বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে সহযোগিতার কথা স্মরণ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নানা ষড়যন্ত্রের মধ্যে প্রতিবেশী দেশটি পাশে থাকলে শক্তি পায় তার দল।
মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভারতীয় একদল সাংবাদিকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
একাত্তরের কথা স্মরণ করে ওবায়দুল কাদে বলেন, “আমরা ৭১ সালের রাখিবন্ধন কখনও ভুলি নাই, ভুলতে পারি না। এটাই আমাদের দুই দেশের বন্ধুত্বকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
“সব কিছু মিলিয়ে ভারত তো আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে না। আমাদের ভোট জনগণ দেবে। কিন্তু ভারত আমাদের পাশে আছে, এটা একটা ব্যাপার। ভারতকে আমাদের বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই। ভারতকে পাশে পেলে আমরা শক্তি পাই। কারণ, আমাদের এখানে শত্রু বেশি, অনেক ষড়যন্ত্র হয়।”
টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকারে থাকা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটাতে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে দলটির নেতারা বলে আসছেন।
ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার গুরুত্ব তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, ভারতের সাথে বৈরী সম্পর্ক রেখে আমাদের যে পাওনাটা ভারতের কাছ থেকে, আমরা সেটা পাব না। যেসব বিষয়গুলো আছে, সমাধান করতে হলে বন্ধুত্ব রাখতে হবে। আলোচনা করতে হবে। আলোচনার টেবিলে করতে হবে। সেটা আমরা বিশ্বাস করি।”
ভারতের সঙ্গে অনিষ্পন্ন তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন করতে ভারতের সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “ছিটমহল বিনিময় এখানে এত শান্তিপূর্ণ ছিল, এটা একটা বিরাট অর্জন। এর কৃতিত্ব আমাদের নেত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অবশ্যই দিতে হবে। তারপরও আমাদের কিছু কিছু ব্যাপার আছে। যেমন ওয়াটার, সেটা আলোচনার মধ্যে আছে।
“পানি চুক্তি নিয়ে দুদেশের আলোচনাকে আমরা পজিটিভভাবে দেখছি। এখানে রাজ্য সরকারের বিষয় আছে। আপনারা যারা পশ্চিমবঙ্গের সাংবাদিক আছেন, আপনারাও বলবেন বাংলাদেশের দিকে একটু তাকাতে।”
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকাটা ভারতের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ, তা দেশটির সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “আমাদের ভুল ত্রুটিও আছে। কিন্তু তারপরেও একটা কথা মনে রাখবেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার চেয়ে কোনো বিশ্বস্ত বন্ধু আরেকজন আপনাদের নাই। এটা ভারতকে মনে রাখতে হবে। আমরা ভারত সরকারের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। যখন যারা ক্ষমতায় আছে, তখন তাদের সাথেও সম্পর্ক থাকবে, যদি তারা বন্ধুত্ব রাখেন। নরেন্দ্র মোদী রেখেছেন, সেজন্য আছে।”
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের ভারতের সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের প্রতিপক্ষ দল বিএনপি। তাদের সঙ্গে আছে জামায়াত, জঙ্গিবাদী কিছু দল। তাদের সাথে আছে আলট্রা লেফট, আলট্রা রাইট কিছু দল, সব মিলিয়ে ৩৩৷ তারাসহ ৩৪।
“এটা একটা জগাখিচুরি ঐক্য। এই ঐক্য গতবার ফল দেয়নি। আমরা দল ভাঙাভাঙিতে নেই। বিএনপি নিজেরা নিজেদেরকে ভাঙাভাঙি করে। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ।”
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেলের কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি জানান, পদ্মা সেতুতে প্রতিদিন ২ কোটি ১০/১২ লাখ টাকা টোল আদায় হচ্ছে। প্রথম ৬ মাসে ৪০৩ কোটি টাকা টোল আদায় করা হয়েছে। মেট্রোরেলে গত ১০ দিনে ৮৮ লাখ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে।