Loading...
The Financial Express

ব্যবসায় ক্ষতি দেখিয়ে ২০২০ সালে আয়কর দেননি ট্রাম্প 

| Updated: December 23, 2022 17:35:00


ব্যবসায় ক্ষতি দেখিয়ে ২০২০ সালে আয়কর দেননি ট্রাম্প 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে থাকার শেষ বছর, ২০২০ সালে ডনাল্ড ট্রাম্প নিজের মালিকানাধীন বিস্তৃত ব্যবসায় ক্ষতির কথা জানিয়ে কোনো আয়কর দেননি বলে মার্কিন কংগ্রেসের এক প্যানেলের প্রকাশ করা তথ্যে জানা গেছে। 

কয়েক বছরের আইনি লড়াই শেষে কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি পরিষদের ওয়েস অ্যান্ড মিনস কমিটি মঙ্গলবার যেসব নথি প্রকাশ করেছে, তাতে হোয়াইট হাউসের চার বছরে ট্রাম্পের আয় এবং করের পরিমাণে ব্যাপক ওঠানামাও দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। 

এসব নথি সফল ব্যবসায়ী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে তোলা ট্রাম্পের ভাবমূর্তিকে ধসিয়ে দিতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে; এমন এক সময়ে এ নথিগুলো প্রকাশ হল, যখন ট্রাম্প দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে যেতে লড়াই শুরু করে দিয়েছেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।  

ট্রাম্প এবং তার স্ত্রী মেলানিয়া ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল, এই চার বছরের মধ্যে তিন বছর আয়কর দিয়েছেন বলে নথিগুলোতে দেখা যাচ্ছে। তবে এই দম্পতি ২০১৫ থেকে বেশ কয়েক বছরই ব্যবসায় ক্ষতি দেখিয়ে ও কর ছাড় নিয়ে তাদের মোট করের পরিমাণ তুলনামূলক কম রাখতে সক্ষম হয়েছেন। 

এর মধ্যে ৯১ কোটি ৬০ লাখ ডলারের একটি কর ছাড়সহ একাধিক ছাড় নিয়ে ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি পরিষদের ওয়েস অ্যান্ড মিনস কমিটি প্রশ্নও তুলেছে। 

কমিটি কয়েক দিনের ভেতরেই ট্রাম্পের পুরো আয়কর রিটার্নের সম্পাদিত সংস্করণ প্রকাশ করবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। 

দশকের পর দশক ধরে বড় দলগুলোর প্রার্থীদের সবাই সানন্দে তাদের আয়কর বিবরণী প্রকাশ করে এলেও দুই দফা প্রেসিডেন্ট পদের লড়াই এবং নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প তার আয়কর বিবরণী প্রকাশে রাজি হননি। 

প্রতিনিধি পরিষদের ওয়েস অ্যান্ড মিনস কমিটি কয়েক বছরের আইনি লড়াই শেষে ট্রাম্পের আয়কর বিবরণী পায়; এই বিবরণী প্রকাশ করা হবে কিনা মঙ্গলবার তা নিয়ে কমিটির ভেতর ভোটও হয়। 

কমিটিতে ডেমোক্র্যাটদের প্রাধান্য থাকায় ভোটে শেষ পর্যন্ত সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের আয়করের তথ্য প্রকাশে সিদ্ধান্ত হয়। 

ট্রাম্পের এক মুখপাত্র এ সংক্রান্ত নথি প্রকাশ করাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন। 

“এ অন্যায় যদি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে হতে পারে, তাহলে কোনো কারণ ছাড়াই যে কোনো মার্কিনির জন্যও এমনটা হতে পারে,” বুধবার এমনটাই বলেছেন ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের মুখপাত্র স্টিভেন চিউং। 

প্রতিনিধি পরিষদের ওই কমিটির ডেমোক্র্যাট সদস্যরা বলছেন, কর কর্তৃপক্ষ যে ট্রাম্পের জটিল আয়কর বিবরণী ঠিকভাবে যাচাই করে দেখেনি তাদের পর্যালোচনায় তা উঠে এসেছে। 

প্রেসিডেন্টের প্রত্যেক বছরের আয়কর বিবরণী যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগের (আইআরএস) অডিট করার কথা থাকলেও ২০১৯ সালে ডেমোক্র্যাটদের চাপের আগে তা করা হয়নি।  

আইআরএস  এই অডিটের জন্য বেশিরভাগ সময়ই মাত্র একজনকে দায়িত্ব দিয়ে রেখেছিল এবং ট্রাম্পের দাবি করা বেশিরভাগ করছাড়ের প্রয়োজনীয়তা পরীক্ষা করে দেখেনি বলেও পর্যালোচনায় উঠে এসেছে বলে দাবি করেছে প্রতিনিধি পরিষদের এই প্যানেল। 

আইআরএস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। 

বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন এবং ট্রাম্পের ব্যবসা সংক্রান্ত নানান মামলার শুনানি অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগের অনেকগুলো বছরও ট্রাম্প ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতি দেখিয়ে লাখ লাখ ডলার করছাড় পেয়েছেন। 

প্রেসিডেন্ট হয়ে হোয়াইট হাউসে থাকার সময়ও যে এই প্যাটার্ন অব্যাহত ছিল, প্রকাশিত নথিতে তা দেখা যাচ্ছে। 

হোয়াইট হাউসের ওই চার বছরে ট্রাম্প এবং তার স্ত্রী মেলানিয়াকে তাদের ব্যক্তিগত আয় ও পারিবারিক আয় থেকে কর দিতে হতো; এই সময়কালে তারা সব মিলিয়ে ৩০ লাখ ডলার কর দিয়েছেন। 

করছাড়ের কারণে একাধিক বছর তারা ন্যূনতম কর দিয়ে পার পেয়েছেন। 

২০১৭ সালে ট্রাম্প ও তার স্ত্রী তাদের মোট ক্ষতির পরিমাণ দেখিয়েছিলেন এক কোটি ২৯ লাখ ডলার, যার কারণে তাদেরকে আয়কর বাবদ মাত্র ৭৫০ ডলার দিতে হয় বলে মঙ্গলবার প্রকাশিত নথিতে দেখা যাচ্ছে। 

পরের বছর ট্রাম্প দম্পতি তাদের আয় দেখান ২ কোটি ৪৩ লাখ ডলার, কর দেন ১০ লাখ ডলারের মতো। ২০১৯ সালেও তারা ৪৪ লাখ ডলার আয়ের বিপরীতে কর দেন এক লাখ ৩৪ হাজার ডলার।   

কিন্তু ২০২০ সালের বিবরণীতে তাদের মোট ক্ষতির পরিমাণ দেখানো হয় ৪৮ লাখ ডলার; এ বছর তারা কোনো করই দেননি। 

Share if you like

Filter By Topic