বিচারবহির্ভূত হত্যা কমে আসায় র্যাবের প্রশংসা করলেও এই বাহিনীর উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে কোনো সময়সীমার ইঙ্গিত দেননি যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু, এমনটাই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এক বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মঙ্গলবার এ কথা জানান বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মুখপাত্র জেফ রাইডেনাওয়ার। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
তিনি বলেন, “গত বছর র্যাবের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের ঘটনা ব্যাপক হারে কমে আসায় বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেছেন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী লু। আমরা এই অব্যাহত সংস্কারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা এবং বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে উৎসাহিত করছি।
“র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সময়সীমা নিয়ে কোনো ধরনের ইঙ্গিত সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী লু ঢাকার বৈঠকগুলোতে দেননি।”
শনিবার বিকালে এসে রোববার মধ্যরাতে ফেরার আগপর্যন্ত ঢাকায় বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী লু।
রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গেও আলাদা বৈঠক করেন লু।
শ্রমিক নেতাদের পাশাপাশি নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এই কর্মকর্তা। সরকারি পর্যায়ের বৈঠকগুলোতে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ডনাল্ড লুর সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র সচিবের যৌথ ব্রিফিংয়েও জানানো হয়।
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বর র্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
এরপর বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সাড়া মেলেনি। যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বলে আসছে, নিষেধাজ্ঞা উঠানোর প্রক্রিয়া বেশ ‘জটিল’।
ডোনাল্ড লুর সঙ্গে বৈঠকের পরদিন সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে র্যাবের নিষেধাজ্ঞা অচিরেই উঠে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল।
তিনি বলেন, “তারা (যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল) বলেছেন, তোমরা যেভাবে যাচ্ছ, একটা সঠিক পথে যাচ্ছ। তোমরা যেভাবে চলছ, এটা যেন চলমান থাকে, তোমাদের ল’ইয়ার ভালো ভূমিকা রাখছে।
“আমরা মনে করি, হয়ত শিগগির নিষেধাজ্ঞা উঠে যেতে পারে। আমরা আশা করছি, এটা অচিরেই শেষ হবে।”
রোববার বৈঠকের পরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, “তারা বলেছেন ‘এটা একটা জটিল প্রক্রিয়া আমাদের দেশে। এটা একটু সময় নিতে পারে, তোমরা যে প্রসেসে অ্যাডভান্স হচ্ছ, কাজ করছ, আমার মনে হয় এটা ভবিষ্যতে ক্লিয়ার হয়ে যাবে’, এই রকমই তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন।”
তবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে কোনো সময়সীমা যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, “কোনো টাইমফ্রেম তারা বলে নাই।”