রাস্তাঘাট ও গণপরিবহন ‘দখল করে’ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘সরকারি সুযোগ-সুবিধা’ নিয়ে যুবলীগের সমাবেশ আয়োজনের অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “আজকে এখানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) যুবলীগের সম্মেলন আছে। আমি আসার পথে দেখলাম অনেক কিছু। আজকে বাংলাদেশে জনসাধারণের জন্য কোনো বাস আছে বলে আমার মনে হল না, সব পরিবহন আজ ওদের দখলে, ওদের নিয়ন্ত্রণে।
“সব রাস্তাঘাট বন্ধ। এভাবে সব আয়োজন করা হয়েছে। বুঝতে পারেন, একটা দলের সম্মেলন করতে তাদেরকে এত কিছু জোগাড় করতে হচ্ছে, সরকারি এত কিছুর সুযোগ সুবিধা নিতে হচ্ছে।” খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই বিএনপি নেতা বলেন, “রাস্তাঘাটের অবস্থা দেখে মনে হল যে, বাংলাদেশ একটা একদলীয় শাসনের মধ্যে আছে। মনে হল এখানে রাষ্ট্রীয় কোনো অনুষ্ঠান হচ্ছে। এটা যে দলের অনুষ্ঠান কেউ বুঝতে পারবে না যদি তাদেরকে বলা না হয়।“
রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা বিআরটিসির বাস ব্যবহারের অভিযোগ তুলে খসরু বলেন, “সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং মনে হল বিআরটিসির বাসের মধ্যে ব্যানার লাগিয়ে ওরা সম্মেলনে আসছে। লজ্জা শরম তো থাকার কথা। না হয়, আইন মানলেন না, সংবিধান মানলেন না, গণতন্ত্র মানলেন না, জনগণের সব অধিকার কেড়ে নিলেন, তারপরেও তো একটা লজ্জা শরমের ব্যাপার আছে।“
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের দুই/তিন দিন আগে থেকেই পরিবহন ধর্মঘটের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “বিএনপির বেলায় সব বন্ধ। কোনো পরিবহন থাকতে পারবে না, বাস থাকতে পারবে না, স্টিমার থাকতে পারবে না, লঞ্চ চলতে পারবে না, স্পিড বোট চলতে পারবে না। শুধু তাই নয়, রিকশা চলতে পারবে না, নসিমন চলতে পারবে না, টেম্পু থাকতে পারবে না। কিছুই থাকতে পারবে না।
“এতে আমাদের একটা লাভ হয়েছে। এই আন্দোলন একটা জিনিস আমরা শেখেছি যে, পরিবহন ছাড়াও আন্দোলন করা যায়। আন্দোলন এমন মাত্রা পেয়েছে যে, মানুষ দেশপ্রেমে উদ্ধুব্ধ হয়ে কোনো পরিবহন ছাড়া সমাবেশগুলোতে উপস্থিত হয়ে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতি তাদের যে অবিরাম ভালোবাসা প্রমাণ করেছে। এটা আন্দোলন নয়, এটা বিপ্লবে পরিণত হয়েছে।”
বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপির নির্বাচনে না যাওয়ার কথা জানিয়ে খসরু বলেন, “এই নির্বাচনের খেলা প্রত্যেকবার নির্বাচন আসলে শুরু হয়। এবার কিন্তু আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব একটা বিষয় পরিষ্কার করেছেন, এই ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া যাবে না।“
দাবি আদায়ে বিএনপি একই সঙ্গে আন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে অপসারণ করবে বলেও দাবি করেন তিনি।
সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান, পিরোজপুর বিএনপির সভাপতি আলমগীর হোসেন, উলামা দলের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম তালুকদার বক্তব্য দেন।