Loading...
The Financial Express

ভূমিকম্প: ধ্বংসস্তূপে জন্ম নেওয়া শিশুকে দত্তক নিতে চায় হাজারো মানুষ

| Updated: February 11, 2023 18:24:12


ভূমিকম্প: ধ্বংসস্তূপে জন্ম নেওয়া শিশুকে দত্তক নিতে চায় হাজারো মানুষ

ভূমিকম্পে ধসে পড়া সিরিয়ার একটি ভবনের ধ্বংসাবশেষের নিচে জন্ম নেওয়া এক শিশুকন্যাকে দত্তক নিতে চাইছে হাজার হাজার মানুষ।

সোমবার স্থানীয় সময় ভোররাতের ভয়াবহ ভূমিকম্পে উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় জিনদায়রিস শহরের ওই ভবনটি ধসে পড়েছিল।

বিবিসি জানিয়েছে, ধ্বংসাবশেষের নিচ থেকে উদ্ধার করা শিশুটির নাম রাখা হয়েছে আয়া, আরবিতে যার অর্থ অলৌকিক; উদ্ধারের সময়ও তার নাড়ি মায়ের সঙ্গে জোড়া লাগানো অবস্থাতেই ছিল।

আয়াকে জীবিত পাওয়া গেলেও ভূমিকম্প তার মা, বাবা এবং চার ভাইবোনের সবার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

সদ্যজাত এই শিশুটি এখন হাসপাতালে আছে, তার অবস্থা স্থিতিশীল।

“সোমবার সে খুবই খারাপ অবস্থায় (পৃথিবীতে) এসেছিল, তার গায়ে কাটাছেঁড়া ছিল; শরীর ঠাণ্ডা ছিল, শ্বাস ঠিকভাবে নিতে পারছিল না,” বলেছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ হানি মারুফ, তিনিই এখন শিশুটির দেখভাল করছেন।

আয়াকে উদ্ধারের ভিডিও পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। ফুটেজে দেখা যায়, একটি ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে এক ব্যক্তি ধুলায় আচ্ছাদিত এক শিশুকে কোলে নিয়ে ছুটছেন।

জঞ্জাল থেকে আয়াকে উদ্ধার করার সময় তার দূরসম্পর্কীয় এক আত্মীয়, খলিল আল-সুওয়াদি সেখানে উপস্থিত ছিলেন, তিনিই সদ্যজাত শিশুটিকে সিরীয় শহর আফরিনে ড. মারুফের কাছে নিয়ে যান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাজার হাজার মানুষ এখন শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইছেন।

“আমি মেয়েটিকে দত্তক নিতে চাই, ভালো জীবন দিতে চাই,” বলেছেন একজন।

কুয়েতের এক টিভি উপস্থাপক বলেছেন, “আমি শিশুটির দেখাশোনা করতে ও তাকে দত্তক নিতে প্রস্তুত, যদি আইনি প্রক্রিয়া আমাকে সেই সুযোগ দেয়।”

হাসপাতালের ব্যবস্থাপক খালিদ আতিয়াহ জানান, এরই মধ্যে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েক ডজন ফোন পেয়েছেন, যারা শিশুটিকে দত্তক নিতে আগ্রহী।

আয়া-র থেকে মাত্র চার মাসের বড় এক কন্যা সন্তানের পিতা ড. আতিয়াহ বলেছেন, “যতক্ষণ তার পরিবারের দূরসম্পর্কীয় সদস্যরা না ফিরছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি কাউকেই মেয়েটিকে দত্তক নেওয়ার অনুমতি দিতে পারি না। আমি তাকে আমার সন্তানের মতোই দেখছি।”

আপাতত ড. আতিয়াহ’র স্ত্রী-ই তাদের মেয়ের পাশাপাশি আয়াকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন।

আয়ার শহর জিনদায়রিসের লোকজন এখনও ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপের ভেতরে প্রিয়জনদের সন্ধান করে যাচ্ছেন।

সেখানকার সাংবাদিক মোহাম্মেদ আল-আদনান বিবিসিকে বলেন, “পরিস্থিতি ভয়াবহ। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেক মানুষ আছেন। এমন অনেকেই আছেন, যাদের কাছে আমরা এখনও পৌঁছাতেই পারিনি।”

জিনদায়রিসের ৯০ শতাংশই ধ্বংস হয়ে গেছে বলে অনুমান তার।

এখন পর্যন্ত যত সাহায্য এসেছে, সবই স্থানীয়দের কাছ থেকে, বলেছেন তিনি।

দশককালের বেশি সময় ধরে চলা সিরিয়ার যুদ্ধে লোকজনকে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে উদ্ধারের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হোয়াইট হেলমেটসের কর্মীরাও জিনদায়রিসে উদ্ধারকাজে সহযোগিতা করছেন।

“ভবনগুলো এতই নড়বড়ে যে উদ্ধারকারীরাও মারা পড়তে পারেন। আমরা মাত্রই ধ্বংস্তূপ থেকে তিনটি দেহ বের করে এনেছি, মনে হচ্ছে সেখানে একটি পরিবার আছে, যার সদস্যরা এখনও জীবিত; আমরা কাজ করে যাচ্ছি,” বলেছেন মোহাম্মেদ আল-কামেল নামের এক ব্যক্তি।

সোমবারের ওই ভূমিকম্পে ইতোমধ্যে সিরিয়ায় মৃত্যু ৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

Share if you like

Filter By Topic