ফরাসী ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের হয়ে ফ্রি কিকে একটি গোল করলেন লিওনেল মেসি। শনিবার রাতে নিসের বিপক্ষে এই গোলটি পিএসজির জার্সি গায়ে মেসির প্রথম ফ্রি কিক গোল। খবর বিবিসি বাংলার।
কিছুদিন আগে জ্যামাইকার বিপক্ষেও মেসি ফ্রি কিক থেকে একটি গোল করেছেন আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে।
মেসি এখন বিশ্বের সেরা ফ্রি কিক টেকারদের একজন।
দীর্ঘদিন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সাথে ফ্রিকিক গোলের সংখ্যায় প্রতিযোগিতা ছিল। কিন্তু গত পাঁচ বছরে ফ্রি কিক গোলে রোনালদোকে ছাড়িয়ে গেছেন মেসি।
দুই হাজার এগারো সাল পর্যন্ত রোনালদোর ফ্রিকিক গোল সংখ্যা ছিল ৩০টি, বিপরীতে মেসির ছিল ৪টি।
সেখান থেকে মেসির এখন ৬০টি এবং রোনালদোর ৫৮টি।
সাত বার বর্ষসেরা ফুটবলারের খেতাব জয়ী মেসি এখন পর্যন্ত ফ্রি কিক থেকে পেশাদার ফুটবলে ৬০টি গোল করেছেন।
যদি ২০১৭-১৮ মৌসুম থেকে ধরা হয়, মেসির ধারেকাছেও কেউ নেই ইউরোপে।
ইউরোপের সেরা পাঁচ ক্লাবের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত পাঁচ মৌসুমে মেসি ২১টি ফ্রি কিক গোল করেছেন।
দ্বিতীয় স্থানে আছেন জেমস ওয়ার্ড প্রাউজ- যিনি ১৩টি ফ্রি কিক গোল করেছেন।
এই সময়ে মেসি ১৯৬টি শট নিয়েছেন ফ্রি কিক থেকে, এর মধ্যে ৫৪টি শটই টার্গেটে ছিল, যার মধ্যে ২১টি গোল হয়েছে।
এই তথ্য দিচ্ছে ফুটবল পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট স্কোয়াকা।
গত আট দিনেই মেসি ছয়টি গোল করেছেন।
এবং পরপর দুই ম্যাচে তিনি ফ্রি কিক গোল দিলেন।
আধুনিক ফুটবলে যেসব খেলোয়াড়ের ফ্রি কিকে গোলের সংখ্যা নথিতে পাওয়া যায় তাদের মধ্যে ৬০টি ফ্রি কিক গোল নিয়ে মেসি আছেন চার নম্বরে।
ব্রাজিলের জুনিনিও ৭৭টি ফ্রি কিক গোল করেছেন, ৬৬টি গোল করেছেন রোনালদিনিও, ইংল্যান্ডের ডেভিড বেকহ্যামের ফ্রি কিক গোল ৬৫টি।
সম্প্রতি মেসি আছেন দুর্দান্ত ফর্মে।
বিশেষত পিএসজির জার্সি গায়ে তিনি নিজেকে খুঁজে পাচ্ছেন, প্রথম মৌসুম ঠিক স্বভাবসুলভ খেলতে না পারলেও নতুন মৌসুমে ৯ ম্যাচে ৫টি গোল করেছেন, ৭টি গোলে প্রত্যক্ষ সহায়তা করেছেন মেসি।
লিওনেল মেসি আর্জেন্টিনাকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন
আর্জেন্টিনার অধিনায়ক মেসিকে কেন্দ্র করেই বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার স্বপ্ন দেখছে দলটি।
গত বছর কোপা আমেরিকায় জয়ের পর এই আশাবাদ আরও দৃঢ় হয়েছিল।
আর চলতি বছর লিওনেল মেসির ফর্ম আর্জেন্টিনার সমর্থকদের আরও আশাবাদী করে তুলছে।
বিশেষত আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে সম্প্রতি আমেরিকা সফরে লিওনেল মেসি ছিলেন উজ্জ্বল।
আর্জেন্টিনা এখন টানা ৩৫ ম্যাচে অপরাজিত।
এর আগে রেকর্ড ৩৭ ম্যাচে অপরাজিত ছিল ইতালি, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাস থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত।
দুই হাজার উনিশ সাল থেকে কোনও ম্যাচ না হেরেই বিশ্বকাপে খেলতে যাবে আর্জেন্টিনা।
এই ব্যাপারটি বাড়তি অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে দলটির মাঝে।
এই দারুণ সময়ের মধ্যেই আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি ২০২৬ সাল পর্যন্ত চুক্তি করেছে আর্জেন্টিনার ফুটল অ্যাসোসিয়েশনের সাথে।
তিনি আর্জেন্টিনার সফলতম কোচদের একজন।
বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার গ্রুপে আছে সৌদি আরব, মেক্সিকো ও পোল্যান্ড।
বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার একটা বড় সমর্থক গোষ্ঠী আছে।
ছোটবেলা থেকেই আর্জেন্টিনার ফুটবল দলকে সমর্থন দেয়া জান্নাত তুলন এবারে বিশ্বকাপের আগে বেশ আশাবাদী।
তার মতে, আর্জেন্টিনা এবার যে অবস্থায় আছে সেটা আগের বিশ্বকাপগুলোতে অনুভব করেননি সমর্থকদের অনেকেই।
"অবশ্যই একটা ইতিবাচক অবস্থানে আছি আমরা। মেসির খেলা ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছি। অন্তত ২০১৮ সালে যেভাবে আমরা দ্বিতীয় রাউন্ডে বাদ পড়েছিলাম। এবারে সেটা হবে না এটুকু নিশ্চিত।"