ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার পর শূন্যরেখার ক্যাম্প থেকে পালিয়ে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে আশ্রয় নেওয়া আরও ২৭৩ জনকে ট্রানজিট ক্যাম্পে আনা হয়েছে।
কক্সবাজারের শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী জানান, তুমব্রুতে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দ্বিতীয় দিন সোমবার আরও ৫৩ পরিবারের ২৭৩ জনকে উখিয়ার কুতুপালং সংলগ্ন ট্রানজিট ক্যাম্পে আনা হয়েছে।
রোববার দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে রোহিঙ্গাদের সরানোর কার্যক্রম শুরু হয়। দুই হাজার ৯৭০ জনের মধ্যে প্রথম দফায় ৩৫টি পরিবারের ১৮৪ জন রোহিঙ্গাকে ট্রানজিট ক্যাম্পে আনা হয়। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
দুইদিনে ৮৮ পরিবারের ৪৫৭ জন রোহিঙ্গাকে সরিয়ে নেওয়া হলো জানিয়ে কমিশনার বলেন, “প্রথমদিন আনা ১৮৪ জনে রোহিঙ্গার মধ্যে অধিকাংশরই আগে থেকে বিভিন্ন ক্যাম্পের বাসিন্দা হিসেবে নিবন্ধন ছিল। তাদের (নিবন্ধিত) স্ব স্ব ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
“আর যারা অনিবন্ধিত তাদেরও নতুন করে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ করে ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে। "
দ্বিতীয় দিনে আনা ২৭৩ জন রোহিঙ্গাকেও একই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ক্যাম্পে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান মিজানুর।
গত ১৮ জানুয়ারি তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়া শূন্যরেখা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারের জেরে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানাইজেশন (আরএসও) এর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে এক রোহিঙ্গা নিহত এবং শিশুসহ দুইজন আহত হয়। পরে সংঘাতের জেরে আগুন লাগানোর ঘটনায় ক্যাম্পটির সবগুলো বসতঘর পুড়ে যায়।
এ ঘটনায় ক্যাম্পটির আতঙ্কিত কিছু অংশ রোহিঙ্গা মিয়ানমারের অভ্যন্তরে এবং আরেকটি অংশ সীমান্তের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রুতে আশ্রয় নেয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তুমব্রুতে আশ্রয় নিয়েছিল দুই হাজার ৯৭০ জন রোহিঙ্গা। তাদের দুই-তৃতীয়াংশ উখিয়া-টেকনাফের কোনো না কোনো ক্যাম্পের নিবন্ধিত বাসিন্দা হলেও অন্যরা শূন্যরেখার অনিবন্ধিত বাসিন্দা।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয় জানায়, তুমব্রুতে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে গঠিত জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাদের সরানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে৷
তবে এসব রোহিঙ্গার মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে অপরাধে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যাবে- তাদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আইনগত ব্যবস্থা নেবে বলে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর জানিয়েছেন।