রাষ্ট্র মেরামতের দাবি করে বিএনপি ঘোষিত ২৭ দফাকে ‘স্টান্টবাজি’ আখ্যা দিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সভায় তিনি বলেন, “এতে আন্দোলন জমবে না, মানুষ বিভ্রান্ত হবে না।”
আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত খাদ্য উপকমিটির বৈঠকে কথা বলেছিলেন ওবায়দুল কাদের। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
তিনি বলেন, “এদেশের মানুষ এত বোকা না যে বিএনপিকে বিশ্বাস করবে।”
টানা দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন না করার নিয়ম চালুসহ বর্তমান রাষ্ট্র ব্যবস্থা বদলে ফেলতে ২৭ দফা কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেছে বিএনপি, যেটাকে তারা ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা’ বলছে।
বিএনপির ওই ‘রাষ্ট্র মেরামতের’ দাবিকে ‘হাস্যকর’ হিসেবে বর্ণনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “যে রাষ্ট্র আজকে বিশ্বের বিস্ময়। যে রাষ্ট্র বিশ্বে বিষ্ময়, চৌদ্দ বছরের আগের বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশ… উন্নয়নে দৃশ্যপট। যে দেশকে তারা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছিল, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে মেরামত করেছেন। এখন ২০৪০ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরির লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।"
বাংলাদেশে কী ধ্বংস হয়েছে, সেই ব্যাখ্যা বিএনপির কাছে জানতে চেয়য়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “গণতন্ত্র, ভোট চুরি আমরা করি না। তারাই ভোট চুরি করেছে, ভোট জালিয়াতি করেছে। দলীয় লোক দিয়ে আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। এসব ইতিহাস নতুন কিছু নয়।"
বিএনপি ‘গণতন্ত্রের নামে প্রহসনের ইয়েস/নো’ ভোট করেছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, "কোথাও কোথাও ১২০ শতাংশ ভোটও পড়েছিল। এমন নির্বাচনও আমরা বাংলাদেশে দেখেছিলাম। গণতন্ত্র, স্বাধীনতার মূল্যবোধ তারাই ধ্বংস করেছে। যারা ধ্বংস করে তারা মেরামত করবে কেমন করে? এটা নতুন কিছু নয়, এটা একটা স্টান্টবাজি। যেমন বলেছিল ভিশন ২০৩০। সেটা এখন ডিপ ফ্রিজে আছে।”
বিএনপিকে ‘মিথ্যাচারের হোতা’ আখ্যায়িত করে কাদের বলেন, “তাদের নেতাকর্মীরা ক্ষমতার আশায় মাঠে নেমেছে। কিন্তু সাধারণ জনগণকে মাঠে নামাতে পারেনি। সাধারণ মানুষ মনে করে এদেশের মুক্তির কাণ্ডারি শেখ হাসিনা। এদেশের মানুষ বিশ্বাস করে, বিএনপি জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক এবং সাম্প্রদায়িকতার বিশ্বস্ত ঠিকানা।”
ক্ষমতায় গেলে ওই ২৭ দফা বাস্তবায়নের যে ঘোষণা বিএনপি দিয়েছে, সে বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “যদি ক্ষমতায় আসে… যদির কথা নদীতে ফেলে দেন। যদি আসেন তাহলে হবে। না হয় হবে না।"
আওয়ামী লীগের সকল কর্মকাণ্ডে ‘স্মার্টনেস প্রদর্শন করতে হবে’ মন্তব্য করে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “সন্মেলনে যেন কোনো প্রকার শৃঙ্খলা, বিচ্যুতি না ঘটে, এগুলো নিয়ে পরে... পত্র পত্রিকা... আমাদের শত্রুপক্ষ, সমালোচনার লোকের অভাব নেই। সুশৃঙ্খল সন্মেলন করে আমরা প্রমাণ করতে চাই, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং আগামী নির্বাচনের জন্য সুসংগঠিত এবং ঐক্যবদ্ধ।"
অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।