সিসি ক্যামেরায় ভোটারের গোপনীয়তা নষ্ট হয়নি: ইসি


FE Team | Published: October 23, 2022 17:34:36 | Updated: October 23, 2022 19:47:00


কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে বসানো হয় এমন সিসি ক্যামেরা। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

ভোটকক্ষে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা রাখার কারণে ভোটারের গোপনীয়তা ‘কোনোভাবেই নষ্ট হয়নি’ বলে দাবি করেছে নির্বাচন কমিশন।

এর ব্যাখ্যায় কমিশন জানিয়েছে, ভোট দেওয়ার সময় বুথে ভোটারের সাথে অন্য কেউ প্রবেশ করল কি না শুধু সেটি ধরা পড়ে ক্যামেরায়, কিন্তু ভোটার কাকে ভোট দিচ্ছেন, সেটি দেখার কোনো সুযোগ নেই।

‘ভোট কেন্দ্রের গোপন কক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপনে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন হচ্ছে’- গণমাধ্যমে আসা অনেকের এমন বক্তব্যকে ‘বিভ্রান্তিকর’ হিসেবে বর্ণনা করেছে ইসি।

নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে রোববার কমিশনের এই অবস্থান তুলে ধরা হয়। à¦–বর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

সেখানে বলা হয়, “প্রতিটি ভোটারের ভোট প্রদানের গোপনীয়তা রক্ষায় আইন অনুযায়ী সব ব্যবস্থাই নেয় ইসি।“

সম্প্রতি গাইবান্ধা উপ-নির্বাচনে অর্ধশতাধিক ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক অনিয়মের দৃশ্য ঢাকায় বসে সিসিটিভিতে দেখে ভোট বন্ধ করে দেয় নির্বাচন কমিশন। বিষয়টি নানামুখি আলোচনার জন্ম দেয়।

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সে সময় বলেন, ভোট কেন্দ্রের গোপন বুথে সিসি ক্যামেরা “ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন বলে আইনজ্ঞরা অভিমত দিয়েছেন।“

এই প্রেক্ষাপটে কমিশনের ব্যাখ্যায় বলা হয়, গোপন কক্ষে ভোটার কাকে ভোট দিলেন তা দেখার কোনো সুযোগ সিসিটিভিতে নেই।

“গাইবান্ধা-৫ শূন্য আসনের নির্বাচনে ভোটকক্ষে ভোট প্রদানের সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিং এর জন্য ইসি ভোটকক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছিল। গোপন কক্ষে ভোটার কাকে ভোট দিলেন তা দেখার কোনো সুযোগ নেই।

“তবে গোপনকক্ষে ভোটারের সাথে কেউ প্রবেশ করল কি না বা ভোটার ছাড়া অন্য কেউ প্রবেশ করল কি না, একই সাথে একাধিক ব্যক্তি প্রবেশ করল কিনা, ভোট প্রদানের সময় কেউ উঁকি দিয়ে দেখে কিনা বা পাশে দাঁড়িয়ে কোনো নির্দেশ প্রদান করল কিনা তা দেখা যায়।“

নির্বাচনী আইন থেকে উদ্ধৃত করে কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৩১(৭) ধারা অনুযায়ী ভোটার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বা অন্যভাবে এরূপ অক্ষম হলে তিনি কোনো সঙ্গীর সাহায্য ছাড়া ভোট প্রদান করতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে প্রিজাইডিং অফিসার ওই ভোটারের পছন্দমত ও বিশ্বস্ত ব্যক্তিকে তার ভোট দিতে সাহায্য করার জন্য গোপন কক্ষে নিতে পারবেন।

“তার সাথে কোনভাবেই কোনো ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা, এজেন্ট বা অন্য কেউ গোপন কক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন না। অর্থাৎ, বিষয়টি খুবই স্পষ্ট যে ভোটকক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপনে কোনোক্রমেই ভোট প্রদানের গোপনীয়তা নষ্ট হয়নি।”

চলতি বছরে দায়িত্ব নেওয়ার পর সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে বর্তমান কমিশন ইভিএমে কুমিল্লা সিটি নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের বেশ কিছু নির্বাচন করেছে। গাইবান্ধার পাশাপাশি জেলা পরিষদ নির্বাচনেও সব কেন্দ্রে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে।

কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ভোটকক্ষের গোপন বুথে সিসি ক্যামেরা স্থাপন নিয়ে কারও কারও বক্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। প্রচারিত বক্তব্যমতে ভোটকক্ষের গোপন বুথে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে কে কাকে ভোট দিচ্ছে তা দেখা মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন। গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন সেই কাজটি করে নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করেছে।

“এ ধরনের বক্তব্য মোটেও সঠিক নয় এবং বিভ্রান্তিকর।”

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটদানের পদ্ধতি শেখাতে প্রচার চালানোর কথা তুলে ধরে ইসি বলেছে “একজন ভোটারকে ভোট দেওয়ার জন্য গোপনকক্ষে প্রবেশের পূর্বেই সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তারা ‘ডামি’ ব্যালট ইউনিটে দেখিয়ে দেন কীভাবে ভোট দিতে হবে। কাজেই ভোট কীভাবে দিতে হবে এটা দেখানোর জন্য ভোটারের সাথে গোপনকক্ষে অন্য কারো প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই।“

এছাড়া সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে ব্যাঘাত ঘটে– এমন কোনো ধরনের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য না দিয়ে ইসিকে সহযোগিতা করারও অনুরোধ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

Share if you like