শুরুতে আক্রমণের সুর বেঁধে দিলেন, পরে শামসুন্নাহার (জুনিয়র) পূরণ করলেন হ্যাটট্রিক। দুইবার গোলের দেখা পেলেন আকলিমা খাতুনও। ভুটানকে উড়িয়ে দিয়ে মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠল বাংলাদেশ।
কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাউন্ড রবিন লিগে নিজেদের শেষ ম্যাচে ভুটানকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে রাউন্ড রবিন লিগের সেরা দল হিসেবে ফাইনালে উঠল গোলাম রব্বানী ছোটনের দল। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
দিনের প্রথম ম্যাচে শিরোপাধারী ভারতকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে রাউন্ড রবিন লিগের দ্বিতীয় সেরা দল হিসেবে ফাইনালে উঠেছে নেপাল। বৃহস্পতিবার শিরোপা লড়াইয়ে বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে তারা। দুটি দলের সামনেই অনূর্ধ্ব-২০ বছর বয়সীদের নিয়ে হওয়া প্রথম আসরে সেরা হওয়ার হাতছানি।
আকলিমার দারুণ গোল
দুটি পরিবর্তন এনে সেরা একাদশ সাজান বাংলাদেশ কোচ। মাহফুজা খাতুন ও সোহাগী কিসকুর বদলে খেলান উন্নতি খাতুন ও আইরিন খাতুনকে। ফাইনালে উঠতে ড্র যথেষ্ট ছিল, কিন্তু জয়ের জন্য শুরু থেকে আক্রমণের পসরা মেলে ধরে বাংলাদেশ।
অষ্টম মিনিটে বক্সে ঢুকে তালগোল পাকিয়ে ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি আকলিমা। একটু পর একই ভাবে বক্সে ঢুকে শেষ পর্যন্ত বল হারান শামসুন্নাহার। সপ্তদশ মিনিটে বুলেট গতির দৌড়ে বক্সে ঢুকলেও জোরে মারতে পারেননি, সহজেই আটকান গোলরক্ষক।
২২তম মিনিটে মেলে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা। বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা শামসুন্নহার আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান বক্সে। বলের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে জায়গা করে নেন আকলিমা। এরপর ঠাণ্ডা মাথায় নিচু শটে লক্ষ্যভেদ করেন এই ফরোয়ার্ড।
পেনাল্টি মিসের পর শামসুন্নাহারের ঝলক
এগিয়ে যাওয়ার রেশ থাকতেই ব্যবধান দ্বিগুণের সুবর্ণ সুযোগ কড়া নেড়েছিল দরজায়। কিন্তু রিপার স্পট কিক পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। ২৩তম মিনিটে বক্সে শামসুন্নাহারকে ভুটানের তাশি ওয়াঙ্গমো ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। অবশ্য অধিনায়কের গোলেই একটু পর ব্যবধান হয় দ্বিগুণ।
শুরু থেকে বক্সের দুই প্রান্ত দিয়ে ভুটানের রক্ষণে বারবার হানা দিচ্ছিলেন শামসুন্নাহার। বেঁধে দিচ্ছিলেন আক্রমণের সুর। ২৯তম মিনিটে উন্নতির কর্নারে গোলমুখ থেকে হেডে গোলের খাতায় নিজের নাম তোলেন তিনি।
শামসুন্নাহার-আকলিমায় ম্যাচ মুঠোয়
৫৩তম মিনিটে মাঝমাঠে নিজেদের অর্ধ থেকে ক্রস বাড়ালেন রিপা। তা ধরে গায়ের সঙ্গে সেঁটে থাকা ডিফেন্ডারকে গতির তোড়ে পেছনে ফেলে ছুটলেন শামসুন্নাহার। পথ আগলে দাঁড়ানো গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে নিলেন শট; বল দূরের পোস্টের ভেতরের দিকে লেগে লুটোপুটি খেল জালে। ম্যাচ বাংলাদেশের মুঠোয়।
একটু পরই হ্যাটট্রিকের ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন অধিনায়ক; কিন্তু ইতির পাস ধরে শামসুন্নাহারের চিপ শট ক্রসবারের উপর দিয়ে যায়।
৫৯তম মিনিটে সতীর্থের থ্রু পাস ধরে আগুয়ান গোলরক্ষককে কাটিয়ে কোনাকুনি শটে স্কোরলাইন ৪-০ করেন আকলিমা। চলতি আসরে এটি এই ফরোয়ার্ডের তৃতীয় গোল।
হ্যাটট্রিকের আনন্দ শামসুন্নাহারের
৬১তম মিনিটে সতীর্থের লম্বা ক্রসের পেছনে ছোটা শামসুন্নাহারকে আটকাতে বক্সের বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন ভুটান গোলরক্ষক। এক টোকায় তার পাশ দিয়ে বল বের করে নিয়ে ফাঁকা পোস্টে হ্যাটট্রিকের আনন্দে মাতেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। চলতি আসরে শামসুন্নাহারের গোল হলো ৪টি। টানা দুই হারে আগেই ছিটকে যাওয়া ভুটানের হার নিশ্চিত হয়ে যায় অনেকটাই।