সুষ্ঠু রাজনীতিতে আপত্তি নাই, কিন্তু সাধারণ মানুষের গায়ে হাত দিলে রক্ষা নাই: প্রধানমন্ত্রী


FE Team | Published: November 06, 2022 19:39:37 | Updated: November 07, 2022 16:55:24


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘অগ্নি সন্ত্রাসের আর্তনাদ: বিএনপি-জামাতের অগ্নি সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের খন্ডচিত্র’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অগ্নি সন্ত্রাসের শিকার ও ভুক্তভোগীদের কথা শোনেন ও সমবেদনা জানান। ছবি: পিআইডি।

বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস এবং বর্বরতার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সেই বর্বরতার মর্মন্তুদ ঘটনা দেশবাসী যেন ভুলে না যায় এবং সেই দিন যেন ফিরে না আসে, সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে রবিবার আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘অগ্নি সন্ত্রাসের আর্তনাদ: বিএনপি-জামাতের অগ্নি সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের খন্ডচিত্রশীর্ষক অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এরকম ঘটনা যেন আর না ঘটে।’ খবর বাসসের।

 à¦¶à§‡à¦– হাসিনা বলেন, ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে তথাকথিত আন্দোলনের নামে দেশব্যাপী বিএনপি-জামায়াত চক্রের নৈরাজ্য ও সহিংসতায় ৫শর বেশি মানুষ নিহত এবং প্রায় ৩ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি আহত হয়।

 à¦¸à§‡à¦¸à¦®à§Ÿ আগুনসন্ত্রাসের শিকার হয়ে স্বামী হারা স্ত্রী, সন্তানহারা পিতা, পিতাহারা পুত্র-কন্যা, আগুনে ঝলসানো শরীর নিয়ে ভুক্তভোগীদের কয়েকজন, সেসব ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণকারী, শরীরে বীভৎস ক্ষত চিহ্ন নিয়ে সমাজ-সংসারে অপাংক্তেয় হয়ে যাওয়া লোকজনই এদিন এসেছিলেন জাতীয় জাদুঘরে, তাদের বক্তব্য তুলে ধরতে।

 à¦ªà§à¦°à¦§à¦¾à¦¨à¦®à¦¨à§à¦¤à§à¦°à§€ বলেন, ‘আমার শুধু একটাই আহ্বান থাকবে দেশবাসীর কাছে রাজনীতি করতে চাইলে সুষ্ঠু রাজনীতি করুন, আমার আপত্তি নাই। কিন্তু আমার এই সাধারণ মানুষের গায়ে কেউ হাত দিলে তাদের রক্ষা নাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি শুধু দেশবাসীকে এটুকুই বলবো ঐ দুঃসময়ের কথা যেন কেউ ভুলে না যায়।

তিনি বলেন, প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছিল অস্ত্রের ঝনঝনানি, মেধাবি ছাত্রদের হাতে অর্থ, অস্ত্র, মাদক তুলে দিয়ে বিপথে ঠেলে দেয়া হয়েছে। ’৭৫ এর পর এই ছিল বাংলাদেশ।

  আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আসার পর কেবল তাঁরা স্থিতিশীলতা আনতে পেরেছিলেন। সেসময় শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করা, উৎপাদন বৃদ্ধি করা তথা দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি তাঁরা করতে পেরেছিলেন এবং যতটুকু সম্ভব তাঁর সরকার মানব কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, এরমধ্যে আগুনসন্ত্রাসের মত ঘটনা, চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন।

আগুন সন্ত্রাসীদের বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এদের বিচার হচ্ছে, হবে এবং মহান আল্লাহর তরফ থেকেই হবে। হয়তো প্রত্যেক কেসেই (মামলা) বিচার চলছে না। কিন্তু, যারা এ ধরনের অগ্নিসন্ত্রাসে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে, অনেকের বিচারের কাজ চলছে অনেকে শাস্তিও পাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও পাবে।

  শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা হুকুমদাত্রী বা হুকুমদাতা তাদের কথাও আপনারা ভেবে দেখেন। যারা এই ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ করতে পারে আর মানুষকে কষ্ট দিতে পারে, আমি জানি না মানুষ কিভাবে আবার এদের পাশে দাঁড়ায়, এদের সমর্থন করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের ঘটনা যেন কেউ ভবিষ্যতে আর ঘটাতে না পারে। কেননা, দল মত নির্বিশেষে এদেশের প্রতিটি মানুষেরই স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার রয়েছে। স্বাধীনভাবে নিজ নিজ জীবন-জীবিকার অধিকার রয়েছে। প্রত্যেকের সুন্দরভাবে বাঁচার অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার সংরক্ষণ করাটাই আমাদের দায়িত্ব। আর সেটাই চেষ্টা করে যাচ্ছি।

 à¦¶à§‡à¦– হাসিনা নিজেকে একজন স্বজনহারা মনে করিয়ে দিয়ে ভুক্তভোগীদের পাশে গিয়ে দাঁড়ান এবং তাদের জড়িয়ে ধরেন, বুকে টেনে নেন। ভূক্তভোগীদের মর্মন্তুদ বর্ননা ও কান্না প্রধানমন্ত্রীসহ অনুষ্ঠানে আগতদের স্পর্শ করে, আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী নিজেও। প্রধানমন্ত্রী তাদের কাছে টেনে নিয়ে সবরকম সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ব্যাপারেও আস্বস্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা সহ্য করা যায় না, এটা কোন মানুষ সহ্য করতে পারবে না। কাজেই, আমি দেশবাসীকে বলবো এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে।

অনুষ্ঠানে ‘আগুন সন্ত্রাসের দুর্ভোগ: বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি-সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের আংশিক দৃশ্যপটশীর্ষক একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মন্ত্রী পরিষদ সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যগণ, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং কূটনৈতিক মিশনের সদস্যবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ।

 à¦¶à§‡à¦– হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যখন দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে এবং ক্ষমতা গ্রহণের পর জনগণের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি নিশ্চিত প্রচেষ্ঠা নিয়েছে তখনই বিএনপি তথাকথিত আন্দোলনের নামে অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালায় এবং একাত্তরের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মতো ধর্ষণসহ অমানবিক নির্যাতন চালায়।

তারা (বিএনপি-জামায়াত জোট) ২০১৩-১৫ সালে (আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যূত করার আন্দোলনের নামে) এগুলো বারবার করেছে। বাসে আগুন দিয়ে কিভাবে জীবন্ত মানুষ হত্যা করা হয়। এটা কি আন্দোলন? আমরা এটি আগে কখনও দেখিনি, তিনি বলেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও যোগ করেন যে তিনি শৈশব থেকেই আন্দোলন শুরু করেছেন এবং আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান, জিয়াউর রহমানের মতো সমস্ত সামরিক স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন।

কিন্তু, আমরা অগ্নিসংযোগ ও পেট্রোল বোমা হামলা করে মানুষ হত্যা করে আন্দোলন করার কথা স্বপ্নেও ভাবিনি। কারণ, মানুষ দিয়েইতো আন্দোলন। আর বিএনপি অবরোধ-হরতালের ঘোষণা দিয়ে মানুষ হত্যা শুরু করে দেয়,’ বলেন তিনি।

Share if you like