যুগপৎ আন্দোলন: ‘গণ অবস্থানে’ বিএনপি ও সমমনারা

‘সরকার হটানোর যুগপৎ আন্দোলনের’ অংশ হিসেবে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে ‘গণঅবস্থানে’ বসেছে দলটির নেতা-কর্মীরা।

জামিনে মুক্তি পাওয়ার দুই দিনের মাথায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগী এ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন প্রধান অতিথি হিসেবে। সদ্য কারামুক্ত স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসেরও যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হওয়া এই কর্মসূচি চলবে বেলা ২টা পর্যন্ত। ঢাকা ছাড়াও দেশের নয় বিভাগীয় শহরে একযোগে এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে।

এছাড়া ‘যুগপৎ আন্দোলনের’ অংশ হিসেবে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ, জাতীয় প্রেসক্লাবের পূর্বপ্রান্তে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য এবং আরামবাগে ইডেন কমপ্লেক্সে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণফোরামের ‘গণঅবস্থান’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে।

বিলুপ্ত ২০ দলীয় জোটের শরিকদের নিয়ে গঠিত ১২ দলীয় জোট বিজয় নগরে পানির ট্যাংকের কাছে, সমমনা জাতীয়তাবাদী জোট পুরানা পল্টনে এবং এলডিপি কাওরান বাজারে এফডিসির কা্ছে নিজেদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছে

সরকারের পদত্যাগ, একাদশ সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ১০ দাবিতে বিএনপির নেতৃত্বে যে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছে, এটি তার দ্বিতীয় কর্মসূচি।

গত ২৪ ডিসেম্বর ৯ বিভাগীয় শহরে এবং ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় প্রথম কর্মসূচিতে গণমিছিল করেছিল বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো।

‘গণঅবস্থান কর্মসূচিতে’ অংশ নিতে নেতা-কর্মীরা সকাল থেকেই ছোট ছোট মিছিল নিয়ে

নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে একপাশে পলিথিন ও মাদুর বিছিয়ে এই কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন তারা।

ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আব্দুল কুদ্দুস, আফরোজা খানম রীতা, কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুজ্জামান রিপন, মাসুদ আহমেদ তালুকদারসহ নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে অবস্থান কর্মসূচির কার্য্ক্রম শুরু হয়েছে কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে। এরপর দলীয় সংগীত পরিবেশন করেন জাসাস শিল্পীরা।

কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করছেন সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু।

ফকিরাপুর থেকে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত সড়কের একপাশে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে অবস্থান কর্মসূচি সমাবেশের রূপ পেয়েছে। ‘জ্বালো জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘এই মুহূর্তে দরকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার’– ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে পুরো এলাকা সরব করে রেখেছেন তারা।

বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে চট্টগ্রামে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, রাজশাহীতে আবদুল মঈন খান, সিলেটে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বরিশালে সেলিমা রহমান, ময়মনসিংহে নজরুল ইসলাম খান, রংপুরে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে কুমিল্লায় বরকত উল্লাহ বুলু ও খুলনায় শামসুজ্জামান দুদু এবং ফরিদপুরে আহমেদ আজম খান অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।

নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের একপাশের সড়কে এই কর্মসূচি হচ্ছে। সড়কের এক পাশ বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।

ঢাকায় এই গণ-অবস্থান কর্মসূচির জন্য মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশের অনুমতি পায় বিএনপি। জনদুর্ভোগ যাতে না হয়, সেজন্য সড়ক অবরোধ না করে ফুটপাতে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে বলা হয় সেখানে।

গণ-অবস্থান কর্মসূচি ঘিরে নয়া পল্টনের পুরো এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ সতর্ক ব্যবস্থা নিয়েছে।

কাকরাইল ও ফকিরাপুল মোড়ে জলকামানের গাড়ি দেখা গেছে। বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে পুলিশ সদস্যদের অবস্থান দেখা গেছে।