নিউ জিল্যান্ডকে ধূমপানমুক্ত করতে নতুন এক আইন পাস করেছে দেশটির পার্লামেন্ট, ধাপে ধাপে যার বাস্তবায়ন শুরু হচ্ছে নতুন বছর থেকে।
মঙ্গলবার নিউ জিল্যান্ডের পার্লামেন্টে পাস হওয়া এ আইন কার্যকর হলে ২০০৮ সালের পর জন্ম নেওয়া কেউ সে দেশে বৈধভাবে সিগারেট বা তামাক পণ্য কিনতে পারবে না।
ফলে সিগারেট কেনার অধিকার রাখে– এমন মানুষের সংখ্যা সেখানে প্রতি বছর কমতে থাকবে। ২০৫০ সালে তা যে পর্যায়ে পৌঁছাবে, তাতে ৪০ বছর বয়সীরাও সিগারেট কিনতে পারবেন না।
বিলটি পার্লামেন্টে তোলেন নিউ জিল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আয়েশা ভেরাল। তিনি বলেন, এ আইন হল তামাকমুক্ত ভবিষ্যৎ গড়ার পথে প্রথম পদক্ষেপ। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
“এর ফলে আগামী দিনে হাজারো মানুষ আরও বেশিদিন সুস্থ্যভাবে বেঁচে থাকার সুযোগ পাবে। ধূমপানজনিত অসুস্থতার চিকিৎসায় নিউ জিল্যান্ডকে বছরে যে ৫ বিলিয়ন ডলার (৩.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) খরচ করতে হয়, সেই অর্থ বেঁচে যাবে।”
নিউ জিল্যান্ডে ধূমপায়ীর হার এখন ইতিহাসের সবচেয়ে কম। প্রতিদিন ধূমপান করেন এমন মানুষের সংখ্য সেখানে মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৮ শতাংশ। আগের বছর এই হার ছিল ৯.৪ শতাংশ।
দেশটির সরকার আশা করছে, নতুন পাস হওয়া ‘স্মোকফ্রি এনভারনমেন্টস বিল’ কার্যকর হলে ওই হার ২০২৫ সালেই ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসবে, যা এক সময় পুরো নিউ জিল্যান্ডকে একটি তামাকমুক্ত দেশে পরিণত করবে।
এ আইন কেবল ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ধূমপানের পথ বন্ধ করবে না, এখন যারা ধূমপান করেন, তাদের জন্যও সিগারেট কেনা কঠিন করে তুলবে।
বর্তমানে দেশটিতে ৬ হাজার বিক্রেতার সিগারেট বা তামাক পণ্য বিক্রির অনুমোদন আছে। নতুন আইনে তা ৬০০ তে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ধরা হয়েছে।
নিউ জিল্যান্ডে যেসব সিগারেট বিক্রি হবে, তাতে নিকোটিনের মাত্রা কমিয়ে আনতে হবে, যাতে আসক্তির মাত্রাও কম হয়। আসক্তি কমে গেলে, সিগারেটের বিক্রিও কমে যাবে।
তবে এ আইনে ভ্যাপ বা ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা হয়নি। নিউ জিল্যান্ডের এখনকার তরুণদের মধ্যে সাধারণ সিগারেটের চেয়ে ভ্যাপের জনপ্রিয়তা বেশি।
সমালোচকরা অবশ্য সতর্ক করে বলেছেন, কঠোর এ আইনের ফলে কালোবাজারে তামাকপণ্য বিক্রি উৎসাহিত হবে।
বিলের বিরোধিতাকারী এসিটি পার্টির নেতা ব্রুক ভ্যান ভেলডেন পার্লামেন্টে বলেন, “মানুষ সিগারেট টানছে– এটা কেউ দেখতে চায় না। কিন্তু বাস্তবতা হল, কেউ কেউ ধূমপান করেই যাবে। আর নিষেধাজ্ঞার এ আইন নতুন সমস্যা তৈরি করবে।”