রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে ডাকা বাস ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও সড়কে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘট চলবে সমাবেশের দিন শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। ধর্মঘটের কারণে রংপুর থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
মহাসড়কে নছিমন-করিমনসহ অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতি ধর্মঘট ডাকার বিষয়টি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়।
রংপুরে ধর্মঘট হলেও নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে রাজশাহী ও বগুড়াসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকেও ছাড়ছে না এই রুটের বাস। পরিবহন বন্ধ থাকায় মালামাল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরাও। বিকল্প উপায়ে ভেঙে ভেঙে গন্তব্যে যাচ্ছেন অনেকে; তাতে গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।
শনিবার বেলা ১১টায় মর্ডান মোড়ে বিডিনিউজ টোযেন্টিফোর ডটকমের কথা হয় কুড়িগ্রাম থেকে আসা পোশাক শ্রমিক আয়শা আক্তার রানির সঙ্গে। কোথায় যাবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি ঢাকায় একটি গার্মেন্সে কাজ করি। কয়েকদিন আগে বাড়িতে বেড়াতে আসছিলাম। কালকে অফিসে জয়েন করতেই হবে, না হলে আর কাজে যেতে পারব না। তাই কুড়িগ্রাম থেকে অটোরিকশায় মর্ডান মোড়ে আসলাম ভাই, দেখি এখান থেকে কিভাবে ঢাকায় যেতে পারি।”
“আমরা গরিব মানুষ সব দলের কাছে জিম্মি। কি আর বলবো।” যোগ করেন আয়েশা।
মর্ডান মোড়ে গাড়ির সন্ধান করছিলেন আরেক গার্মেন্স কর্মী গঙ্গাচড়া উপজেলার করিম মিয়া। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি এলেও বাস ধর্মঘটের কারণে কর্মস্থলে ফিরতে বিপাকে পড়েছেন তিনি।
করিম বলেন, “আমি ছুটি নিয়ে সাভার থেকে বাড়ি আসছিলাম। আজকের মধ্যে ফিরে জয়েন করতে না পারলে চাকরি নিয়ে টানাটানি লাগবে। এখন গাইবন্ধার অটোরিকশায় করে ভেঙে ভেঙে ফিরতে হবে।”
কুড়িগ্রামের রফিকুল কাজ করেন একটি এনজিওতে। মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে তাকে দেখতে রংপুরে এসে আটকা পড়েছেন বলে জানালেন।
রংপুরে হবে বিএনপির চতুর্থ বিভাগীয় গণসমাবেশ। শহরের কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে শনিবার দুপুর থেকে শুরু হবে সমাবেশের মূল কার্যক্রম।
ধর্মঘটের কথা মাথায় রেখে সমাবেশের একদিন আগে শুক্রবার থেকে বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে আসতে শুরু করেন। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতাকর্মীদের ভিড়ও বাড়তে থাকে নগরীর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে।
ধর্মঘটের বিষয়ে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি একেএম মোজাম্মেল হকের ভাষ্য, মহাসড়কে থ্রি হুইলার, নসিমন, করিমনসহ লাইসেন্সবিহীন অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ এবং রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে প্রশাসনিক হয়রানির প্রতিবাদে এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন তারা।
তবে বিএনপির অভিযোগ, সমাবেশে যেনো নেতাকর্মীরা উপস্থিত হতে না পারে, সেজন্যই ধর্মঘটের ‘নাটক’ সাজানো হয়েছে।