞ্জুর করলে পরে হাই কোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত শর্তসাপেক্ষে তাকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছে।”
ঝুমন দাসের বাড়ি সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে। শাল্লা থানার পুলিশ তাকে গত ৩০ অগাস্ট দুপুরে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে শাল্লা থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমনুর রহমান তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন।
ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পরদিন তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। ঝুমন দাস সেদিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
ঝুমন দাসের বিরুদ্ধে একই থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গত বছরের ২২ মার্চ আরেকটি মামলা করেছিল পুলিশ। ওই মামলায় তিনি প্রায় ছয় মাস কারাগারে ছিলেন। মামলাটি এখন সিলেটের সাইবার ট্রাইব্যুনালে রয়েছে।
হেফাজতে ইসলামের তৎকালীন কেন্দ্রীয় নেতা মামুনুল হককে নিয়ে ফেইসবুকে ঝুমন মন্তব্য করার পর গত বছরের ১৭ মার্চ সকালে নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা হয়। হামলার ঘটনার আগে ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা শহরে এক সমাবেশে মামুনুল হক বক্তব্য দেন।
পরে মামুনুল হককে নিয়ে ঝুমন দাস ফেসবুকে মন্তব্য করলে গ্রামে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর ১৬ মার্চ রাতে পুলিশ তাকে আটক করে।
ওই ঘটনায় শাল্লা থানায় মামলা হয় তিনটি। এর মধ্যে দুটি হয় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায়। অন্য মামলাটি পুলিশ করে ঝুমন দাসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে।
ওই মামলায় তিনি প্রায় ছয় মাস জেল খাটার পর হাই কোর্ট থেকে এক বছরের জন্য ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর জামিন পান।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নতুন মামলায় গত ৪ সেপ্টেম্বর আদালতে জামিন চেয়েছিলেন ঝুমন। সেখানে জামিন না হওয়ায় গত সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আবার জামিনের আবেদন করা হয়।
সেদিনও তার জামিন আবেদন নাকচ হয়ে যায়। এরপর তার জামিনের জন হাই কোর্টে আসেন তার আইনজীবীরা।