ঢাকার মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে দুই পাড়ে থাকছে দুটো করে চারটি ফটক; এর প্রতিটিতে দুজন করে মোট আটজন পুলিশ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের তদারকে থাকবেন একজন কর্মকর্তা। তবে দুই প্রান্তের দুই স্টেশনে পুলিশ থাকবে বেশি।
মেট্রোরেলের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশের বিশেষ ইউনিট (ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট বা এমআরটি পুলিশ ইউনিট) হওয়ার কথা থাকলেও এখনও তা না হওয়ায় নিরাপত্তার দায়িত্বটি স্থানীয় থানা পুলিশই পালন করবে, সঙ্গে থাকবে রিজার্ভ পুলিশ।
ঢাকার উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের মেট্রোরেলের ১১ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পথে ৯টি স্টেশন রয়েছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা, মিরপুর ও তেজগাঁও বিভাগের উপর দিয়ে চলাচল করবে মেট্রোরেল। এসব বিভাগের পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, থানা পুলিশ ও রিজার্ভ পুলিশ দিয়ে সার্বিক নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
উদ্বোধনের আগে সরেজমিনে দেখা যায়, মেট্রোরেলের স্টেশনগুলোতে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন স্থানীয় ও রিজার্ভ পুলিশ সদস্যরা। প্রতি স্টেশনে ৮ জন সদস্য দেখা গেলেও উত্তরা নর্থ ও আগারগাঁও স্টেশনে ২০ জন করে পুলিশ সদস্য নিয়োজিত।
পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতিটি স্টেশনে দুটি প্রবেশ ও দুটি বাহির হওয়ার পথ রয়েছে। আটজন পুলিশ সদস্য এসব প্রবেশ পথে দায়িত্ব পালন করবেন আর একজন অফিসার ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে তদারকি করবেন।”
এভাবেই পালা বদল করে মেট্রোরেলের নিরাপত্তা দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
কী ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ভবন (স্টেশন) নিরাপত্তা আর স্টেশনের আশপাশে দোকানপাট করতে না দেওয়া, ফুটপাত পরিষ্কার রাখা। মেট্রোরেলে যারা উঠবে ও নামবেন তাদের শৃঙ্খলা দেখা।”
২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন হওয়ার পর নিরাপত্তায় আরও জনবল দরকার হলে তা দেওয়া হবে বলে জানান মিরপুর বিভাগের পুলিশের উপকমিশনার মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছে যে ধরনের নিরাপত্তা চাইবে তা-ই দেওয়া হবে।”
তুরাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতি স্টেশনে আটজন পুলিশ সদস্য ও একজন অফিসার পালাবদল করে ডিউটি করবেন।
তবে উত্তরা নর্থ অর্থাৎ প্রথম স্টেশনে নিরাপত্তায় থাকবে ২০ জন পুলিশ সদস্য এবং একজন কর্মকর্তা। তেমনি আগারগাঁও স্টেশনে প্রতিপালায় ২০ জন পুলিশ সদস্য ও একজন কর্মকর্তা থাকবেন।
এমআরটি পুলিশ মেট্রোরেলের নিরাপত্তা-সেবা নিশ্চিত করতে পারবে?
মেট্রোরেলের নিরাপত্তায় ৩৫৭ সদস্যের এমআরটি পুলিশ রাখার প্রস্তাব থাকলেও এখনও তা গঠিত হয়নি।
এমআরটি পুলিশ ইউনিট গঠন কী বাতিল হয়েছে- জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ফারুক হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই ধরনের কোনো চিঠি পাইনি। এমআরটি পুলিশ ইউনিট গঠনের ফাইলটি মন্ত্রিপরিষদ সচিব কার্যালয়ে রয়েছে। সময় খুবই কম, এই সময়ের মধ্যে এমআরটি পুলিশ ইউনিটের সেবা মেট্রোরেলে দেওয়া সম্ভব নয়।”
মেট্রোরেলে প্রতিদিন যাতায়াত করবেন হাজারো যাত্রী। প্রতিটি স্টেশনে এটিএম বুথ, ইলেকট্রিক সরঞ্জাম ও দোকান থাকবে, যে কারণে প্রত্যেকটি স্টেশনে পুলিশ ফাঁড়ির প্রস্তাব করেছে ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিটের (ডিএমটিসিএল) কর্তৃপক্ষ।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, “টিকেট বিক্রি বা টেকনিক্যাল বিষয়গুলো তো কর্তৃপক্ষই দেখবে। নিরাপত্তার বিষয়টি পুলিশ দেখবে। প্রতিটি স্টেশনে একটি কন্ট্রোল রুম থাকবে। মেট্রোরেলের পক্ষ থেকে থাকবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও।”